Advertisement
E-Paper

মেয়েদের স্কুল বাড়ানোর দাবি

রায়দিঘির নগেন্দ্রপুর গ্রামের ছাত্রীদের পড়তে যেতে হয় হয় প্রায় সাত কিলোমিটার দূরে কনকনদিঘি সন্তোষ ঘড়ুই বালিকা বিদ্যালয়ে। যেতে সময় লাগে প্রায় এক ঘণ্টা। আসতে যেতে এত সময় লাগে যে দিনের শেষে বাড়ি ফিরে ক্লান্ত শরীরেই পড়তে বসতে হয়।

দিলীপ নস্কর

শেষ আপডেট: ২৩ মার্চ ২০১৬ ০২:৩৬

রায়দিঘির নগেন্দ্রপুর গ্রামের ছাত্রীদের পড়তে যেতে হয় হয় প্রায় সাত কিলোমিটার দূরে কনকনদিঘি সন্তোষ ঘড়ুই বালিকা বিদ্যালয়ে। যেতে সময় লাগে প্রায় এক ঘণ্টা। আসতে যেতে এত সময় লাগে যে দিনের শেষে বাড়ি ফিরে ক্লান্ত শরীরেই পড়তে বসতে হয়। কিন্তু কিছু করার নেই। শুধু নগেন্দ্রপুর গ্রাম নয়, ডায়মন্ড হারবার মহকুমায় ৯টি ব্লকে অধিকাংশ পঞ্চায়েতে এখনও মেয়েদের স্কুল নেই। ফলে যে পরিবার চায় মেয়েদের স্কুলে ভর্তি করা হবে পড়ুয়াটিকে, তাদের যেতে হয় অনেক দূরের পথ।

স্কুলে ছাত্রীর সংখ্যা বাড়ছে। তা মাধ্যমিক বা উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার্থীর পরিসংখ্যান দেখলেই বোঝা যায়। কিন্তু এই এলাকায় মেয়েদের আলাদা কোনও স্কুল নেই। মহকুমায় ৯টি ব্লকের মধ্যে রয়েছে ডায়মন্ড হারবার ১ ও ২, মথুরাপুর ১ ও ২, মগরাহাট ১ ও ২, ফলতা, কুলপি ও মন্দিরবাজার। ডায়মন্ড হারবার ১ ব্লকে ৮টি পঞ্চায়েতে মেয়েদের স্কুল বলতে হরিণডাঙা পঞ্চায়েতে ডায়মন্ড হারবার বালিকা বিদ্যালয় ও মশাট পঞ্চায়েতে মশাট গালর্স স্কুল। ডায়মন্ড হারবার ২ ব্লকে ৮টি পঞ্চায়েতের মধ্যে মাথুর পঞ্চায়েতে মাথুর গার্লস ও সরিষা পঞ্চায়েতে রামকৃষ্ণ মিশন সারদা বিদ্যামন্দির। বাকি ব্লকগুলিতেও একই পরিস্থিতি। কোথাও তিন কিলোমিটার, আবার কোথাও ৫ কিলোমিটার রাস্তা পার হয়ে ছাত্রীদের স্কুলে পৌঁছতে হয়। স্কুলে যাওয়ার পথেই গত বছর এক মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীকে অপহরণ করা হয়েছিল। পরে পুলিশ তাকে উদ্ধার করে।

বহু ছাত্রীর পরিবারের বক্তব্য, গ্রামের রক্ষণশালী পরিবারের বহু মেয়েই ছেলেদেরে সঙ্গে একই স্কুলে প়ড়াশোনায় ততটা স্বচ্ছন্দ নয়। ছাত্রদের অনেকের কটূক্তি তাদের মুখ বুজে হজম করতে হয়। শৌচাগারে ছেলেদের উঁকিঝুঁকিও বিরল ঘটনা নয়। বহু স্কুলে উন্নত পরিকাঠামো না থাকায় ছাত্রছাত্রীদের গাদাগাদি করে বসতে হয়। ছেলেমেয়েদের মধ্যে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে ওঠে স্কুলে, এই ঘটনাও ঘটে। যে কথা উড়িয়ে দিচ্ছে না শিক্ষকদের অনেকেই।

রায়দিঘির কৌতলা পঞ্চায়েতে একটি গার্লস স্কুলের অনুমোদনের দাবি নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা দফতরে আবেদন করেছিলেন ওই এলাকারই বাসিন্দা সনাতন মণ্ডল ও স্কুল শিক্ষক চন্দন হালদার। তিনি বলেন, ‘‘আমরা ২০১৫ সালে আবেদনপত্র পাঠিয়েছিলাম। সেখান থেকে রাজ্যের মুখ্য সচিবকে বিষয়টি দেখতে বলা হয়েছিল। তার কপি পাওয়ার পর সচিবের সঙ্গে দেখা করি। সেখান থেকে জানানো হয়, এলাকার সাংসদ সুপারিশ করলে তবেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’ নতুন গালর্স স্কুল নির্মাণের জন্য ব্লক প্রশাসন থেকে শুরু করে জেলা প্রশাসনকে আবেদন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি। মগরাহাট ২ বিডিও খোকনচন্দ্র বালা বলেন, ‘‘এলাকায় গার্লস স্কুলের দাবি আছে। দু’বার আবেদন করেছি জেলায়।’’

মেয়েদের কো-এড স্কুলে পড়াশোনা চালানোর জন্য কোনও সমস্যা হতে পারে, তা মানছেন না শিক্ষা দফতরের আধিকারিকদের অনেকেই। স্কুল শিক্ষা দফতরের এক আধিকারিক জানান, প্রশাসনের বিভিন্ন স্তর হয়ে আমাদের কাছে আবেদন আসে। সে ক্ষেত্রে কোনও এলাকায় ছাত্রীর চাপ বেশি থাকলে মেয়েদের জন্য পৃথক স্কুল তৈরি করার চিন্তাভাবনা থাকে। তবে শহরাঞ্চলেই মেয়েদের স্কুলের সংখ্যা তুলনায় বেশি। গ্রামীণ এলাকায় মেয়েদের স্কুলের সংখ্যা তুলনায় কম। তবে এ জন্য রাজ্যের আলাদা কোনও শিক্ষা নীতি নেই বলেই জানান তিনি।

Girls School Demand
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy