বাংলাদেশি পাচারকারীদের আক্রমণে মারা গিয়েছেন বিএসএফের এক জওয়ান। রবিবার গভীর রাতে সীমান্ত লাগোয়া একটি পুকুর থেকে তাঁর দেহ উদ্ধার করে পুলিশ। বিএসএফ জানায়, মৃতের নাম গোবিন্দ সিংহ (৫১)। বাড়ি উত্তর প্রদেশের আগ্রা জেলার কাগারুলচাহার গ্রামে। তিনি বসিরহাটের ঘোজাডাঙা সীমান্তে ১৪৪ নম্বর ব্যাটেলিয়নে কর্মরত ছিলেন। এই ঘটনায় ১২ জন বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীকে আটক করেছে বিএসএফ।
বসিরহাটের ইটিন্ডার ঘোজাডাঙা সীমান্তের পেরিয়ে বাংলাদেশের সাতক্ষীরার ভোমরা। এ দিন রাতে চার সঙ্গীর সঙ্গে ঘোজাডাঙার দক্ষিণপাড়া এলাকায় পাহারা দিচ্ছিলেন ওই জওয়ান। রাত ৯টা নাগাদ ঘোজাডাঙায় বিএসএফের চৌকি থেকে নাইট ভিশন ক্যামেরায় স্থানীয় দক্ষিণপাড়ার কাছে বাংলাদেশের অবদার ভেড়ির উপর বেশ কয়েকজন বাংলাদেশিকে জড়ো হতে দেখা যায়। তাঁরা যে অবৈধভাবে সীমান্ত পেরিয়ে অনুপ্রবেশের চেষ্টা করছে সে ব্যাপারে সতর্কও করা হয়। ১৪৪ নম্বর ব্যাটেলিয়ানের এসআই সুনীল ভৌমিক জানান, রাত সাড়ে ১০টা নাগাদ ২০-২৫ জন বাংলাদেশি সীমান্ত পেরিয়ে এপারে ঢুকে পড়ছে দেখে তাদের বাধা দেয় জওয়ানরা। বাংলাদেশে ফিরে যেতে বললে তাদের সঙ্গে বচসা বাধে। এরপরই পাচারকারীদের সঙ্গে সীমান্তরক্ষীদের হাতাহাতি হয়। পাচারকারীরা জলে নেমে যায়। তাদের ঘিরে ফেলে জওয়ানরা। বাকিরা পালালেও ১২ জন পাচারকারীকে ধরা হয়েছে। সুনীলবাবুর কথায়, ‘‘এরপরই গোবিন্দকে আর খুঁজে পাওয়া যায়নি। পরদিন ভোর ৩টা নাগাদ পুকুরে গোবিন্দের দেহ ভাসতে দেখা যায়। তাঁর মাথায় আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গিয়েছে।’’ প্রাথমিক তদন্তের পর বিএসএফের দাবি, বাংলাদেশি পাচারকারীদের লাঠির আঘাতে আহত হন গোবিন্দ। সে সময়ে পাচারকারীরা তাঁকে ধাক্কা মেরে পুকুরে ফেলে দেয়। জ্ঞান হারানোর জন্যই জল থেকে আর উঠতে পারেননি তিনি। পুকুর থেকে বিএসএফের একটি রাইফেলও উদ্ধার হয়েছে।
জওয়ানের মৃত্যুতে ক্ষিপ্ত বসিরহাট বিএসএফের একাংশ। তাঁদের দাবি, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের তরফে গুলি চালানোর নির্দেশ না থাকায় সীমান্ত পাচারকারী বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। এই নিয়ে গত কয়েক মাসে স্বরূপনগর এবং বসিরহাট সীমান্তে চারজন জওয়ানকে বাংলাদেশি পাচারকারীদের হাতে খুন হতে হল। বিএসএফের কয়েকটি চৌকি পুড়িয়ে দেওয়ার মত ঘটনাও ঘটেছে স্বরূপনগর সীমান্তে। এমনকী মাঝেমধ্যেই সীমান্তের মানুষকে বাংলাদেশি পাচারকারীদের বাধা দিতে গিয়ে হেনস্থার শিকার হতে হয়েছে। কারও বাড়িতে লুঠপাট, ধর্ষণ কিংবা অপহরণের মত ঘটনাও ঘটে প্রায়শই। দিনের পর দিন এমন হামলা চললেও গুলি চালানোর নির্দেশ মিলছে না বিএসএফের জওয়ানদের।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy