নানা অভিযোগের ভিত্তিতে কাকদ্বীপের বিভিন্ন নার্সিংহোমের বিরুদ্ধে শীঘ্রই দ্বিতীয় দফার অভিযানে নামতে চলেছে জেলা স্বাস্থ্য দফতর।
সম্প্রতি একটি বৈঠকে ডেকে নার্সিংহোম মালিকদের জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, নিজেদের দ্রুত না শুধরালে বন্ধ করে দেওয়া হবে ব্যবসা। এই হুঁশিয়ারিতে কতটা কাজ হল, তা সরেজমিন দেখতে চায় স্বাস্থ্য দফতর।
কী কী ধরনের সমস্যা রয়েছে কাকদ্বীপের নার্সিংহোমগুলিতে?
স্বাস্থ্য দফতরের কর্তারা জানান, অগ্নি নির্বাপণ ব্যবস্থা অনেক জায়গায় নেই বা যতটুকু আছে, তা পর্যাপ্ত নয়। ডাক্তারকে কমিশন দিতে গিয়ে বাড়ানো হচ্ছে রোগীর বিল। অনেক ক্ষেত্রে বাড়তি টাকার বিলও দেওয়া হচ্ছে না। এ ছাড়াও লাইসেন্স বা পরিকাঠামো সংক্রান্ত আরও নানা অভিযোগ আছে।
ডায়মন্ড হারবার স্বাস্থ্য জেলার মধ্যেই পড়ে কাকদ্বীপ। মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সোমনাথ মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘অনেক নার্সিংহোমেরই কাগজপত্র ঠিক নেই। তা ছাড়া, অগ্নি নির্বাপণ ব্যবস্থা বদলাতে হবে। রোগীদের কাছ থেকে বাড়তি টাকা নেওয়া যাবে না। এ সব বন্ধ না করলে নার্সিংহোমগুলির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’
কিছু দিন আগেই অভিযান চালিয়ে নার্সিংহোমগুলির নানা রকমের ত্রুটি ধরা পড়ার পরে বেশ কয়েকটি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। কয়েকটির ওটিতে তালা লাগিয়ে দিয়েছিল স্বাস্থ্য দফতর। সেই অভিযানের পরে কয়েকটি নার্সিংহোম ত্রুটি শুধরে নিয়েছে। এ বার দ্বিতীয় দফার অভিযান শুরু করতে চায় স্বাস্থ্য দফতর।
কাকদ্বীপের মাদার্স নাসিংহোমকে বলা হয়েছে, ছাদের উপরে ৪০ হাজার লিটার জলের ট্যাঙ্ক বসাতে। ওই নার্সিংহোমের ম্যানেজার সুনীল খাঁড়া বলেন, ‘‘আমরা ২০১৮ পর্যন্ত দমকলের ছাড়পত্র নিয়েই চালাচ্ছি। এখন ৩ হাজার লিটারের ট্যাঙ্ক রয়েছে। সেটাকে শীঘ্রই বাড়িয়ে নেব।’’
লাইসেন্স পেয়েছে এ রকম অনেক নার্সিংহোমই ‘স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্প’ চালু করেনি। কেন? নার্সিংহোম মালিকদেরও নানা অসুবিধার জায়গা রয়েছে বলে দাবি করছেন তাঁরা। কাকদ্বীপের গোবিন্দরামপুরের নার্সিংহোম ‘নিউ লাইফ’-এর মালিক রাম দিন্দা জানান, তাঁদের ১০টি অনুমোদিত শয্যা রয়েছে। তার ভিত্তিতে স্বাস্থ্যসাথী চালানো সমস্যার। বাড়তি শয্যার জন্য আবেদন করা হবে।
ও দিকে, কাকদ্বীপের ৫০ শয্যার নার্সিংহোম ত্রিবেণী চ্যারিটেবল হাসপাতাল স্বাস্থ্যসাথী পেয়েছে, কিন্তু দু’মাস ধরে হাসপাতালই বন্ধ। ওই নার্সিংহোমের মালিক কুমারবাবু সরকার বলেন, ‘‘সমস্ত কাগজপত্র ঠিক রেখে নার্সিংহোম চালাচ্ছি। কিছু দিন আগে এক রোগী মারা যাওয়ার পরে পরিবার ঝামেলা করে। ক্ষতিপূরণ চেয়ে ভাঙচুর করতে আসে। তখন পুলিশ বা প্রশাসনের নিরাপত্তা পাইনি। দোষ থাকলে, তদন্তসাপেক্ষে ক্ষতিপূরণ নিশ্চয়ই দেবো। কিন্তু ভাঙচুর হলে চালাতে পারব না।’’ এই পরিস্থিতিতেই তিনি নার্সিংহোম বন্ধ রেখেছেন বলে জানালেন। পুলিশের দাবি, ঝামেলার সময়ে বাহিনী গিয়েছিল। কাকদ্বীপের বেশিরভাগ নার্সিংহোমে ২৪ ঘণ্টার মেডিক্যাল অফিসার থাকে না। প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত নার্স থাকে না। অনুমোদন ছাড়াই এক একটি ওষুধের দোকানে অনেক ডাক্তার বসে। এ সব বিষয়ই ফের নজরে এসেছে স্বাস্থ্যকর্তাদের। তাঁরা জানিয়েছেন, বর্তমান ক্লিনিক্যাল এস্টাব্লিসমেন্ট অ্যাক্ট অনুসারে স্বাস্থ্য পরিষেবা না দিলে নার্সিংহোম চালাতে দেওয়া যাবে না।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy