সংসারের চরম আর্থিক দূরবস্থার মুখেও দমে যায়নি সাইন। কখনও বাদাম বিক্রি করে, কখনও বিড়ি বেঁধে কিংবা ভ্যান রিকশা টানার পরে রাত জেগে পড়াশোনা চালিয়ে গিয়েছে হিঙ্গলগঞ্জ হাইস্কুলের এই ছাত্রটি। মাধ্যমিকে সব ক’টি বিষয়ে লেটার নিয়ে তার প্রাপ্ত নম্বর ৬৪২ নম্বর। হিঙ্গলগঞ্জ ব্লকের মধ্যে সর্বোচ্চ নম্বর পেয়েছে ছেলেটি। তাকে নিয়ে গর্বিত পরিবার-পরিজন ও শিক্ষকেরা।
হাসনাবাদের কুমারপুকুরের গাবতলায় বাড়ি ছিল সাইন মণ্ডলদের। বছর চোদ্দো আগে স্বামীর মৃত্যুর পরে ছেলেমেয়েকে নিয়ে খাদিজা বেওয়া চলে আসেন তাঁর ভাইয়ের বাড়ি হিঙ্গলগঞ্জের সাহাপুরে। সাইনের বয়স তখন মাত্র তিন বছর। বিড়ি বাঁধা থেকে শুরু করে পরের জমিতে কাজ করে সন্তানদের নিয়ে কোনও রকমে দিন গুজরান হয় খাদিজার। কিন্তু ছেলেমেয়েকে তিনি লেখাপড়া শিখিয়ে মানুষ করতে চেয়েছিলেন। টাকার অভাবে গৃহশিক্ষক রাখতে না পারলেও মেয়ে রেশমা পড়াশোনা চালিয়ে যাচ্ছে। হিঙ্গলগঞ্জ মহাবিদ্যালয়ে বিএ দ্বিতীয় বর্ষে পড়ছে সে। দিদির মতো মায়ের বিড়ি বাঁধার কাজে সাহায্যের পাশাপাশি পড়াশোনা চালিয়ে মাধ্যমিকে ভাল ফল করেছে সাইন।
টাকার অভাবে গৃহশিক্ষক রাখতে ছিল না তার। যা নজরে পড়ায় স্কুলের প্রধান শিক্ষক সাধন ঘোষ স্কুল ছুটির পরে সাইনকে ইংরেজি পড়াতে শুরু করেন। গ্রামের বাসিন্দা দীপঙ্কর দাস সাইনের লেখাপড়ার প্রতি আগ্রহ দেখে বিজ্ঞান পড়িয়েছেন। বই, খাতা, পেন দিয়েও সাহায্য করতেন।