Advertisement
E-Paper

মিলছে না ত্রিপল,ভাসছে মৌসুনি

কোটালের জলোচ্ছ্বাসে ফের ডুবল মৌসুনি দ্বীপ। বৃহস্পতিবার রাত থেকেই জল ঢুকতে শুরু করেছে ওই দ্বীপে। শুক্রবার সন্ধ্যা পর্যন্ত জল ঢুকেছে বলে খবর। মৌসুনি পঞ্চায়েতের তিনটি গ্রাম কমবেশি ক্ষতিগ্রস্ত।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৬ অগস্ট ২০১৬ ০১:১৯
কোটালের জলে ভাসছে দ্বীপ। নিজস্ব চিত্র।

কোটালের জলে ভাসছে দ্বীপ। নিজস্ব চিত্র।

কোটালের জলোচ্ছ্বাসে ফের ডুবল মৌসুনি দ্বীপ। বৃহস্পতিবার রাত থেকেই জল ঢুকতে শুরু করেছে ওই দ্বীপে। শুক্রবার সন্ধ্যা পর্যন্ত জল ঢুকেছে বলে খবর। মৌসুনি পঞ্চায়েতের তিনটি গ্রাম কমবেশি ক্ষতিগ্রস্ত। গ্রামবাসীদের অভিযোগ, এখনও শুরু হয়নি ত্রাণের কাজ। নেই পর্যাপ্ত ত্রিপল। স্বাস্থ্যকেন্দ্রে স্থায়ী চিকিৎসক নেই। শুক্রবার রাত পর্যন্ত এলাকায় যাননি কোনও জনপ্রতিনিধি বা প্রশাসনিক কর্তা। এর আগের দু’টি কোটালেও জল ঢুকেছিল মৌসুনি দ্বীপে। তবে এই অবস্থা আগে হয়নি।

কাকদ্বীপের মহকুমাশাসক রাহুল নাথ বলেন, ‘‘আমরা পর্যাপ্ত ত্রাণের ব্যবস্থা রেখেছি। যে রকম প্রয়োজন ত্রাণ বিলি করা হবে। ত্রাণ দফতরের কর্তারা ঘটনাস্থলে গিয়েছেন।’’

কুসুমতলা, বাগডাঙার এক কিলোমিটার এবং বালিয়াড়া দেড় কিলোমিটার নদী বাঁধ ভেঙে গিয়েছে। ব্যাহত হচ্ছে খেয়া পারাপার। তৃণমূল পরিচালিত মৌসুনি পঞ্চায়েতের প্রধান আদালত খাঁর ক্ষোভ, ‘মাত্র ১০০টি ত্রিপল দেওয়া হয়েছে। কী করব এই সামান্য ত্রাণ দিয়ে? ফ্লাড সেন্টারে কয়েক দিন না থাকলে খাবার দেওয়া যাবে না বলে ব্লক প্রশাসন থেকে জানানো হয়েছে।’’ তবে ত্রাণ বিলি নিয়ে ব্লক প্রশাসনের কেউ কথা বলতে চাননি।

ব্লক প্রশাসন এবং স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এ বারের কোটালের জলোচ্ছ্বাস এতটাই বেশি যে নদীবাঁধ না ভাঙলেও কিছু জায়গায় বাঁধ উপচে গিয়ে জল ঢুকেছে। মৌসুনিতে তিনটি ফ্লাড সেন্টার এবং পাঁচটি সাব সেন্টার রয়েছে। সেগুলিতে মোট ৬০টি পরিবার আশ্রয় নিয়েছে। কয়েকটি ঘরে এক কোমর জল ঢুকে গিয়েছে। সেখানে বাঁশের মাচা তৈরি করে বা চৌকির উপর চৌকি দিয়ে কাটাচ্ছেন মানুষ। বালিয়াড়া কিশোর হাইস্কুল এবং কয়েকটি এসএসকে বন্ধ রাখতে হয়েছে। বেশ কয়েক বিঘা জমির আমন ধান এবং সব্জি নষ্ট হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে মিঠে জলের ছোট ভেড়ি, পানের বরজ। নানা রোগের প্রকোপ শুরু বলেও স্থানীয় বাগডাঙা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে স্থায়ী কোনও চিকিৎসক থাকছেন না।

কিছু দিন আগেই সিপিএমের হাত থেকে মৌসুনি পঞ্চায়েতের দখল নিয়েছে তৃণমূল। ওই পঞ্চায়েতের প্রাক্তন প্রধান তথা বর্তমান বিরোধী দলনেতা শেখ ইলিয়াসের কটাক্ষ, ‘‘ক্লাবকে টাকা দেওয়া, স্কুলে জুতো দেওয়া, উৎসব করাই তৃণমূলের লক্ষ্য। স্থায়ী বাঁধ হয়ে গেলে মৌসুনির মানুষকে বার বার ডুবতে হত না।’’

স্থানীয় বিধায়ক বঙ্কিম হাজরা বলেন, ‘‘তিন দিন আগেও একটি বৈঠকে প্রশাসন এবং সেচ দফতরের কর্তারা ওই এলাকায় প্লাবন মোকাবিলা নিয়ে আশ্বস্ত করেছিলেন। কিন্তু এবার তো অবস্থা খুবই খারাপ হয়ে গেল।’’ অপর্যাপ্ত ত্রিপল বিলির প্রসঙ্গে বিধায়কের দাবি, ‘‘এ রকম কেন হচ্ছে জানি না। তবে আমাদের বলা রয়েছে, জরুরি ভিত্তিতে যদি ত্রিপল বিলির প্রয়োজন হয়, তবে সেটা করতে হবে। শুকনো খাবারও দিতে হবে।’’ যদিও প্রায় ২৪ ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও সরকারি ভাবে খাবা র আসেনি বলে অভিযোগ।

স্থানীয় বাসিন্দাদের বক্তব্য , প্রচুর টাকা খরচ করে বার বার বাঁধের কাজ হলেও সেটা ফলপ্রসূ হচ্ছে না। কারণ ঠিক জায়গায় কাজ হয়নি। প্রতি বার কোটালের আগে কাজ হয়। কিন্তু মাটি ধরে রাখার জন্য স্থায়ী। কোনও সমাধান হয়নি। যদিও সেচ দফতরের কর্তাদের পাল্টা দাবি, প্রবল জলোচ্ছ্বাসে সব রকম মেরামতির কাজ ব্যাহত হচ্ছে। স্থায়ী বাঁধ হবে। তবে বর্ষা না পেরোলে কাজ শুরু করা সম্ভব নয়।

Flood Rescue problem
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy