ক্ষতি: ইয়াসের পর দীর্ঘদিন নোনা জলে ডুবে থাকায় পচে গিয়েছে পটল। দেগঙ্গার গাংধুলাটের খাসপুরে। ছবি: সজলকুমার চট্টোপাধ্যায়।
ইয়াসে নদীবাঁধ ভেঙে জল ঢুকে ভেসেছে বিস্তীর্ণ এলাকা। নোনা জল ঢুকে দফারফা হয়েছে চাষের জমির। আনাজ ও ফলের প্রচুর ক্ষতি হয়েছে। শুধু বসিরহাট মহকুমাতেই প্রায় ২৫ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে প্রশাসন সূত্রের খবর। মহকুমা কৃষি দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, চলতি বছর মহকুমায় ৩৬ হাজার হেক্টর জমিতে পাট, তিল, আনাজ, বাদাম, কলা, পেঁপে, আম, জাম, জামরুল চাষ হয়েছিল। এর মধ্যে ৮ হাজার হেক্টর জমির ফসল এবং ফল সম্পূর্ণ ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
বসিরহাট মহকুমা কৃষি অধিকর্তা পূর্ণেন্দু সরকার বলেন, “নোনা জলে মহকুমায় প্রায় ২৫ কোটি টাকার আনাজ ও ফলের ক্ষতি হয়েছে। কৃষকবন্ধু প্রকল্পে ক্ষতিপূরণের টাকা চাষিদের দেওয়া হবে। প্রশাসনের তরফে বীজধানও দেওয়া হবে।”
অনেকেই ঋণ নিয়ে চাষ করেছিলেন। এই পরিস্থিতিতে কী ভাবে ঋণ শোধ করবেন বুঝে উঠতে পারছেন না। পাশাপাশি নোনা জল ঢুকে চাষের জমির ক্ষতি হয়েছে। আবার কবে সেই জমিতে চাষ হবে, জানেন না চাষিরা। বসিরহাটের আনাজ চাষি স্বপন মণ্ডল বলেন, “চড়া সুদে ৫০ হাজার টাকা ঋণ করে কলা, লঙ্কা, পটল, ঝিঙে, কাঁকরোল, উচ্ছে, পেঁপে চাষ করেছিলাম। করোনার সময়ে মানুষের হাতে পয়সা না থাকায় আনাজের বিক্রি ভাল হচ্ছিল না। তার উপরে ইয়াস সব শেষ হয়ে গেল। এখন কী করে সংসার চালাব, আর কী করে ধার শোধ করব জানি না।”
বারাসত মহকুমার দেগঙ্গা ব্লকের বহু মানুষ কৃষিকাজের উপরে নির্ভরশীল। সেখানেও নোনা জলে চাষের প্রচুর ক্ষতি হয়েছে। ব্লক প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রের খবর, এলাকার পটল চাষিরা সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। তিল চাষের জমিতে জল ঢুকে যাওয়ায়, অধিকাংশই নষ্ট হয়ে গিয়েছে। জমে থাকা নোনা জলে পাটের গোড়ায় শিকড় গজিয়ে যাওয়ায় পাটেরও বাজার মূল্য মিলবে না বলে মনে করছেন চাষিরা।
স্থানীয় আনাজ চাষি আলফাজউদ্দিন হক, সাহিদ গাইন, মোফাক্তার হোসেনেরা জানান, সাধারণত তাঁদের উৎপাদিত ফসল রাজ্যের অন্যত্র চলে যায়। কিন্তু করোনার জন্য বেশ কিছু দিন ধরেই ফসল বাইরে বিক্রির জন্য নিয়ে যাওয়া যাচ্ছিল না। স্থানীয় বাজারে কম দামেই বিক্রি করতে হচ্ছিল। এর মধ্যেই ইয়াসের ধাক্কায় জমির সব ফসলই নষ্ট হয়ে গিয়েছে। ফলে দিশাহারা অবস্থা চাষিদের।
দেগঙ্গা ব্লক কৃষি উন্নয়ন আধিকারিক গৌতম সামুই বলেন, “ব্লকের তিনটি মৌজার প্রায় ৭-৮ শো বিঘা জমির কৃষিজ ফসল নষ্ট হয়েছে।” ক্ষতিপূরণ দেওযার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy