Advertisement
E-Paper

সমবায় ব্যাঙ্কে গ্রাহকদের টাকা দেওয়া শুরু হাবড়ায়

প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন গ্রাহকদের প্রত্যেককে তিন হাজার টাকা করে দেওয়া হয়েছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা  

শেষ আপডেট: ০৬ জানুয়ারি ২০২১ ০৫:২৭
 অপেক্ষা: টাকা ফেরত পেতে ভিড় জমিয়েছেন মানুষজন। ছবি: সুজিত দুয়ারি।

অপেক্ষা: টাকা ফেরত পেতে ভিড় জমিয়েছেন মানুষজন। ছবি: সুজিত দুয়ারি।

প্রায় এক বছর ধরে হাবড়ার হাটথুবা সমবায় কৃষি উন্নয়ন সমিতি থেকে জমানো টাকা ফেরত না পেয়ে সমস্যায় পড়েছিলেন কয়েক হাজার গ্রাহক। টাকা ফেরতের দাবিতে দিন কয়েক আগে বিডিও অফিসে বিক্ষোভ দেখিয়েছিলেন। স্মারকলিপি জমা দেওয়া। সড়ক অবরোধ, বিক্ষোভ, প্রতিবাদ সভা করে একই দাবি তোলে রাজনৈতিক দলগুলি।

মঙ্গলবার থেকে গ্রাহকদের টাকা দেওয়ার কাজ শুরু হল। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন গ্রাহকদের প্রত্যেককে তিন হাজার টাকা করে দেওয়া হয়েছে। আগামী পাঁচ মাস তাঁদের পর্যায়ক্রমে টাকা দেওয়া হবে বলে জানানো হয়েছে।

এ দিন সমিতিতে এসেছিলেন স্থানীয় বিধায়ক তথা রাজ্যের খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। তিনি জানান, যে সব গ্রাহকেরা ৫ হাজার থেকে ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত সমিতিতে রেখেছিলেন, প্রথমে তাঁদের টাকাই পর্যায়ক্রমে ফিরিয়ে দেওয়া হবে। আগামী পাঁচ মাস ধরে প্রতি মাসে ৪০ লক্ষ টাকা করে দেওয়া হবে গ্রাহকদের। যাঁরা ৫০ হাজার বা বেশি টাকা রেখেছিলেন, তাঁদের টাকা পরবর্তী সময়ে দেওয়া হবে। জ্যোতিপ্রিয় বলেন, ‘‘প্রথমে আমরা গরিব মানুষদের টাকা ফেরানোর ব্যবস্থা করেছি।’’

প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, সমিতির ব্যাঙ্কে মোট গ্রাহকের সংখ্যা প্রায় সাড়ে ৫ হাজার। এ ছাড়া, ১৩৮টি স্বনির্ভর গোষ্ঠী টাকা রেখেছিল। ব্যাঙ্কে এখন কোনও কমিটি নেই। বিষয়টি দেখছে সমবায় দফতর। বিডিও, থানার আইসি সমবায় দফতরের প্রতিনিধি সহ প্রশাসনের লোকজনকে নিয়ে একটি কমিটি তৈরি হয়েছে। তারা টাকা ফেরতের বিষয়টি দেখছে। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, অতীতে সমবায় ব্যাঙ্কে টাকা তছরুপের অভিযোগ উঠেছিল। এর ফলেই গ্রাহকদের টাকা পেতে দেরি হচ্ছে।

এ দিকে বিষয়টি নিয়ে চাপ বাড়ছিল বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের আন্দোলনে। স্থানীয় মানুষের মধ্যেও ক্ষোভ জমা হচ্ছিল। সামনে ভোট। ফলে তড়িঘড়ি সমস্যা সমাধানের দায় ছিল শাসকদলের।

এত দ্রুত কী ভাবে টাকা ফেরানোর ব্যবস্থা হল? জ্যোতিপ্রিয় বলেন, ‘‘সমবায় সমিতির জমি, সম্পত্তি কেউ কেউ আত্মসাৎ করে রেখেছিল। আমরা সেই জমি ফিরিয়ে এক ব্যক্তির কাছে মর্টগেজ রেখেছি। তিনি মাসে ৪০ লক্ষ টাকা করে দেবেন। দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ করা হচ্ছে।’’

এ দিন টাকা পেয়েও গ্রাহকেরা সংশয়ে। বাসন্তী ঘোষ নামে এক মহিলা বলেন, ‘‘লোকের বাড়িতে কাজ করে ৮ হাজার টাকা রেখেছিলাম। আজ তিন হাজার টাকা পেলাম। বাকি টাকা কবে দেওয়া হবে বলা হয়নি।’’ এ দিন গ্রাহকেরা ফের ক্ষোভ জানান। তাঁদের দাবি, সব গ্রাহকই ক্ষতিগ্রস্ত। ফলে সকলকেই এক সঙ্গে টাকা দিতে হবে।

রঞ্জিত দেবনাথ নামে এক গ্রাহক বলেন, ‘‘৫০ হাজার টাকা রেখেছি। ৯ মাস তুলতে পারিনি। আজ তিন হাজার টাকা পেয়েছি। বাকি টাকা পরে দেবে বলেছে।’’ টাকা ফেরানোর বিষয়টি রাজনৈতিক ভাঁওতা বলে দাবি করে সিপিএমের হাবড়া এরিয়া কমিটির সম্পাদক আশুতোষ রায়চৌধুরী বলেন, ‘‘গ্রাহকদের পুরো টাকা ফেরতের নিশ্চয়তা দিতে হবে। টাকা ফিরিয়ে খাদ্যমন্ত্রী স্বীকার করলেন দুর্নীতির কথা।’’ হাবড়ার বিজেপি নেতা বিপ্লব হালদার বলেন, ‘‘দুর্নীতিগ্রস্তদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হলেও তাদের গ্রেফতার করা হয়নি। তৃণমূলের লোকজনই দুর্নীতিতে জড়িত। এটা নির্বাচনী চমক। মানুষকে বোকা বানানো হচ্ছে।’’

যে ভাবে সমবায় ব্যাঙ্কের সম্পত্তি ‘মর্টগেজ’ রেখে টাকা ফেরতের ব্যবস্থা হল, তার আইনি বৈধতা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন স্থানীয় কেউ কেউ। ফলে মাঝপথে এটুকু টাকাও হাতে আসা বন্ধ হয়ে যাবে না তো, সে সংশয় আছে গ্রাহকদের একাংশের মধ্যে।

Co operative bank habra
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy