Advertisement
E-Paper

বিদেশি ফুটবলার টানতে টাকা উড়ছে কাকদ্বীপে

কেউ নিচ্ছেন ম্যাচ প্রতি ৫ হাজার, কেউ আবার ২৫ হাজার! সেই টাকা দিয়েই তাঁদের ‘ভাড়া’ করছেন গ্রামীণ ক্লাবের কর্তারা। নাইজেরিয়া, লাইবেরিয়া, ঘানা-সহ আফ্রিকা মহাদেশের বিভিন্ন দেশের ফুটবলার এনে তৈরি হচ্ছে দল। লক্ষ্য যেনতেন প্রকারে চ্যাম্পিয়ন হওয়া। বিদেশি খেলোয়াড়দের দেখতে ভিড় উপচে পড়ছে মাঠে।

শান্তশ্রী মজুমদার

শেষ আপডেট: ২২ মার্চ ২০১৭ ০১:৩৩
জাদু: বিদেশি খেলোয়াড় টানছে দর্শক। নিজস্ব চিত্র

জাদু: বিদেশি খেলোয়াড় টানছে দর্শক। নিজস্ব চিত্র

কেউ নিচ্ছেন ম্যাচ প্রতি ৫ হাজার, কেউ আবার ২৫ হাজার!

সেই টাকা দিয়েই তাঁদের ‘ভাড়া’ করছেন গ্রামীণ ক্লাবের কর্তারা। নাইজেরিয়া, লাইবেরিয়া, ঘানা-সহ আফ্রিকা মহাদেশের বিভিন্ন দেশের ফুটবলার এনে তৈরি হচ্ছে দল। লক্ষ্য যেনতেন প্রকারে চ্যাম্পিয়ন হওয়া। বিদেশি খেলোয়াড়দের দেখতে ভিড় উপচে পড়ছে মাঠে।

কলকাতা ময়দানে বিদেশি ফুটবলার খেলানোর রেওয়াজ নতুন নয়। আশির দশক থেকেই গড়ের মাঠ কাঁপিয়েছেন বহু বিদেশি। এখন কলকাতা লিগের নীচের দিকের দলগুলিতেও দু’তিনজন বিদেশি থাকে। সেই রেওয়াজ প্রবেশ করেছে জেলার ক্লাবগুলিতে। বিভিন্ন নকআউট প্রতিযোগিতায় তারা মোটা অঙ্কের টাকা দিয়ে বিদেশি নিয়ে আসছে। উপকূল এলাকা বলে পরিচিত কাকদ্বীপও এখন সেই হাওয়া বইছে। কোনও দলের হয়ে এক জন, কোনও দলের হয়ে একাধিক বিদেশি মাঠে নামছেন।

সম্প্রতি কাকদ্বীপের বিভিন্ন ফুটবল প্রতিযোগিতায় দেখা গিয়েছে বিদেশিদের প্লেয়ারদের রমরমা। কাকদ্বীপ স্পোর্টস অ্যাসোসিয়েশনের কর্তা দেবব্রত মহাপাত্র বলেন, ‘‘আগের চেয়ে এখন মাঠে বেশি দর্শক আসছেন। কারণ বিদেশি ফুটবলারদের উপস্থিতি।’’ গত রবিবারই সাগরের কোম্পানিছার গ্রামে একটি ফুটবল প্রতিযোগিতা শেষ হয়েছে। সেখানকার আয়োজক ক্লাবের সম্পাদক বুদ্ধদেব গাউনিয়ার মতে, বিদেশি ফুটবলারদের খেলার কৌশল দেখতেই মাঠে দর্শক আসছে।

কাকদ্বীপের কয়েকজন ফুটবল সংগঠকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গিয়েছে, কলকাতার মাঠে খেলা স্থানীয় কয়েকজন প্রাক্তন ফুটবলারই মূলত বিদেশিদের নিয়ে আসার কাজ করেন। কখনও কখনও কলকাতার এজেন্টদের মাধ্যমেও বিদেশিদের আনা হয়। ফুটবলের ভাষায় এই বিদেশিদের বলা হয় ‘খেপ খেলোয়াড়’। সাধারণত এঁদের নির্দিষ্ট কোনও দল থাকে না। ম্যাচ পিছু টাকাতেই বিভিন্ন এলাকায় খেলেন তাঁরা। তবে কলকাতা লিগে খেলা বিদেশিরাও নাম বদলে গ্রামের মাঠে খেলতে আসেন। সাধারণত ‘খেপ’ খেলতে আসা বিদেশিরা টিম লিস্টে নিজেদের পদবি ব্যবহার করেন না। পুরো নাম ব্যবহার করলে কলকাতা লিগের কোনও ম্যাচে খেলতে আইনি সমস্যা হতে পারে। কারণ, কলকাতা লিগে খেলতে গেলে ‘খেপ’ খেলা মানা।

কলকাতার বাসিন্দা মহম্মদ আব্বাস আলি বিদেশি ফুটবলারদের এজেন্টের কাজ করেন। তিনি বলেন, ‘‘কোনও প্রশিক্ষণের জন্য অথবা চাকরি নিয়ে কলকাতায় এসে অবসর সময়ে খেপ খেলছে অনেকে। তাঁদের মধ্যে কয়েকজন পেশাদার ফুটবলার রয়েছেন।’’ টিম লিস্টে বিদেশি ফুটবলার না থাকলে ক্লাবের মান থাকছে না। তাই বেড়েছে খরচ। কাকদ্বীপের পূর্বাশা ক্লাবের সম্পাদক অঙ্কুর দাস, ‘‘এ বছর বিধান ময়দানের খেলায় আমাদের দলে বিদেশিদের পিছনে তিন লক্ষ টাকার বেশি খরচ হয়েছে।’’ কমবেশি একই হিসেব দিয়েছে কাকদ্বীপের আরও কয়েকটি ক্লাব।

মাঠে দর্শক আসছে। একটি ম্যাচের জন্য দল করতেই উড়ছে লক্ষ লক্ষ টাকা। কিন্তু ভাল মানের ফুটবল দেখা যাচ্ছে কী?

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কাকদ্বীপের এক ফুটবল সংগঠকের স্বীকারোক্তি, ‘‘এমন অনেক বিদেশি ফুটবলার গ্রামের মাঠে খেলতে আসেন যাঁদের খেলার মান গ্রামের ফুটবলারদের থেকে খারাপ। কিন্তু স্থানীয় বাসিন্দাদের চাহিদা মেটাতেই তাঁদের ভাড়া করতে হচ্ছে। দর্শক অনেক আশা নিয়ে আসছে। কিন্তু বেশির ভাগ সময়েই বাড়ি ফিরছে হতাশা নিয়ে।’’

Kakdwip
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy