দেড় বছরে মেলেনি ন্যূনতম পরিকাঠামোটুকু। নানা সমস্যায় জর্জরিত কাকদ্বীপের সরকারচক হাইস্কুলে উঁচু ক্লাসের পড়াশোনা চালানোই দায় হয়ে উঠেছে। অভিভাবকদের ক্ষোভ জমছে। পড়ুয়ারাও অসন্তুষ্ট। পরিকাঠামো না থাকায় পড়ুয়াদের কাছ থেকে মাইনে নেওয়াও বন্ধ করে দিয়েছে স্কুল।
গত বছরের গোড়ার দিকে অষ্টম শ্রেণি থেকে দ্বাদশ শ্রেণিতে উন্নীত হয়েছিল কাকদ্বীপ মধুসূদনপুরের সরকারচক হাইস্কুল। কিন্তু তারপর থেকে না হয়েছে বাড়তি শিক্ষক নিয়োগ, না বেড়েছে ক্লাসঘর। এখন বাধ্য হয়েই প্রতিটি ক্লাসেই প্লাইউডের পার্টিশন দিয়ে ছাত্রছাত্রীদের ক্লাস করাতে বাধ্য হচ্ছেন মাস্টারমশাইরা। দরজা নেই, মেয়েদের জন্য শৌচাগার নেই। সব মিলিয়ে বিপাকে পড়েছে শ’তিনেক পড়ুয়া।
স্কুলের দশম শ্রেণির পড়ুয়া পূজা অধিকারী জানায়, অনেক ক্লাসই হয় না রোজ। জানুয়ারি থেকে চার মাস চলে গিয়েছে, সে ভাবে ইংরেজি গ্রামারের ক্লাসই হয়নি। তা ছাড়াও, পার্টিশন দিয়ে ক্লাস হলে বেশিরভাগ সময়ে পাশের ঘরের আওয়াজ চলে আসে। পড়াশোনায় মন বসে না। তার কথায়, ‘‘আর তো কয়েকটি মাস। মাধ্যমিকের প্রস্তুতি এ ভাবে নেওয়া যায়?’’ আসিদা বিবির মেয়ে নবম শ্রেণিতে পড়ে। স্কুলের পরিকাঠামো নিয়ে ক্ষুব্ধ আসিদা বলেন, ‘‘পড়াশোনার কোনও পরিবেশই নেই এখানে।’’
জানা গিয়েছে, এখন প্রায় ১২ জন শিক্ষকের প্রয়োজন থাকলেও রয়েছেন মাত্র তিনজন। তাঁরা নিজেরাই খরচ করে কিছু অস্থায়ী শিক্ষকের মাইনে দেন। কারণ, স্কুল তহবিল তলানিতে ঠেকেছে। পরিকাঠামোগত ত্রুটির জন্য স্কুলের ছেলেমেয়েদের কাছ থেকে ফি নেওয়াও বন্ধ করে দিয়েছে স্কুল।
প্রধান শিক্ষক বিকাশকলি মণ্ডল বলেন, ‘‘একাধিকবার আবেদন করা হয়েছে বিভিন্ন মহলে। কিন্তু কোনও তরফ থেকেই সরকারি সাহায্য পাইনি। স্কুলে পানীয় জল, শৌচাগারের অভাব রয়েছে। এ রকম বেশি দিন চললে আর ছাত্র ভর্তি হবে না।’’
১১৭ নম্বর জাতীয় সড়কের পাশে স্কুল। বিভিন্ন সময়ে দুর্ঘটনা ঘটারও ঝুঁকি রয়েই যায়। স্কুলের প্রাচীর দেওয়া আশু প্রয়োজন। যদিও জেলা স্কুল পরিদর্শক (মাধ্যমিক) বাদলকুমার পাত্র বলেন, ‘‘আবেদন স্কুল শিক্ষা দফতরে পাঠানো হয়েছে। সেখান থেকে অনুমোদন এলে নিশ্চয়ই অর্থ সাহায্য দেওয়া হবে।’’