Advertisement
E-Paper

ফের জ্বরে মৃত্যু, আতঙ্ক

কয়েক দিনের ব্যবধানে ৬ জনের মৃত্যু হয়েছে জ্বরে ভুগে। সোমবার থেকে বুধবার পর্যন্ত একই পরিবারের দু’জনের মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৮ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০১:৪৯
শোকার্ত: ছবি: সজলকুমার চট্টোপাধ্যায়

শোকার্ত: ছবি: সজলকুমার চট্টোপাধ্যায়

জ্বরে ভুগে পর পর মৃত্যুর ঘটনা ঘটেই চলছে দেগঙ্গায়।

কয়েক দিনের ব্যবধানে ৬ জনের মৃত্যু হয়েছে জ্বরে ভুগে। সোমবার থেকে বুধবার পর্যন্ত একই পরিবারের দু’জনের মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। মাসখানেক ধরে চলতে থাকা জ্বরে প্রকোপ রুখতে স্বাস্থ্য দফতরের তেমন কোনও উদ্যোগ চোখে না পড়ায় ক্ষোভে ফুঁসছেন এলাকার মানুষ। কিছু ক্ষেত্রে অবশ্য হাসপাতাল থেকে মৃত্যুর কারণ ‘সেপ্টিসেমিয়া’ লেখা হয়েছে। তা নিয়েও ক্ষোভ আছে গ্রামের মানুষের। তাঁদের বক্তব্য, জ্বরে ভুগছিলেন সকলে। জ্বর কেন হচ্ছে, সেটা খুঁজে বের না করে মৃত্যুর অন্য কারণ দেখানো হচ্ছে।

বেড়াচাঁপা ২ পঞ্চায়েতের গিলেবাড়ি-দাসপাড়া ও চাঁদপুরে জ্বরের প্রকোপ ভয়াবহ আকার নিয়েছে। রবিবার সকালে বারাসত জেলা হাসপাতালে মৃত্যু হয় চাঁদপুরের হাফিজুল মণ্ডলের (২০)। গিলেবাড়িতে বাপের বাড়িতে বেড়াতে এসেছিলেন ঝর্না দাস (২৪)। তারপরেই জ্বরে পড়েন। সোমবার আরজিকর হাসপাতালে মারা যান তিনি। বুধবার রাতে ওই হাসপাতালেই ঝর্নাদেবীর এক আত্মীয় অমল দাসের (৩২) মৃত্যু হয়। এখনও গ্রামের বেশ কয়েকজনের চিকিৎসা চলছে বারাসত ও কলকাতার হাসপাতালে।

বৃহস্পতিবার সকালে গিলেবাড়ির গ্রামে গিয়ে দেখা দেল, ঘরে ঘরে জ্বর। মাথায় জল ঢেলে পাখার বাতাস চলছে। অসীম দাস সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসা নিয়ে ক্ষোভ উগড়ে দিয়ে বললেন, ‘‘রোগীকে হাঁটিয়ে নিয়ে গিয়ে সামান্য ওষুধ দিয়ে ছেড়ে দিচ্ছে। বাড়ি ফিরে ফের হাসপাতালে যেতে হচ্ছে। এতে রোগী আরও অসুস্থ হয়ে পড়ছে।’’ এমন অভিযোগ তুলছেন দেগঙ্গার গিলেবাড়ির দাসপাড়া ও চাঁদপুরের বাসিন্দারাও।

রাম দাস নামে এক বাসিন্দার অভিযোগ, ‘‘জ্বর ও মাথার যন্ত্রণা নিয়ে বারাসত জেলা হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলাম। ডাক্তার দেখে বললেন, ডেঙ্গি। আমাদের গ্রামের অমল জ্বর নিয়ে ভর্তি হয়েছিল। ওর রক্ত পরীক্ষার রিপোর্ট হাতে মেলেনি। অথচ মৃত্যু সার্টিফিকেটে সেপ্টিসেমিয়া বলে লেখা হয়েছে। আমরা জানতে চাই, আসলে এই জ্বরটা কী।’’

দেগঙ্গার চাকলা গ্রামের শেষ প্রান্তেই হাবরা থানার বহেড়াগাছি গ্রাম। সোমবার বহেড়াগাছি ইউনাইটেড ইন্সটিটিউশনের ছাত্র রাহুল দাস (১৪) জ্বরে আক্রান্ত হয়ে কলকাতার আরজিকর হাসপাতালে মারা যায়। ওই গ্রামে বৃহস্পতিবার আয়েশা বিবি (২৭) নামে আর এক মহিলা জ্বরে ভুগে মারা যান আরজিকর হাসপাতালেই। সেখানেও মৃত্যুর কারণ ‘সেপ্টিসেমিয়া’ বলে জানানো হয়েছে।

বারাসত হাসপাতালের সুপার সুব্রত মণ্ডল অবশ্য বলেন, ‘‘যে কারণে মৃত্যু হচ্ছে, তাই জানান হচ্ছে। অন্য কোনও কারণ লেখার সুযোগ নেই। প্রচুর রোগী জ্বর নিয়ে ভর্তি হচ্ছেন।’’

এ দিন স্কুলের ছাত্রছাত্রীদের নিয়ে ডেঙ্গির সচেতনতা গড়ে তুলতে ব্যবস্থা নেয় বহেড়াগাছি ইউনাইটেড ইন্সটিটিউশন। বৃহস্পতিবার দেগঙ্গার বেড়াচাঁপায় এসে বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন, ‘‘রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী সারা দেশে কী হচ্ছে তা নিয়ে ব্যস্ত। পশ্চিমবঙ্গ নিয়ে নয়। ডেঙ্গির কথা সরকার স্বীকার করছে না। চাপা দিয়ে চালাকি করছে।’’ কী কারণে দেগঙ্গার মানুষ মারা যাচ্ছেন, তা খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন দিলীপবাবু।

Fever Epidemic Deganga দেগঙ্গা
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy