Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

মূর্তি বসল বরুণের, পরিবারের কেউ হাজির হলেন না অনুষ্ঠানে

গাইঘাটার সুটিয়া প্রতিবাদী মঞ্চের সম্পাদক তথা শিক্ষক বরুণ বিশ্বাস অবশ্য খুন হয়ে গিয়েছেন। সুটিয়া গণধর্ষণ কাণ্ডের সাক্ষী বরুণকে ২০১২ সালের ৫ জুলাই গোবরডাঙা স্টেশনের কাছে দুষ্কৃতীরা গুলি করে খুন করেছিল। শুক্রবার বরুণের জন্মদিনে ‘প্রতিবাদী মঞ্চ’-এর তরফে বরুণের বাড়ির সামনে ফাইবারের তৈরি তাঁর আবক্ষ মূর্তি বসানো হল। মূর্তিটি তৈরি করেছেন শিল্পী অর্ধেন্দু সরকার।

প্রতিবাদী যুবককে শ্রদ্ধাঞ্জলি। ছবি: নির্মাল্য প্রামাণিক।

প্রতিবাদী যুবককে শ্রদ্ধাঞ্জলি। ছবি: নির্মাল্য প্রামাণিক।

নিজস্ব সংবাদদাতা
গাইঘাটা শেষ আপডেট: ১৩ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ০১:২৯
Share: Save:

বেঁচে থাকলে শুক্রবার, ১২ সেপ্টেম্বর তাঁর বয়স হত ৪২।

গাইঘাটার সুটিয়া প্রতিবাদী মঞ্চের সম্পাদক তথা শিক্ষক বরুণ বিশ্বাস অবশ্য খুন হয়ে গিয়েছেন। সুটিয়া গণধর্ষণ কাণ্ডের সাক্ষী বরুণকে ২০১২ সালের ৫ জুলাই গোবরডাঙা স্টেশনের কাছে দুষ্কৃতীরা গুলি করে খুন করেছিল। শুক্রবার বরুণের জন্মদিনে ‘প্রতিবাদী মঞ্চ’-এর তরফে বরুণের বাড়ির সামনে ফাইবারের তৈরি তাঁর আবক্ষ মূর্তি বসানো হল। মূর্তিটি তৈরি করেছেন শিল্পী অর্ধেন্দু সরকার।

প্রতিবাদী মঞ্চের তরফে ২ লক্ষ টাকা দিয়ে বরুণের বাড়ির কাছেই দেড় কাটা জমি কেনা হয়েছে। ‘বরুণ বিশ্বাস স্মৃতি ফাউন্ডেশন’-এর নামে ওই জমিতেই আবক্ষ মূর্তিটি বসানো হয়েছে।

শুক্রবার দুপুরে মূর্তির আবরণ উন্মোচন করেন প্রতিবাদী মঞ্চের প্রধান উপদেষ্টা প্রাক্তন শিক্ষক জীতেন্দ্রনাথ বালা। একটি স্মরণ অনুষ্ঠানেরও আয়োজন করা হয়েছিল। প্রতিবাদী মঞ্চের তরফে জানানো হয়, বার বার আমন্ত্রণ জানানো হলেও এ দিন বরুণের পরিবারের তরফে কেউ অনুষ্ঠানে আসেননি।

কিছু দিন আগেও প্রতিবাদী মঞ্চের তরফে আয়োজিত বরুণের স্মরণসভায় পরিবারের কাউকে উপস্থিত হতে দেখা যায়নি। এ বিষয়ে বরুণের দাদা অসীত বিশ্বাস বলেন, “যে ফাইবারের মূর্তিটি বসানো হয়েছে, কিছু দিনের মধ্যেই তার থেকে চটলা উঠে যাবে। একটা হাস্যকর জিনিসে পরিণত হবে। প্রচার পাওয়ার জন্যই এটি বসানো হয়েছে। ওই মূর্তির মাধ্যমে বরুণের মানবিক যে চরিত্র ছিল, তাকে অসম্মান করা হয়েছে। সে কারণেই আমরা যাইনি।” অসীতবাবু জানিয়েছেন, শীঘ্রই ইতালির শ্বেত পাথরে তৈরি বরুণের একটি মূর্তি বাড়িতে বসানো হবে।

এ দিনই কলকাতার কেশব সেন স্ট্রিটে ‘বরুণ বিশ্বাস স্মৃতি রক্ষা কমিটি’র তরফে একটি অ্যাকাডেমির উদ্বোধন করা হয়েছে। যেখানে গরিব দুঃস্থ পরিবারের ছেলে-মেয়েরা বিনা খরচে কম্পিটারের মাধ্যমে লেখাপড়ার সুযোগ পাবে বলে অসিতবাবু জানিয়েছেন। ওই অনুষ্ঠানে তিনি উপস্থিত ছিলেন।

সুটিয়া প্রতিবাদী মঞ্চের সভাপতি ননীগোপাল পোদ্দার বলেন, “বরুণ বিশ্বাস স্মৃতি ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে বরুণ যে সামাজিক কাজ করতেন, যেমন গরিব পরিবারের মেয়ের বিয়ে দেওয়া, লেখাপড়ার খরচ চালানো, চিকিৎসার ব্যবস্থা করা এ সব আমরা আগামী দিনেও করে যেতে চাই। কেউ যদি আমাদের সাহায্য করতে চান, সেই দান আমরা গ্রহণ করব।”

প্রতিবাদী মঞ্চের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, বরুণের পরিবারের সদস্যেরা ঠিক মতো সাক্ষী দিচ্ছেন না বলেই বিচার প্রক্রিয়া ব্যাহত হচ্ছে। পাশাপাশি, ননীগোপালবাবুর দাবি, বরুণের খুনিরা যাতে শাস্তি পায়, সে জন্য তাঁদের আন্দোলন চলবে।

এ দিনের অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন মীরাতুন নাহার, শাশ্বতী ঘোষ-সহ অনেকে। মীরাতুন বলেন, “বরুণ বেঁচে থাকা অবস্থায় তাঁর জন্মদিন পালন করতে পারিনি, এটা আমাদের ব্যর্থতা। আজ তাঁর মৃত্যুর পরেও এত মানুষ এখানে এসেছেন দেখে ভাল লাগছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

barun biswas statue sutia gaighata southbengal
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE