Advertisement
E-Paper

ঘাসের চাষে মুঠোয় লক্ষ্মী

পয়সা দিয়ে কিনতে হত না, তাই কদর ছিল না তার। সেই দুর্বা ঘাসই এখন হাসি ফোটাচ্ছে চাষির। বাণিজ্যিক ভাবে অর্থকরী ফুলের পাশেই স্থান পেয়েছে দুর্বা। কারণ, পুজো-পার্বণ থেকে বিয়ে কিংবা আশীর্বাদ, দুর্বা না হলে শুভ কাজ হয় না। অথচ, শহর-মফস্‌সলে হারিয়েছে মাঠ। মিলছে না দুর্বা।

অরুণাক্ষ ভট্টাচার্য

শেষ আপডেট: ২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০১:২২
চলছে দুর্বা ঘাসের পরিচর্যা। ছবি: সজলকুমার চট্টোপাধ্যায়

চলছে দুর্বা ঘাসের পরিচর্যা। ছবি: সজলকুমার চট্টোপাধ্যায়

পুজোর মুখে চাষির মুখে হাসি ফোটাচ্ছে দুর্বা ঘাসের চাষ।

পয়সা দিয়ে কিনতে হত না, তাই কদর ছিল না তার। সেই দুর্বা ঘাসই এখন হাসি ফোটাচ্ছে চাষির। বাণিজ্যিক ভাবে অর্থকরী ফুলের পাশেই স্থান পেয়েছে দুর্বা। কারণ, পুজো-পার্বণ থেকে বিয়ে কিংবা আশীর্বাদ, দুর্বা না হলে শুভ কাজ হয় না। অথচ, শহর-মফস্‌সলে হারিয়েছে মাঠ। মিলছে না দুর্বা। চাহিদা এতটাই যে, এখন জমিতে চাষ হচ্ছে দুর্বার। পুজোর মুখে তা ফলিয়ে লাভের মুখ দেখছেন অনেক কৃষক।

বিকল্প অর্থকরী ফসলের চাষ নিয়ে কৃষকদের বরাবরই উৎসাহিত করেছে রাজ্য। মুখ্যমন্ত্রীর কৃষি উপদেষ্টা প্রদীপ মজুমদার বলেন, ‘‘পুজোর মুখে দুর্বা চাষিদের কাছে আশীর্বাদ হয়ে উঠেছে।’’ উত্তর ২৪ পরগনার বহু এলাকায় এখন দুর্বার চাষ হচ্ছে। দেগঙ্গার চাঁপাতলা পঞ্চায়েতের জুয়ারিয়ায় গাঁদার মতো ফুলের পাশাপাশি দুর্বার চাষ হচ্ছে। জমিতে প্লাস্টিক বিছিয়ে ঝুরো মাটিতে ঘাসের গোড়া বসিয়ে পরিচর্যা করতেই দুর্বায় ভরে যাচ্ছে জমি। জুয়ারিয়ার চাষি বিশ্বজিৎ মণ্ডল বলেন, ‘‘কলকাতার বাজারে দাম না পেয়ে গাঁদা ফেলে আসতে হয়েছে। এখন ফুল চাষে ক্ষতির আশঙ্কা বেশি। দুর্বায় সেই ঝুঁকি নেই।’’ ঠাকুরনগরের ফুল চাষিরা জানালেন, এক কাঠা জমি থেকে বছরে আয় ছ’-সাত হাজার টাকা।

চাষিরা জানান, কলকাতা-সহ রাজ্যের বিভিন্ন শহরে দুর্বার চাহিদা বাড়ছে। গৃহস্থের বাড়িতে দৈনিক পূজা-অর্চনার পাশাপাশি দুর্গা, লক্ষ্মী ও কালীপুজোর মতো উৎসবেও দুর্বা অপরিহার্য। ঠাকুরনগর থেকে প্রতি দিন দমদমে ফুল বিক্রি করতে আসেন শিবানী রায়। তিনি বলেন, ‘‘ফুল-বেলপাতা-দুর্বা মিলিয়ে ১০ টাকার কিনলে সেখানে এক গোছা দুর্বার দাম দু’-তিন টাকার মতো পড়ে। এখন আর মাঠে ঘাটে মেলে না। তাই ফুলের বাজার থেকে কিনে আনি।’’ শুধু দমদম স্টেশন সংলগ্ন এলাকা ঘুরেই দেখা গেল, শিবানীদেবীর মতো ফুল-দুর্বা বিক্রি করছেন শ’খানেক মহিলা।

চাহিদার সেই বাজারটাই ধরেছেন চাষিরা। দেগঙ্গা, বনগাঁ, ঠাকুরনগরে গিয়ে সবুজ খেত দেখে মনে হবে, ধান চাষ হচ্ছে। ভিতরে গেলে দেখা যাবে, দু্র্বা বুনছেন মহিলারা। তাঁরা জানান, রামায়ণে রয়েছে, সত্য সাক্ষী দেওয়ায় সীতার আশীর্বাদে নাকি কখনও নষ্ট হবে না দুর্বা। ওই মহিলাদের কথায়, ‘‘এখন আসল দুর্বা চাষ করে সংসার চলছে। এক বার জমিতে বসালেই হল। সত্যিই নষ্ট হয় না।’’

Durba Ghas Profit দুর্বা ঘাস
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy