Advertisement
০৬ মে ২০২৪

মশারি থেকে সাইকেল, সাপ ঘুরে বেড়াচ্ছে সর্বত্র

সাইকেলের চাকার ফাঁকে ফণা তুলছে কালাচ। হা়ড়হিম করা এ সব দৃশ্য দেখে তো প্রাণবায়ু যায় যায় অবস্থা! সিনেমা নয়, বসিরহাটের কাঁকড়া-মির্জানগর গ্রামের শ্মশানঘাট এলাকায় সত্যি সত্যিই ঘটছে এরকম ঘটনা।

সাপ থেকে বাঁচতে বাঁশের মাচায় পাহারা। ছবি: নির্মল বসু।

সাপ থেকে বাঁচতে বাঁশের মাচায় পাহারা। ছবি: নির্মল বসু।

নিজস্ব সংবাদদাতা
বসিরহাট শেষ আপডেট: ০৪ জুলাই ২০১৬ ০২:১৬
Share: Save:

মশারির চালে উঁকি মারছে গোখরো।

বাঁশে দোল খাচ্ছে কেউটে।

সাইকেলের চাকার ফাঁকে ফণা তুলছে কালাচ।

হা়ড়হিম করা এ সব দৃশ্য দেখে তো প্রাণবায়ু যায় যায় অবস্থা! সিনেমা নয়, বসিরহাটের কাঁকড়া-মির্জানগর গ্রামের শ্মশানঘাট এলাকায় সত্যি সত্যিই ঘটছে এরকম ঘটনা। ওই এলাকায় চুরি ঠেকাতে একটি অস্থায়ী পুলিশ চৌকি রয়েছে। সেখানকার পুলিশ কর্মীদের কয়েক জন সাপের আতঙ্কে ডিউটিতে আসাই বন্ধ করে দিয়েছেন। ইতিমধ্যেই সর্পদষ্ট হয়েছেন দু’জন পুলিশ কর্মী।

জেলা পুলিশ প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, বছর কয়েক আগে বসিরহাট ২ ব্লকের কাঁকড়া-মির্জানগর পঞ্চায়েত এলাকায় শ্মশানঘাটের কালীমন্দিরে চুরি হয়। সেই সময়ে মন্দিরের সুরক্ষার দাবিতে পুলিশের পাহারার দাবি তুলেছিলেন স্থানীয় বাসিন্দারা। ক্ষোভ বাড়তে থাকে। ব্লক প্রশাসনের পক্ষ থেকে এলাকার নিরাপত্তার স্বার্থে পুলিশ ফাঁড়ির জন্য স্থায়ী ঘর করে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়। প্রাথমিক ভাবে এলাকায় পাহারা দেওয়ার জন্য কালীমন্দির চত্বরে পুলিশ কর্মীদের থাকার ব্যবস্থা করা হয়। কিন্তু মন্দির চত্বরে দিন কয়েক থাকার পরে সাপের উপস্থিতি টের পান কর্তব্যরত পুলিশ কর্মীরা। রাতে মশারির উপরে সাপ দেখা যায়।

পাহারারত এক পুলিশকর্মীর কথায়, ‘‘প্রথমে কয়েক সপ্তাহ ধরে আমরা মন্দিরের বারান্দায় মশারি টাঙিয়ে থাকতাম। এক দিন দেখি মশারির উপরে গোখরো সাপ ঘুরছে। ভয়ে প্রাণ যায় আর কী!’’ তার পর সাপ থেকে বাঁচতে মন্দির লাগোয়া জমিতে বাঁশ দিয়ে উচুঁ মাচা তৈরি করা হয়। বৃষ্টি ও রোদ থেকে বাঁচতে মাচার উপরে লাগানো হয় পলিথিন।

এলাকায় গিয়ে দেখা গিয়েছে, মন্দিরটি একটি মাঠের মধ্যে অবস্থিত। সেটি আশপাশের জনবসতি থেকে প্রায় আধ কিলোমিটার দূরে। মন্দিরের পাশে বাঁশের মাচার নীচে রাখা রয়েছে সাইকেল। জনা কয়েক সিভিক ভলান্টিয়ার এবং পুলিশ কর্মী মাচায় বসে রয়েছেন। তাঁদের ক্ষোভ, ‘‘এখানে সাপের উৎপাত বেশি। একটু অসাবধান হলেই ছোবল খেতে হবে। তাই আমরা সাইকেল ব্যবহার করি। কিন্তু সেখানেও বিপদ। দিন কয়েক আগে দেখি সাইকেলের রিং জড়িয়ে রয়েছে কালাচ সাপ।’’

জেলা পুলিশের এক কর্তা বলেন, ‘‘মন্দিরে চুরির পরে ওই এলাকায় পুলিশ পাহারা রাখতে হচ্ছে। কিন্তু ওখানে এখন স্থায়ী পুলিশ চৌকি তৈরির পরিকাঠামো নেই।’’ তিনি জানান, আপাতত অস্থায়ী ব্যবস্থা হিসেবে ঘাস মারার ওষুধ এবং কার্বলিক অ্যাসিড ছড়ানো হয়েছে। পাহারারত পুলিশ কর্মীদের গামবুট দেওয়ার এবং মন্দির সংলগ্ন রাস্তায় আলো লাগানোর পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।

আপাতত সেই ভরসাতেই সামনে তাকাচ্ছেন পুলিশ কর্মীরা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

snake Mosquito net
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE