চলছে কেনাকাটা। নিজস্ব চিত্র।
কোনও কাঠামো নেই। ছাউনিরও বালাই নেই। উপরে খোলা আকাশ আর নীচে ফুটপাথ। তার মধ্যেই বিভিন্ন পসরা সাজিয়ে বসেছেন দোকানিরা।
নৈহাটির ঘোষপাড়া রোড, অরবিন্দ রোড, জান মহম্মদ ঘাট রোড, বিজয়নগর— পায়ে হাঁটার জো নেই। ঘাড়ের উপর গাড়ির হর্ন আর পা বাড়ালেই দোকানপাট। নৈহাটির ব্যস্ত রাস্তাগুলো এখন বিপজ্জনক বেদখল ফুটপাথের বাজারের জন্য। গাড়ি কিংবা সাইকেল চলতে চলতে রাস্তার ধারে সরলেই বিপদ অবধারিত।
নৈহাটির পুরপ্রধান অশোক চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আমরা কারও রুটি-রুজি বন্ধ করতে চাই না। কিন্তু স্বাভাবিক যান চলাচলের স্বার্থে রাস্তা প্রশস্ত থাকা জরুরি। হকারদের অন্যত্র বসার ব্যবস্থা করা হয়েছে। কেউ বেকার হবেন না।’’
রাস্তার পাশে সকাল-বিকেল ভরা বাজার। পিচ রাস্তার উপরেই উঠে এসেছে ফলের ঝাঁকা, সবজির ঝুড়ি, স্থায়ী দোকানের বর্ধিত অংশ। ফুলকপি, টমেটো, শশা গড়াগড়ি খাচ্ছে রাস্তায়। ক্রেতারা বাছছেন, দর দস্তুর করছেন সাইকেল বা মোটরবাইকটি রাস্তার উপরে রেখেই। পথ চলতি গাড়ির চাকা একটু বেসামাল হলেই গণ্ডগোল। স্টেশনের কাছের ফুটপাথ চুরি করেছে রিকশা স্ট্যান্ড।
বাসিন্দারা জানান, ঘোষপাড়া রোডে এমনিতেই গাড়ির সংখ্যা বেশি। তার উপর ঘিঞ্জি শিল্পাঞ্চলের মধ্যে দিয়ে যাওয়া রাস্তার এই অংশটিতেই বাজার বসায় শহরের প্রধান রাস্তাটিই কার্যত সরু হয়ে গিয়েছে। সকালের দিকে স্কুল গাড়ি, বাস ও অটো রাস্তার মাঝে স্টপেজে দাঁড়িয়ে পড়ায় যানজট হয়। এমনিতেও দুপুর পর্যন্ত বাজার চলায় সাবধানে গাড়ি চালাতে গিয়ে রাস্তার ধারের বাজারগুলো পেরোতেই কুড়ি মিনিট সময় লেগে যায়। ব্যারাকপুর থেকে কাঁচরাপাড়া পর্যন্ত বিকল্প রাস্তা বলতে সেই কল্যাণী এক্সপ্রেসওয়ে। হালিশহর বা কাঁচরাপাড়ায় ঢুকতে গেলে ন’কিলোমিটার বাড়তি রাস্তা ঘুরতে হয়। তাই ভিড় সামলেই এই পথ দিয়েই নিত্য যাতায়াত। এক লেনের রাস্তায় একে গাড়ির চাপ তার উপর আবার বাজার বসে। ট্রাফিক পুলিশ মোতায়েন করেও পরিস্থিতি সামাল দেওয়া যায় না।
ফুটপাথের বাজার নিয়ে উদ্বিগ্ন প্রশাসনও। তড়িঘড়ি হকার্স মার্কেটের প্রতি জোর দিয়েছে নৈহাটি পুরসভা। ইতিমধ্যেই ক্যানিংহাম রোড, জর্জ রোড, জান মহম্মদ ঘাট রোডের হকারদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা পাকাও হয়ে গিয়েছে। কিন্তু ঘোষপাড়া রোড, অরবিন্দ রোড আর ৬ নম্বর বিজয়নগরের অবস্থা এখনও একই রকম। অফিস সময়ে যেতে সমস্যায় পড়তে হয় যাত্রীদের। স্থানীয় বাসিন্দা জয়তী মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘যত দিন যাচ্ছে নৈহাটি জনবহুল হচ্ছে। যে ভাবে ফুটপাথ চুরি হয়ে গিয়েছে তা এখনই না আটকালে একসময় হয়তো গোটা রাস্তাটাই দখল হয়ে যাবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy