Advertisement
০৪ মে ২০২৪
Bomb Blast Case

বাতিল কৌটো ঠুকতেই ফাটল বোমা, হাত উড়ে জখম দু’জন

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এলাকায় টিন ও লোহা ভাঙার কারবারি চন্দন রায়ের বাড়ির পাশেই রয়েছে তাঁর গুদাম। ভাঙা টিন-লোহার জিনিসপত্র কিনে বা সংগ্রহ করে অনেকেই নিয়মিত চন্দনের গুদামে মজুত করেন।

An image of Blast

—প্রতীকী চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
ব্যারাকপুর শেষ আপডেট: ২৯ জানুয়ারি ২০২৪ ০৭:৩২
Share: Save:

ভরদুপুরে জনবহুল এলাকায় বোমা বিস্ফোরণে হাত উড়ে গেল এক জনের। গুরুতর জখম হলেন আরও এক জন। রবিবার দুপুরে কাঁচরাপাড়ার সুবোধ রায় সরণির মণ্ডলবাজার এলাকার এই ঘটনায় আতঙ্ক ছড়ায় আরও বিস্ফোরণের আশঙ্কায়। জখম দু’জন কল্যাণীর জে এন এম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। পুলিশ ও দমকল পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এলাকায় টিন ও লোহা ভাঙার কারবারি চন্দন রায়ের বাড়ির পাশেই রয়েছে তাঁর গুদাম। ভাঙা টিন-লোহার জিনিসপত্র কিনে বা সংগ্রহ করে অনেকেই নিয়মিত চন্দনের গুদামে মজুত করেন। নদিয়ার চাকদহের বাসিন্দা সঞ্জয় অধিকারী ও বিধান দাস নামে এমনই দু’জন এ দিন গুদামে জিনিসপত্র নামানোর সময়ে সংগ্রহ করে আনা টিনের তিনটি কৌটো খোলার চেষ্টা করছিলেন। সঞ্জয় একটি কৌটোকে ধাতব পাত দিয়ে পিটিয়ে খোলার চেষ্টা করতেই সেটি ফেটে যায়। তার অভিঘাতে আরও দু’টি কৌটোবোমা ফাটে। সঞ্জয়ের ডান হাতের পাঞ্জা কব্জির থেকে ঝুলতে থাকে। তাঁর সঙ্গী বিধানের বাঁ পায়ে বোমার টুকরো ঢুকে যায় এবং শরীরের বেশ কিছুটা অংশ ঝলসে যায়। হাসপাতাল সূত্রের খবর, সঞ্জয়ের হাত অস্ত্রোপচার করে কব্জি থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে। দু’জনের শরীর থেকেই বোমার টুকরো বার করা হয়েছে।

কাঁচরাপাড়ায় ঘটনাস্থলের পাশেই ছোটদের একটি স্কুল আছে। যখন বিস্ফোরণ হয়, তখন স্কুলে টিফিনের সময়। ওই সময়ে অন্য দিন ছোটরা বাইরে খেলাধুলো করে। এ দিন রবিবার হওয়ায় বন্ধ ছিল স্কুলটি। চন্দন বলেন, ‘‘স্কুল খোলা থাকলে পড়ুয়াদের মধ্যে হয়তো কেউ এই দুর্ঘটনায় পড়ত। বোমার মশলার গন্ধ আর বিস্ফোরণের তীব্রতায় আমরাই ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম। এসে দেখি, দু’জন রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে আছেন। এই ব্যবসা করতে এ বার ভয় লাগছে।’’ স্থানীয় পুরপ্রতিনিধি শর্মিষ্ঠা মজুমদার বলেন, ‘‘এই প্রথম এমন ঘটনার সাক্ষী থাকলেন এখানকার বাসিন্দারা। কী ভাবে এমনটা হল, তা পুলিশ তদন্ত করছে।’’

যদিও ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চল এমন ঘটনার নিয়মিত সাক্ষী। প্রশাসনের খতিয়ান অনুযায়ী, জঞ্জাল, আবর্জনার স্তূপ, রাস্তার ধারে ডাঁই করা ইমারতি দ্রব্য, ঝোপঝাড় এমনকি ইটের পাঁজায় লুকিয়ে রাখা বোমা কুড়িয়ে আনার পরে ফেটে গিয়ে জখম ও মৃত্যুর তালিকায় শিশু এবং কিশোরের সংখ্যা গত এক বছরে ওই তল্লাটে ১১ জন। স্থানীয় সূত্রে অবশ্য সংখ্যাটা আরও কিছুটা বেশি।

জগদ্দল এলাকায় রেললাইনের ধারে ফেলে রাখা বোমাকে বল ভেবে খেলতে গিয়ে এক শিশুর মৃত্যুর পরে রেল পুলিশ শিয়ালদহ-নৈহাটি শাখায় মেন লাইন বরাবর কিছু দিন তল্লাশি অভিযান চালিয়েছিল। টিটাগড়ে থানার কাছেই ইটের পাঁজায় রাখা বোমাকে বল ভেবে লোফালুফি করতে গিয়ে হাত উড়ে গিয়েছিল কিশোরের। দিনকয়েক আগে পলতায় ঝোপ থেকে চারটি তাজা বোমা উদ্ধার হয়।

রবিবারের ঘটনা প্রসঙ্গে ব্যারাকপুর কমিশনারেটের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘এ ক্ষেত্রেও সম্ভবত বোমা বলে বুঝতে না পেরেই কৌটোগুলি বিক্রি করার জন্য নিয়ে গিয়েছিলেন ওই দু’জন। শিল্পাঞ্চলের ঘিঞ্জি এবং পরিত্যক্ত জায়গায় লুকনো বোমা খুঁজে বার করা রীতিমতো কঠিন। তবু আমরা জানতে পারলেই ব্যবস্থা নিই।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Bomb Blast Case kanchrapara police investigation
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE