ধৃত রাজা শেখ।
বিএসএফ জওয়ান বলে ভুয়ো পরিচয় দিয়ে বিদেশে চাকরি দেওয়ার নাম করে প্রতারণার অভিযোগে এক যুবককে গ্রেফতার করল পুলিশ। শুক্রবার দেগঙ্গা এবং বসিরহাট থানার পুলিশ যৌথ ভাবে অভিযান চালিয়ে গোবিলা গ্রাম থেকে রাজা শেখ নামে ওই যুবককে ধরে। বসিরহাট থানার আইসি গৌতম মিত্র বলেন, ‘‘ধৃত যুবক কৃষ্ণনগরের বাসিন্দা। তার বিরুদ্ধে একাধিক লোককে বিদেশে চাকরি পাইয়ে দেওয়ার নাম করে টাকা নেওয়ার অভিযোগ আছে।’’
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মাস কয়েক আগে রীতিমতো সংবাদপত্রে বিজ্ঞাপন দিয়ে বিদেশে ভাল বেতনের চাকরির জন্য ইচ্ছুকদের যোগাযোগের জন্য বলা হয়। তা দেখে বিভিন্ন এলাকার বেশ কিছু মানুষ মোবাইলে রাজার সঙ্গে যোগাযোগ করেন। তাঁদেরই একজন চাতরার সলুয়া গ্রামের সঞ্জয় মণ্ডল। তিনি রাজার সঙ্গে যোগাযোগ করলে তাঁকে ফ্রান্সে নিয়ে যাওয়া হবে বলে পাসপোর্ট করতে বলা হয়। সেই মতো পাসপোর্ট-সহ অন্যান্য নথিপত্র নিয়ে রাজার সঙ্গে দেখা করেন সঞ্জয়। তাঁকে বলা হয়, মেডিক্যাল পরীক্ষা বাবদ ৫ হাজার টাকা দিতে হবে।
শুক্রবার বসিরহাট থানা চত্বরে দাঁড়িয়ে সঞ্জয়বাবু দাবি করেন, গত ১৭ অগস্ট ফ্রান্সে যাওয়ার জন্য ভিসা এবং বিমানের টিকিট দেওয়া হবে বলে তাঁর কাছ থেকে পরে ৩৫ হাজার টাকা দাবি করা হয়। সঞ্জয় ও তাঁর সঙ্গীরা ২০ হাজার করে মোট ৮০ হাজার টাকার বিনিময়ে রাজার সঙ্গে রফায় আসেন। বাকি দু’জনের কাছ থেকে আরও ৮০ হাজার টাকা নেয় রাজা। সঞ্জয়ের কথায়, ‘‘সে সময়ে কোমর থেকে রিভলবার বের করে রাজা বলেছিল, সে বিএসএফ কর্মী। সে জন্য সঙ্গে আগ্নেয়াস্ত্র রাখে। আরও বলেছিল, আমাদের বিদেশ যাওয়া নিশ্চিত। কোনও চিন্তা নেই।’’ কিন্তু চিন্তা যে আছে, তা পর দিনই টের পান সঞ্জয়রা। পুলিশকে তিনি জানিয়েছেন, জিনিসপত্র নিয়ে দমদম বিমানবন্দরে হাজির হন তিনি ও তাঁর সঙ্গীরা। দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষার পরেও রাজার দেখা মেলেনি। সকলে বুঝে যান, গোটা টাকাটাই জলে গিয়েছে। দেগঙ্গা থানায় অভিযোগ করেন তাঁরা। তদন্তে নামে পুলিশ।
পুলিশের কাছে খবর আসে, গোবিলা গ্রামে এক আত্মীয়ের বাড়িতে লুকিয়ে আছে রাজা। দুই থানার পুলিশ অপারেশন চালিয়ে গ্রেফতার করে ওই প্রতারককে। পুলিশের দাবি, সংবাদপত্রে বিজ্ঞাপন দিয়ে বিদেশে চাকরি দেওয়ার একটি বড় চক্র কাজ করছে। জেরায় রাজা জানিয়েছে, দেগঙ্গা বাজারের একটি ওষুধের দোকানে কাজ করত সে। ওই দোকানের মালিক তার মোবাইল নম্বর দিয়ে সংবাদপত্রে চাকরির বিজ্ঞাপন দেয়। তাকে ফাঁসিয়ে ওই ব্যক্তি সব টাকা নিয়ে পালিয়েছে। তদন্তকারী অফিসারেরা রাজার কথার সত্যতা খতিয়ে দেখছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy