আদালতে আত্মসমর্পণ করলেন মন্দিরবাজার কলেজে ভাঙচুরে অভিযুক্ত স্থানীয় তৃণমূল বিধায়ক জয়দীপ হালদারের দুই ছেলে সুদীপ, সন্দীপ এবং ভাইপো অভিজিৎ। তবে আর এক অভিযুক্ত, বিধায়কের ভাই বাসুদেব আত্মসমর্পণ করেননি।
ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক পছন্দ না হওয়ায় সোমবার বহিরাগতদের নেতৃত্বে ক্যাম্পাসে ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে মন্দিরবাজারের বীরেশ্বরপুর কলেজে। অভিযোগ, পুরো ঘটনা ঘটে স্থানীয় বিধায়ক জয়দীপবাবুর দুই ছেলে, ভাই এবং ভাইপোর নেতৃত্বেই। পুলিশের কাছে অভিযোগ করেন কলেজ কর্তৃপক্ষ। কিন্তু দু’দিন পেরিয়ে গেলেও গ্রেফতার হয়নি কেউ। বুধবার ডায়মন্ড হারবার আদালতে এসে সুদীপ, সন্দীপ এবং অভিজিৎ আত্মসমর্পণ করেন। অভিযুক্তদের আইনজীবী সুদীপ চক্রবর্তী বলেন, ‘‘ব্যক্তিগত হাজার টাকার বন্ডে বিচারক আমার মক্কেলদের জামিন মঞ্জুর করেছেন।’’
তৃণমূল সূত্রের খবর, কলেজে ভাঙচুরে স্থানীয় বিধায়কের নাম জড়িয়ে যাওয়াকে ভাল ভাবে নেয়নি দল। দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা কমিটির এক শীর্ষ নেতা জয়দেববাবুকে এ নিয়ে ভৎর্সনা করেন। টিএমসিপির রাজ্য নেতৃত্বের পক্ষ থেকেও বিষয়টি নিয়ে দলের সর্বোচ্চ নেতৃত্বের কাছে ক্ষোভ জানানো হয়। এরপরে গ্রেফতারি এড়াতেই এই আত্মসমর্পণ বলে অনুমান জেলা তৃণমূলের একাংশের। বিধায়ক ফোন ধরেননি। তবে তাঁর ঘনিষ্ঠ মহল সূত্রের খবর, দলের তরফে এ ব্যাপারে কোনও চাপ নেই। আইন আইনের পথে চলবে।
কিন্তু বাসুদেববাবু আত্মসমর্পণ করলেন না কেন, সে প্রশ্নের উত্তর মেলেনি। মূল অভিযুক্তেরা জামিন পেয়ে যাওয়ায় কলেজ কর্তৃপক্ষ ক্ষুব্ধ। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মন্দিরবাজার কলেজের একাধিক শিক্ষকের অভিযোগ, বিধায়কের আত্মীয় সুবাদেই পুলিশ তাদের আত্মসমর্পণের সুযোগ করে দিল।
যদিও নিজেদের বিরুদ্ধে ওঠা সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন সুদীপ, সন্দীপ, অভিজিৎ। অভিজিৎ মন্দিরবাজার কলেজের প্রথম বর্ষের ছাত্র। তিনি ছাত্র সংসদের টিএমসিপি সদস্যও। তাঁর পাল্টা অভিযোগ, সোমবার ছাত্র সংসদের পদাধিকারী নির্বাচনের দিন সাধারণ সম্পাদক হিসেবে এক ছাত্রের নাম প্রস্তাব করা হয়। ওই ছাত্রকে তাঁর পছন্দ ছিল না। কিন্তু অধ্যক্ষ তাঁকে ওই ছাত্রকে সমর্থনের জন্য জোর করেন। তার পরেই বহিরাগতেরা কলেজে ঢোকে। তাঁর আরও দাবি, অন্য রাজনৈতিক দলের প্ররোচনাতেই অধ্যক্ষ এই কাজ করেছেন।
অভিযোগ শুনে অধ্যক্ষ আবদুল্লাহ জমাদার হাসান বলেন, ‘‘ছাত্র সংসদের কোনও সদস্যকে কাউকে সমর্থনের জন্য জোর করার প্রশ্নই আসে না। আমি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সেনেট সদস্য। অনেক সমস্যা পেরোনোর পরে মন্দিরবাজার কলেজে পরিকাঠামোর উন্নতি হয়েছে। কলেজে হামলা কোনও ভাবেই মানা যায় না। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ সব জানেন।’’