বিশ্রাম: এখানেই ওঠার কথা মুখ্যমন্ত্রীর। নিজস্ব চিত্র
লনের বাগানে ঘাসগুলি জল পেয়ে সতেজ হয়েছে তো? ফোয়ারায় জল ঠিক মতো আসছে তো? নাকি পাইপলাইনে গোলমালে ফুলের পাপড়ি শুকিয়ে গিয়েছে!
গত কয়েক দিন থেকেই বিভিন্ন দফতরের অফিসারদের এ রকমই সব তদারকি আর চাপে কেটে গিয়েছে সারা দিন। সেজে উঠছে ‘ঊর্মিমুখর’। গঙ্গাসাগরে জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের ওই বাংলোয় আজ, মঙ্গলবার এসে ওঠার কথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। প্রায় তিন বছর পরে সাগরে পা রাখছেন তিনি। আপ্যায়নে কোনও রকম খামতি না থাকে, ভাবতে ভাবতে মাথার চুল খাড়া সরকারি অফিসারদের।
সাগর জুড়ে এখন প্রায় সাজ সাজ রব। সমস্ত রাস্তাঘাট ঝকঝকে করে তোলার কাজ এমনিতেই চলছিল গঙ্গাসাগর মেলা উপলক্ষে। তার মধ্যে মুখ্যমন্ত্রী নিজেই মেলার কাজের অগ্রগতি দেখতে আসছেন। গত বছর কচুবেড়িয়ায় দুর্ঘটনার পর থেকে অনেকগুলি গুরুত্বপূর্ণ রদবদল করা হচ্ছে এ বার মেলায়। গত কয়েক দিনে তিন মন্ত্রী এসে সে সব প্রস্তুতি খতিয়ে দেখেছেন। সোমবার এসেছেন কলকাতার মেয়র ও মন্ত্রী শোভন চট্টোপাধ্যায়। মঙ্গলবার আসছেন মুখ্যমন্ত্রী নিজেই। তাই ব্যস্ত সকলেই, তটস্থও বটে।
সাগরের বিধায়ক বঙ্কিম হাজরা বলেন, ‘‘আমরা খুবই আনন্দিত। দীর্ঘ দিন পরে এলাকায় মুখ্যমন্ত্রী আসছেন। প্রচুর প্রত্যাশা তাঁর কাছে সাগরের মানুষের। তাঁর আপ্যায়নেও আমরা কোনও খামতি রাখতে চাই না।’’ গঙ্গাসাগর পঞ্চায়েত সমিতির অধীনে আনন্দধারা প্রকল্পে যুক্ত প্রায় ৪ হাজার মহিলা শাঁখ বাজিয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে স্বাগত জানাবেন বলে প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। কপিলমুনির আশ্রমে মমতার পুজো দেওয়ার কথা। কয়েকটি ডালা সাজিয়ে রাখতে বলা হয়েছে স্থানীয় কর্মকর্তাদের। তৃণমূলের তরফেও প্রচুর ব্যানার-পোস্টার দিয়ে ছয়লাপ করা হয়েছে সাগর ব্লকের বিভিন্ন জায়গা। বড় বড় তোরণ তৈরি হয়েছে।
দলের কর্মকর্তারা জানালেন, গঙ্গাসাগর দিন দিন গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে। মেলা ছাড়াও প্রতিনিয়ত বাইরে থেকে তীর্থযাত্রীর চাপ আছে। স্থানীয় মানুষ, রোগীও জোয়ার-ভাটার জন্য মুড়িগঙ্গায় ফেরি পরিষেবায় বার বার অসুবিধায় পড়ছেন। তাই মুখ্যমন্ত্রীর কাছে তৃণমূলের তরফে সাগর গ্রামীণ হাসপাতালটিকে স্টেট জেনারেল হাসপাতালে উন্নীত করার দাবি জানানো হবে। সারা বছর ভাল করে ড্রেজিংয়ের আবেদনও করা হবে। এর আগেও জেলার প্রশাসনিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে কাকদ্বীপ-সাগর সেতু যোগাযোগ, না হলে অন্তত সারা বছর মুড়িগঙ্গার ওই ফেরি রুটে পলি কাটার দাবি জানিয়েছিলেন সাগরের বিধায়ক বঙ্কিমবাবু।
এ বার গঙ্গাসাগরে এসে মুখ্যমন্ত্রী মেলার কাজের নজরদারির বাইরেও কৃষকদের মুখোমুখি হবেন। এ বছর বর্ষায় সাগরে বেশ কিছু চাষি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। তাঁদের তালিকা তৈরি করে ইতিমধ্যেই ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করা হয়েছে। বুধবার রুদ্রনগর কৃষকবাজারে এসে মুখ্যমন্ত্রী তাঁদের হাতে চেক তুলে দেবেন।
গতকাল থেকেই গঙ্গাসাগরের দখল নিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রীর নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা অফিসারেরা। মুড়িগঙ্গায় জলপথে কড়া নজরদারি চালাচ্ছে সুন্দরবন পুলিশ জেলা। জেলার পদস্থ পুলিশ আধিকারিকরা বিভিন্ন ঘটনাস্থলে গিয়ে কাজের তদারকি করছেন। কচুবেড়িয়া থেকে গঙ্গাসাগর পর্যন্ত বিভিন্ন জায়গায় রাস্তার উপরে বাম্পার তুলে ফেলা হচ্ছে, কনভয়ের দ্রুত গতির জন্য। তার সঙ্গেই বিভিন্ন জায়গায় গার্ডরেলও বসানো হয়েছে রাস্তা যানজটমুক্ত রাখতে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy