Advertisement
E-Paper

সেতু দেখে মনে পড়ল ছেলেবেলা

মাঝ গঙ্গায় বিলাসবহুল স্টিমারের চালকের ঘরের মাথায় আচমকাই মই বেয়ে উঠে পড়লেন গায়ক তথা কেন্দ্রীয়মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়। নিজের মোবাইল ক্যামেরাতেই ছবি তুলতে শুরু করলেন ১৫৪ বছরের পুরনো জুবিলি সেতুর।

বিতান ভট্টাচার্য

শেষ আপডেট: ১১ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০১:৫৪
পুরানো সেই দিনের কথা। —নিজস্ব চিত্র।

পুরানো সেই দিনের কথা। —নিজস্ব চিত্র।

মাঝ গঙ্গায় বিলাসবহুল স্টিমারের চালকের ঘরের মাথায় আচমকাই মই বেয়ে উঠে পড়লেন গায়ক তথা কেন্দ্রীয়মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়। নিজের মোবাইল ক্যামেরাতেই ছবি তুলতে শুরু করলেন ১৫৪ বছরের পুরনো জুবিলি সেতুর।

শুক্রবার দুপুরেই উদ্বোধন হয়েছে গরিফা ও হুগলি ঘাটের মধ্যে সংযোগকারী ৪১৫ মিটারের নতুন সম্প্রীতি সেতু। তার পাশেই পুরনো জুবিলি সেতুটি এখনও প্রাচীন নস্টালজিয়া বহন করে চলেছে। ‘হেরিটেজ’ হিসেবে চিহ্নিত এই সেতুটি সম্প্রতি ভেঙে ফেলার কথা বলেছেন ইঞ্জিনিয়ারেরা। যদিও রেল দফতর সেতুটি ভাঙতে চায় না। মন্ত্রী নিজেও এই জুবিলি ব্রিজ নিয়ে স্মৃতিকাতর, জানালেন নিজেই। অনুষ্ঠানের মধ্যেই মাইক্রোফোন হাতে বললেন, ‘‘আমার ছোটবেলার কত স্মৃতি রয়েছে এই সেতুটি নিয়ে। পায়ে হেঁটে সেতু পার হওয়া বেআইনি। তবু কখনও-সখনও তা-ও করেছি!’’

গঙ্গার এক দিকে চুঁচুড়ার ইমামবাড়া। অন্য দিকে, নৈহাটিতে পৃথিবীর সব থেকে বড় চটকল হুকুমচাঁদ জুটমিল। আছে ব্যান্ডেল চার্চ। হালিশহরে রামপ্রসাদের ভিটে। গঙ্গার দু’পারের এই পুরনো ঐতিহ্য নিয়েই পর্যটনকেন্দ্র গড়ে তোলার পরিকল্পনার কথা জানান মন্ত্রী। লঞ্চের খোলা ডেকে দাঁড়িয়ে বাবুল বলেন, ‘‘গঙ্গার দু’ধারে শিল্পতালুকের পাশাপাশি ইতিহাসের অনেক স্মৃতি, সম্পদ রয়েছে। যেগুলি ঠিক ভাবে রক্ষণাবেক্ষণ করে সকলের সামনে তুলে ধরা যায়।’’ মন্ত্রিসভায় সে নিয়ে আলোচনা করার কথাও জানিয়েছেন বাবুল।

জুবিলি ব্রিজের মাথায় জাতীয় পতাকা উড়তে দেখে রেলকর্তাদের প্রশ্ন করেন, ‘‘সব সময়ে কি জাতীয় পতাকা ওড়ে?’’ সম্মতিসূচক উত্তর পেয়ে বাবুল স্বগতোক্তির ঢঙে বলেন, ‘‘এ তো জীবন্ত ইতিহাস! পরের প্রজন্মের কাছে এগুলি থাকবে না?’’

জুবিলি সেতু নিয়ে মন্ত্রীর আবেগ ও গঙ্গার দু’পারের শিল্পাঞ্চলের পর্যটন কেন্দ্র করার পরিকল্পনা নিয়ে বাসিন্দারা রীতিমতো উৎসাহী। নৈহাটির সন্দীপ চক্রবর্তী বলেন, ‘‘রামকমল সেনের বংশধর বলরাম সেন জুবিলি ব্রিজ তৈরির সময়ে সার্ভেয়ার ছিলেন। এত বছর পরে সেই জুবিলি ব্রিজ রক্ষা এব‌ং পর্যটনকেন্দ্র করা হবে শুনে বেশ ভাল লাগল।’’ মন্ত্রীর জল-সফর দেখেছেন বড়িশা থেকে হুগলি হাট যাওয়া লোকাল ট্রেনের যাত্রীরাও। তাঁদেরই একজন অনিমেষ রায় বলেন, ‘‘আমি চুঁচুড়ায় থাকি। গঙ্গার দু’পারে পর্যটনকেন্দ্র গড়া নিয়ে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী যে ভাবছেন, এটি অত্যন্ত আনন্দের। একই সঙ্গে গর্বেরও। বাবুল নিজেও তো আমাদের জেলারই বাসিন্দা।’’

প্রত্যেক দিন বহু মানুষ ওই সম্প্রীতি সেতু পেরিয়ে যাতায়াত করেন। এত বছর পর্যন্ত ওই জুবিলি ব্রিজ দিয়েই সমস্ত ট্রেন চলাচল করত। গত ১৭ এপ্রিল থেকে সম্প্রীতি সেতু চালু হওয়ার পরে জুবিলি ব্রিজে ট্রেন চলাচল বন্ধ। কিন্তু সেতুটি থাকুক, চান নিত্যযাত্রীরাও। নৈহাটি-ব্যান্ডেল শাখার নিয়মিত যাত্রী দেবপ্রসাদ গোস্বামী, কৌশানী ভৌমিকরা বলেন, ‘‘জুবিলি সেতু রক্ষণাবেক্ষণ নিয়ে মন্ত্রী যে ভাবছেন এটাই আশার কথা।’’

Bridge Babul supriyo Jubilee Bridge
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy