Advertisement
E-Paper

বহু জায়গায় আপাতত বন্ধই দ্বিতীয় ডোজ, দিনভর বিভ্রান্তি

দ্বিতীয় ডোজের সময়সীমা বাড়ায় মজুত ভ্যাকসিন দিয়ে নতুন করে প্রথম ডোজ শুরুর কথা বলা হচ্ছে অনেক জায়গায়।

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ১৬ মে ২০২১ ০৬:৫৪
স্থগিত: বারাসত হাসপাতালে শনিবার ঝুলল এই নোটিস।

স্থগিত: বারাসত হাসপাতালে শনিবার ঝুলল এই নোটিস। নিজস্ব চিত্র।

করোনা টিকা কোভিশিল্ডের ক্ষেত্রে সম্প্রতি দ্বিতীয় ডোজ নেওয়ার সময়সীমা বাড়িয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। প্রাথমিক ভাবে প্রথম ডোজ নেওয়ার ২৮ দিন পরে দ্বিতীয় ডোজ নেওয়ার কথা বলা হয়েছিল। পরবর্তীকালে তা বাড়িয়ে ৬-৮ সপ্তাহ করা হয়। তবে নতুন নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, প্রথম ডোজ নেওয়ার ১২-১৬ সপ্তাহ পরে দ্বিতীয় ডোজ নিতে হবে। দুই জেলার বিভিন্ন হাসপাতালগুলিতে গত কয়েক দিন ধরে দ্বিতীয় ডোজ দেওয়ার উপরেই জোর দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু সময়সীমা বাড়ায় শনিবার থেকে অনেক জায়গাতেই দ্বিতীয় ডোজের টিকাকরণ বন্ধ রাখা হয়েছে। এর জেরে টিকা নিতে হাসপাতালে এসে ফিরে যেতে হয় অনেককে। কোথাও কোথাও উত্তেজনাও ছড়ায়। বারবার নিয়ম বদলে আশঙ্কা ও বিভ্রান্তিও ছড়িয়েছে অনেকের মধ্যে।

টিকা দেওয়া বন্ধ শুনে এ দিন উত্তেজনা ছড়ায় বসিরহাট সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে। এ দিন যাঁদের টিকার দ্বিতীয় ডোজ নেওয়ার কথা ছিল, তাঁদের একাংশ সকালেই হাসপাতাল চত্বরে লাইন দেন। তবে বেলা বাড়লেও টিকা দেওয়ার কাজ শুরু হয়নি। পরে হাসপাতালের তরফে জানানো হয়, দ্বিতীয় ডোজের সময়সীমা বাড়ায় টিকাকরণ বন্ধ রাখা হয়েছে। প্রথম ডোজ নেওয়ার ৮৪ দিন পরে হাসপাতালে আসতে বলা হয়। এতেই ক্ষোভ ছড়ায় লাইনে দাঁড়ানো মানুষদের মধ্যে। তাঁদের দাবি, টিকা যে দেওয়া হবে না, তা সকাল থেকে জানিয়ে দেওয়া হলে দীর্ঘক্ষণ লাইনে দাঁড়াতে হত না। টিকা না পেয়ে অনেকেই ফিরে যান। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ অবশ্য জানান, সরকারি পোর্টালে লগ ইন চালু থাকায় এ দিন কয়েকজনকে দ্বিতীয় ডোজ দেওয়া হয়েছে।

বনগাঁ মহকুমা হাসপাতাল থেকেও এ দিন টিকা দেওয়া বন্ধ ছিল। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানানো হয়েছে, এখানে প্রথম ডোজ নেওয়ার পরে কারও এখনও ১২ সপ্তাহ হয়নি। নতুন নির্দেশিকা মেনে তাই আপাতত টিককারণ বন্ধ রাখা হচ্ছে। হাসপাতালের সুপার শঙ্করপ্রসাদ মাহাতো বলেন, “শনিবার টিকাকরণ বন্ধ ছিল। প্রথম ডোজ নেওয়ার পরে কারও ১২ সপ্তাহ হয়নি।” টিকা না দেওয়ার কথা আগে থেকে জানিয়ে দেওয়ায় এ দিন অবশ্য খুব বেশি মানুষ হাসপাতালে আসেননি। কয়েকজন এসে ফিরে যান। টিকা দেওয়া হবে না জেনে বাড়ি ফেরার পথে এক বৃদ্ধ বলেন, “সংক্রমণের মধ্যে বিপদের ঝুঁকি নিয়ে হাসপাতালে এসেছিলাম। কবে দ্বিতীয় ডোজ পাব জানি না। কখন যে কী নিয়ম হচ্ছে বোঝা মুশকিল।”

বারাসত জেলা হাসপাতালেও এ দিন টিকাকরণ হয়নি। কয়েক দিন ধরে এখানে দ্বিতীয় ডোজ দেওয়া হচ্ছিল। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, প্রথম ডোজ নেওয়ার পর ১২ সপ্তাহ না হলে দ্বিতীয় ডোজ দেওয়া যাবে না। সে কারণে এ দিন টিকা দেওয়া হয়নি। বনগাঁ মহকুমায় এ দিন পরিবহণ কর্মীদের প্রথম ডোজ দেওয়ার কাজ শুরু হয়েছে। হিঙ্গলগঞ্জ ব্লক হাসপাতালেও এ দিন অনেকে কোভিশিল্ডের দ্বিতীয় ডোজ নিতে এসে ফিরে যান। তবে কোভ্যাকসিনের দ্বিতীয় ডোজ এ দিন দেওয়া হয়।

দ্বিতীয় ডোজের সময়সীমা বাড়ায় যাঁরা ইতিমধ্যে ৬-৮ সপ্তাহের ব্যবধানে দ্বিতীয় ডোজ নিয়েছেন, তাঁদের কী হবে, সেই প্রশ্ন উঠছে। হিঙ্গলগঞ্জের বাসিন্দা সুশান্ত ঘোষ বলেন, “সময় বাড়লে যদি বেশি ভাল হয়, তা হলে যাঁরা এত দিন কম সময়ের ব্যবধানে নিয়েছেন তাঁদের কী হবে?”

দক্ষিণ ২৪ পরগনার ক্যানিং, বাসন্তী ও গোসাবায় অবশ্য এ দিন অনেককেই দ্বিতীয় ডোজ দেওয়া হয়েছে। হাসপাতাল সূত্রের খবর, পুরনো নির্দেশিকা অনুযায়ী এখনও পোর্টালে দ্বিতীয় ডোজের অন্তর্ভুক্তি হচ্ছে। তাই এখনও নতুন নিয়ম কার্যকরী হয়নি। তবে প্রথম ডোজের ৪২ দিন পরেই দ্বিতীয় ডোজ দেওয়া হচ্ছে। সোমবার থেকে নতুন নির্দেশিকা মেনে কাজ হবে বলে হাসপাতাল সূত্রের খবর। ডায়মন্ড হারবার মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল থেকেও এ দিন ৩৩৯ জনকে দ্বিতীয় ডোজের টিকা দেওয়া হয়েছে।

গত কয়েক দিন ভ্যাকসিনের সরবরাহ কম থাকায় শুধুমাত্র দ্বিতীয় ডোজই দেওয়া হচ্ছিল। কিন্তু দ্বিতীয় ডোজের সময়সীমা বাড়ায় মজুত ভ্যাকসিন দিয়ে নতুন করে প্রথম ডোজ শুরুর কথা বলা হচ্ছে অনেক জায়গায়। জেলা স্বাস্থ্য দফতরের এক কর্তা বলেন, “নতুন নির্দেশিকা অনুযায়ী দ্বিতীয় ডোজ ভ্যাকসিন দেওয়ার ক্ষেত্রে সময়সীমা অনেকটা বেড়ে গিয়েছে। সে কারণে প্রথম ডোজ ভ্যাকসিন দেওয়ার কথা বলা হচ্ছে। আপাতত দ্বিতীয় ডোজ ভ্যাকসিন দেওয়ার পাশাপাশি প্রথম ডোজ ভ্যাকসিন দেওয়া শুরু হবে।” তবে অধিকাংশ হাসপাতালেই পর্যাপ্ত ভ্যাকসিন নেই। ফলে প্রথম ডোজ শুরু করা নিয়ে চিন্তা রয়েছে কর্তৃপক্ষের।

COVID-19 coronavirus
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy