জমা-জল: কবে বদলাবে এই হাল— প্রশ্ন পুরবাসীর। ছবিটি তুলেছেন শান্তনু হালদার
গত বছর মশাবাহিত নানা অসুখ বিস্তর ভুগিয়েছিল রাজ্যের বিভিন্ন পুর এলাকার বাসিন্দাদের। একাধিক মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। সেই পরিস্থিতি যাতে আবার ফিরে না আসে, সে জন্য রাজ্যের সমস্ত পুরসভাকে এ বার আগে থেকেই অভিযানে নামতে বলেছিল নবান্ন। কিন্তু মশা মারা থেকে সাফাই অভিযান— কোনও কাজই এখনও সে ভাবে গুছিয়ে উঠতে পারেনি উত্তর ২৪ পরগনার অশোকনগর-কল্যাণগড় পুরসভা।
গত বছর এই পুর এলাকায় কয়েক জন বাসিন্দার রক্তে ডেঙ্গির জীবাণু মিলেছিল। জ্বরে আক্রান্ত হয়ে অনেকে স্থানীয় অশোকনগর স্টেট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, পুরসভার নজরদারি অভাবে এ বার ইতিমধ্যেই বিভিন্ন ওয়ার্ডে মশার উপদ্রব দেখা দিয়েছে। দিনের বেলাতেও মশা থেকে বাঁচতে দরজা-জানালা বন্ধ রাখতে হচ্ছে।
পুর এলাকা ঘুরে দেখা গেল, বিভিন্ন জায়গায় ঝোপঝাড় গজিয়েছে। যত্রতত্র জমে রয়েছে আবর্জনা। কচুয়া বাজারের কাছে ও শহিদ সদনের পিছনে ভ্যাট উপচে নোংরা রাস্তায় ছড়িয়ে রয়েছে। নিকাশি নালাগুলি যে নিয়মিত সাফাই হয় না, তা দেখেই বোঝা যায়। ওই পুর এলাকায় জল নিকাশির অন্যতম মাধ্যম, বিদ্যাধরী খাল। সেই খাল কচুরিপানায় ভরে গিয়ে মশার আঁতুরঘরে পরিণত হয়েছে।
অশোকনগরের প্রাক্তন বিধায়ক তথা সিপিএম নেতা সত্যসেবী করের অভিযোগ, ‘‘পুর এলাকায় প্রচুর নিকাশি নালা থাকলেও সেগুলি সাফাই করার ব্যাপারে পুরসভা উদাসীন। সে কারণেই মশার উপদ্রব বেড়েছে।’’
স্থানীয় সূত্রে জানা গেল, সামান্য বৃষ্টি হলেই ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের শ্মশান সংলগ্ন এলাকা, ২২ নম্বর ওয়ার্ডের বাইগাছি, ৫ নম্বর ওয়ার্ডের খালপাড়া, ৬ নম্বর ওয়ার্ডের বিনিময়পাড়া, ২১ নম্বর ওয়ার্ডের কায়পুত্রপাড়া, ২০ নম্বর ওয়ার্ডের নিরঞ্জন সরোবর, ১৯ নম্বর ওয়ার্ডের নবজীবনপল্লি, ডোবা কলোনির মতো কয়েকটি এলাকায় জল জমে যায়। সেই জল বের করার ব্যবস্থা না থাকায় সেখানেই জন্ম নেয় মশা।
পুরসভা সূত্রে জানা গেল, মশা মারার কামান তাদের নেই। তবে তেল ও কীটনাশক স্প্রে করার কাজ শুরু হয়েছে। ছড়ানো হচ্ছে ব্লিচিং। পুরপ্রধান প্রবোধ সরকার বলেন, ‘‘নিকাশি নালা সাফাইয়ের কাজে গতি আনতে কয়েকজন অস্থায়ী কর্মীকে নিয়োগ করা হচ্ছে। ১ মে থেকে এলাকার বন জঙ্গল সাফাই অভিযান শুরু হবে।’ একই সঙ্গে তাঁর দাবি, শুধু সাফাই অভিযান চালালেই হবে না, আগে দরকার এলাকার মানুষের সচেতনতা তৈরি। নিকাশি নালায় প্লাস্টিক ও অন্যান্য আবর্জনা ফেলা বন্ধ করতে হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy