Advertisement
E-Paper

ভেজা মরুভূমি, বৃষ্টির ঘাটতি সবুজ বাংলায়

মরুভূমির রাজ্য রাজস্থানে এখনও বর্ষা ঢোকেনি। তবু সেখানে কৃপাদৃষ্টি ঢেলে চলেছেন বরুণদেব। শস্যশ্যামলা বাংলায় বর্ষা ঢুকেছে ২০ দিন আগে। কিন্তু সেখানে বর্ষার খাতায় এখন ২৩ শতাংশ ঘাটতি।

কুন্তক চট্টোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ০২ জুলাই ২০১৭ ০৩:০৯
রবিবার দুই মেদিনীপুর এবং বাঁকু়ড়ায় ভারী বৃষ্টি হতে পারে। —ফাইল চিত্র।

রবিবার দুই মেদিনীপুর এবং বাঁকু়ড়ায় ভারী বৃষ্টি হতে পারে। —ফাইল চিত্র।

এ যেন উলটপুরাণ!

মরুভূমির রাজ্য রাজস্থানে এখনও বর্ষা ঢোকেনি। তবু সেখানে কৃপাদৃষ্টি ঢেলে চলেছেন বরুণদেব। শস্যশ্যামলা বাংলায় বর্ষা ঢুকেছে ২০ দিন আগে। কিন্তু সেখানে বর্ষার খাতায় এখন ২৩ শতাংশ ঘাটতি।

শুধু বাংলাই নয়, বর্ষার মরসুমের প্রথম মাসের শেষে বৃষ্টির ঘাটতি বিহার-ঝাড়খণ্ডেও। জুলাইয়ের গো়ড়া থেকে বর্ষা জোরালো না হয়ে উঠলে এই ঘাটতি কতটা মিটবে, তা নিয়ে সন্দিহান আবহবিদেরা। এই ঘাটতি অবশ্য এখনও চাষিদের কপালে ভাঁজ ফেলেনি। বিধানচন্দ্র কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আনন্দময় পুস্তে বলছেন, ‘‘বর্ষা তো জোর পাচ্ছে। এই পরিস্থিতি চললে আমন চাষের ক্ষতি হবে না।’’ কিন্তু যদি দুর্বল বর্ষার জেরে ঘাটতি বেড়ে যায়? সে ক্ষেত্রে আমন চাষের বীজতলা তৈরিতে সমস্যা হতে পারে বলে আশঙ্কা কৃষি-আবহবিদদের অনেকের।

আলিপুর আবহাওয়া দফতর শনিবার জানিয়েছে, ঝাড়খণ্ডের উপরে একটি ঘূর্ণাবর্ত রয়েছে। তার ফলে আজ, রবিবার দুই মেদিনীপুর এবং বাঁকু়ড়ায় ভারী বৃষ্টি হতে পারে। বৃষ্টি হতে পারে গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গের সব জেলাতেই। উত্তরবঙ্গে একটি আলাদা ঘূর্ণাবর্তের প্রভাবে তরাই-ডুয়ার্সের জেলাগুলিতে ভারী বৃষ্টি হতে পারে। উত্তরবঙ্গের কোনও কোনও এলাকায় অতি ভারী বৃষ্টির আশঙ্কা রয়েছে। শনিবারও উত্তরবঙ্গের কোথাও কোথাও ভারী বৃষ্টি হয়েছে।

এপ্রিলেই স্বাভাবিক বর্ষার পূর্বাভাস দিয়েছিল মৌসম ভবন। তারা জানাচ্ছে, জুনে গোটা ভারতেই কম-বেশি স্বাভাবিক বৃষ্টিপাত হয়েছে। ব্যতিক্রম শুধু পশ্চিমবঙ্গ, বিহার, ঝা়ড়খণ্ড এবং উত্তরপ্রদেশ। রাজস্থানে স্বাভাবিকের থেকে ৯৫ শতাংশ বেশি বৃষ্টি হয়েছে। অর্থাৎ প্রায় দ্বিগুণ। মরুশহর জয়সলমের এবং বারমেরে অতিবৃষ্টি মিলেছে। সেখানে পশ্চিমবঙ্গে বৃষ্টির ঘাটতি ২৩ শতাংশ ছুঁয়েছে! হাওড়া, হুগলি, পূর্ব মেদিনীপুর, বীরভূম-সহ গোটা রাজ্যের ১২টি জেলায় বৃষ্টির ঘাটতি রয়েছে। বিহার-ঝাড়খণ্ডের পরিস্থিতি আরও খারাপ।

কেন? আবহবিদদের ব্যাখ্যা, পূর্ব ভারতে বর্ষা এ বার কিছুটা দেরিতে ঢুকেছে। ঢোকার পরেও নড়বড়ে ছিল। ফলে বিক্ষিপ্ত বৃষ্টিপাত মিলেছে শুধু। মাঝে দিনকতক ঘূর্ণাবর্ত-নিম্নচাপের প্রভাবে একটু গা-ঝাড়া দিয়েছিল বর্ষা। রাজস্থানেও জুনে বর্ষা ঢোকার কথা নয়। এ দিন সবে উত্তরপ্রদেশে ঢুকেছে বর্ষা। ফলে জুন মাসে রাজস্থানে স্বাভাবিক বর্ষার পরিমাণ খুব কম। ঘূর্ণাবর্তের প্রভাবেই এ বার সে রাজ্যে পরপর ভারী ব়ৃষ্টি হয়েছে। ফলে স্বাভাবিক পরিমাণকে টপকে গিয়েছে বর্ষা। মৌসম ভবনের খবর, দক্ষিণ রাজস্থানের উপরে একটি ঘূর্ণাবর্ত রয়েছে। তার ফলে সেখানে আগামী কয়েক দিন বৃষ্টি হতে পারে।

পশ্চিমবঙ্গের কপালে কী রয়েছে? আলিপুর আবহাওয়া দফতরের অধিকর্তা গণেশকুমার দাস বলছেন, ‘‘এ রাজ্যে বৃষ্টি হয় জুলাই-অগস্টে। মনে হচ্ছে, জুলাইয়ে বর্ষার তেজ বাড়বে।’’ আবহবিদদের একাংশ বলছেন, ওড়িশা ও অন্ধ্র উপকূলে ঘূর্ণাবর্ত দানা বেঁধেছে। সেটি পশ্চিমবঙ্গের দিকে বয়ে এলে বর্ষার জোর বাড়িয়ে দিতে পারে। মৌসুমি বায়ুও শক্তিশালী হওয়ার ইঙ্গিত দিচ্ছে। এ সব ইঙ্গিত শেষমেশ সুখবর বয়ে আনে কি না, সেটাই দেখার।

Rainy Season Monsoon বৃষ্টি Deficit
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy