Advertisement
E-Paper

আট ঘণ্টার অবরোধে ২২ ট্রেন, উদাসীন রেল

স্টেশনে ট্রেন থামানোর দাবিতে অবরোধ। আর ওড়িশার মারকোনা স্টেশনে ওই অবরোধের জেরে দক্ষিণ-পূর্ব রেলের বিভিন্ন স্টেশনে প্রায় আট ঘণ্টা থমকে গেল অন্তত ২২টি দূরপাল্লার ট্রেন। যাত্রীদের ভোগান্তি চরমে।

অমিতাভ বন্দ্যোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ২৩ অক্টোবর ২০১৬ ০৩:২৫
ওড়িশার মারকোনা স্টেশনে শনিবার। —নিজস্ব চিত্র

ওড়িশার মারকোনা স্টেশনে শনিবার। —নিজস্ব চিত্র

স্টেশনে ট্রেন থামানোর দাবিতে অবরোধ। আর ওড়িশার মারকোনা স্টেশনে ওই অবরোধের জেরে দক্ষিণ-পূর্ব রেলের বিভিন্ন স্টেশনে প্রায় আট ঘণ্টা থমকে গেল অন্তত ২২টি দূরপাল্লার ট্রেন। যাত্রীদের ভোগান্তি চরমে।

যাত্রীদের বড় অংশই পুজোর ছুটিতে ওড়িশা বা দক্ষিণ ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে বেড়াতে যাওয়া পশ্চিমবঙ্গের বাসিন্দা। ফেরার পথে তাঁরা রেল অবরোধে দুর্ভোগের শিকার। টানা আট ঘণ্টা আটকে থাকায় অনেক ট্রেনেই বাতানুকুল যন্ত্র বন্ধ হয়ে যায়। পানীয় জলের সরবরাহ নেই, শৌচাগারে জল শেষ। শ্বাসকষ্ট শুরু হয় অনেকের। অনেকেই অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। কখন ট্রেন ছাড়বে, তা-ও জানাতে পারেনি কেউ।

মারকোনা স্টেশনটি ভদ্রক ও বালেশ্বরের মাঝখানে। গত সাত দিন ধরেই ‘সিমুলিয়া সড়িয়া নাগরিক মঞ্চ’-র ব্যানারে স্থানীয় কিছু মানুষ দাবি করছিলেন—ছয় জোড়া দূরপাল্লার ট্রেনকে মারকোনা স্টেশনে থামাতে হবে। এই দাবি তাঁরা রেল এবং স্থানীয় প্রশাসনের কাছে জানালেও কেউ

গা করেননি। এর পরেই ওই নাগরিক মঞ্চ রেল অবরোধের ডা়ক দেয় এবং তা সফল করতে এলাকায় ব্যাপক প্রচার চালায়।

রেল সূত্রের খবর, শনিবার সকাল সাড়ে আটটা নাগাদ অবরোধ শুরু হয়। তার জেরে ফলকনুমা এক্সপ্রেস (আপ-ডাউন), ভুবনেশ্বরমুখী ধৌলি এক্সপ্রেস, হাওড়ামুখী যশবন্তপুর দূরন্ত এক্সপ্রেস, হাওড়ামুখী পুরী-শতাব্দী-সহ ২২টি ট্রেন বালেশ্বর, কটক, ভুবনেশ্বর, কপিলাস রোড-সহ বিভিন্ন স্টেশনে দাঁড়িয়ে যায়। সূত্রের খবর, প্যান্ট্রি কার না থাকায় কঠিন পরিস্থিতি হয় পুরী-হাওড়া শতাব্দী এক্সপ্রেসের। যাত্রীদের জন্য দুপুরের খাবার তোলার কথা বালেশ্বর স্টেশন থেকে। কিন্তু বালেশ্বরের অনেক আগে ট্রেন দাঁড়িয়ে পড়ায় খাবার জোটেনি। যাত্রীরা পানীয় জলও পাননি। প্রায় একই অবস্থা হয়েছে ফলকনুমা এক্সপ্রেসের। অনেক ট্রেনই আটকে থাকে ছোট স্টেশনে, সেখানেও খাবারদাবার পাওয়ার উপায় নেই।

আটকে থাকা যাত্রীদের বক্তব্য, এই অবরোধ যদি কোনও সংগঠনের ঘোষিত কর্মসূচিই ছিল, তবে রেল কর্তৃপক্ষ আগাম ব্যবস্থা নিতে পারতেন। তা না-করে হাজার হাজার যাত্রীকে বিক্ষোভকারী জনতার খেয়ালের

মুখে ঠেলে দেওয়ার কারণ কী?

অবরোধ ওঠে বিকেল সাড়ে চারটে নাগাদ। পুরী-হাওড়া শতাব্দী এক্সপ্রেসের যাত্রাপথ ভদ্রকেই শেষ করে দেওয়া হল বলে রেলের তরফে জানিয়ে দেওয়া হয়। ভদ্রক স্টেশনে ঘোষণা করে দেওয়া হয়, পরের যে ট্রেন আসবে, সেই ট্রেনে তাঁদের উঠে হাওড়া যেতে হবে। তাতে ক্ষুব্ধ হয়ে যাত্রীরা স্টেশনে বিক্ষোভ দেখান। পরে অবশ্য সিদ্ধান্ত বদল করেন রেল কর্তৃপক্ষ। জানানো হয়, পুরী-হাওড়া শতাব্দী এক্সপ্রেস হাওড়াতেই যাবে।

দক্ষিণ-পূর্ব রেলের তরফে এ দিন সন্ধায় জানানো হয়, শনিবারের এই অবরোধের ঠেলায় আজ, রবিবার পুরী থেকে হাওড়া আসার শতাব্দী এক্সপ্রেস এবং ভুবনেশ্বর থেকে হাওড়া আসার জনশতাব্দী এক্সপ্রেস বাতিল করা হয়েছে।

কিন্তু অবরোধের কথা আগেভাগে জানা সত্ত্বেও কেন উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হল না— তা নিয়ে ওড়িশা সরকারের কোনও কর্তা মুখ খুলতে চাননি। ওড়িশা পুলিশ কেবল জানিয়েছে, জেলার কালেক্টর ও রেল পুলিশ সুপার ঘটনাস্থলে ছিলেন। তাঁরা অবরোধকারীদের সঙ্গে আলোচনা করে অবরোধ তোলার চেষ্টা করেন।

আর রেল কর্তৃপক্ষ? দক্ষিণ-পূর্ব রেলের এক কর্তা জানান, অবরোধকারীদের আলোচনায় ডাকা হলেও তারা আসেনি। রেলের ওই কর্তা বলেন, ‘‘মারকোনা স্টেশনে সারা দিনে মাত্র ৪১৫ জন যাত্রী ওঠা-নামা করেন। তাই ওই স্টেশনে আরও ছয় জোড়া দূরপাল্লার ট্রেন থামানোর দাবি অযৌক্তিক।

কিন্তু টিকিট কেটে ট্রেনে উঠে যাত্রীদের এমন হেনস্থার শিকার হতে হবে কেন— এই প্রশ্নের উত্তর মেলেনি রেলকর্তাদের কাছে।

train blockage
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy