মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার দ্বিতীয় ইনিংস শুরুর পরপরই রাজ্যে আসতে চলেছেন দিল্লির এক আমলা। আগামী ৩০ মে রাজ্যে আসার কথা কেন্দ্রের গ্রামোন্নয়ন দফতরের অধীন একশো দিনের প্রকল্পের সেলের দায়িত্বে থাকা অপরাজিতা ষড়ঙ্গীর। পশ্চিমবঙ্গে দিন চারেকের সফরে একাধিক জেলায় পরিদর্শনে যাবেন তিনি। একশো দিনের কাজ কেমন চলছে তা দেখবেন।
অপরাজিতাদেবীর এই সফর গুরুত্বপূর্ণ বলেই মনে করছে প্রশাসন। একশো দিনের প্রকল্পে সরঞ্জাম কেনার খরচ বাবদ কেন্দ্রের কাছে প্রায় ১,২০০ কোটি টাকা পাওনা রয়েছে রাজ্যের। প্রশাসনের একাংশ মনে করছে, রাজ্য থেকে ফিরে গিয়ে অপরাজিতাদেবী সন্তোষজনক রিপোর্ট দিলে কেন্দ্রীয় সরকার বকেয়া টাকা দিয়ে দিতে পারে।
ইতিমধ্যে দিল্লির ওই আমলার সফর ঘিরে প্রশাসনিক প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। প্রশাসনের এক সূত্রে খবর, রাজ্যের পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতরের জয়েন্ট সেক্রেটারি সুদীপ্ত পোড়েল এ নিয়ে সব জেলায় নির্দেশ পাঠিয়েছিলেন। জানানো হয়েছিল, পরিদর্শন করা যায় এমন দু’টি করে সফল প্রকল্পের নাম রাজ্যে পাঠাতে। সেই মতো নাম পাঠানোর পরে দেখা যাচ্ছে নদিয়া এবং বাঁকুড়ায় একশো দিনের কাজের হাল সন্তোষজনক। অপরাজিতাদেবীর ওই দু’টি জেলায় যাওয়ার সম্ভাবনা বেশি। প্রশাসনের এক কর্তার কথায়, “উনি নদিয়া এবং বাঁকুড়ায় যেতে পারেন। ওই দু’টি জেলায় একশো দিনের কাজ বেশ ভাল ভাবে হয়েছে। প্রকল্পের মাধ্যমে স্থায়ী সম্পদও তৈরি করা গিয়েছে।”
একশো দিনের কাজ প্রকল্পে তিন ভাবে খরচ ধরা হয়। ১) মাটি কাটার মজুরি। ২) রাস্তা-বাঁধ নির্মাণ, বৃক্ষরোপণ ইত্যাদির জন্য সরঞ্জাম কেনার খরচ ও দক্ষ শ্রমিকের মজুরি। ৩) প্রশাসনিক খরচ। অবশ্য এর মধ্যে সিংহভাগ টাকা যায় মাটি কাটার মজুরি খাতে। একশো দিনের কাজ করে বছর গড়িয়ে গেলেও মজুরি না মেলার অভিযোগ নতুন নয়। মজুরির টাকা যেমন বকেয়া থাকে তেমন সরঞ্জাম কেনার টাকাও বকেয়া থাকে। পশ্চিম মেদিনীপুরেই যেমন সরঞ্জাম কেনা বাবদ ৬৭ কোটি টাকা বকেয়া রয়েছে।
২০১৩ সাল পর্যন্ত একশো দিনের মজুরির টাকা পঞ্চায়েতের অ্যাকাউন্টে আসত। মজুরি বণ্টনে স্বচ্ছতা আনতে ২০১৪ সালে কেন্দ্র উপভোক্তাদের অ্যাকাউন্টে অনলাইনে টাকা জমার পদ্ধতি চালু করে। এই মুহূর্তে কেন্দ্রের নির্দেশিকা আছে, শুধু মজুরি বিলি নয়, একশো দিনের কাজ প্রকল্পের প্রধান লক্ষ্যই হবে স্থায়ী সম্পদ তৈরি করা। নির্দেশ মতো প্রকল্পে যে টাকা বরাদ্দ হয় তার ৬০ শতাংশ সামাজিক সম্পদ তৈরির কাজে লাগাতে হবে।
প্রকল্পে জমির উন্নয়ন, জলাশয় তৈরি, রাস্তা, ক্যানাল, বাঁধ তৈরি, জাতীয় ও রাজ্য সড়কের ধারে গাছ লাগানো হয়। স্থায়ী সম্পদ তৈরিও হয়। বাঁকুড়ার ওন্দার রামসাগরে এই প্রকল্পে পুকুর কাটা হয়েছে। সেখানে মাছের ডিম-পোনা উত্পাদন হয়। এই সব কাজ যথাযথ হচ্ছে কিনা খতিয়ে দেখতে ওই আমলা রাজ্যে আসছেন বলে প্রশাসন সূত্রের খবর।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy