প্রতীকী ছবি
চোর সন্দেহে এক যুবককে পিটিয়ে মারার অভিযোগ উঠেছে। কিন্তু এই ঘটনার পরেই মুখে কুলুপ এঁটেছে জগদ্দল থানার শ্যামনগর-অঞ্জনগড় এলাকা।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃত যুবকের নাম শুভজিৎ দাস (২৪)। অভিযোগ, সোমবার ওই এলাকায় এক মহিলার মোবাইল চুরির অভিযোগে পেশায় রাজমিস্ত্রি শুভজিৎকে গণপিটুনি দেওয়া হয়। তার আগে দু’হাত বেঁধে তাঁকে আটকে রাখা হয়েছিল বলেও অভিযোগ। মারধরের চোটে ওই যুবক অচৈতন্য হয়ে পড়লে স্থানীয় বাসিন্দাদের কয়েক জন পুলিশে খবর দেন। পুলিশ এসে শুভজিৎকে ভাটপাড়া স্টেট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
পুলিশ জানায়, এ দিন বেলার দিকে কাজে বেরোন শুভজিৎ। অভিযোগ, এলাকারই এক মহিলা রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময়ে তাঁর ব্যাগেরবাইরের দিকে থাকা মোবাইল ফোনটি তুলে নিয়ে পালানোর চেষ্টা করেন তিনি। মহিলার চিৎকারে কয়েক জন জড়ো হয়ে যান। শুভজিৎ নেশার ঘোরে হোঁচট খেয়ে পড়ে যাওয়ায় তাঁকে ধরে ফেলে মারমুখী জনতা। শুরু হয় মারধর। ব্যারাকপুর কমিশনারেটের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘চোর সন্দেহে ধরার পরে পুলিশকে তো তখনই ডাকা যেত। পিটিয়ে মারার অধিকার কে দিয়েছে? আমরা বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখছি।’’ এই ঘটনায় পুলিশ দু’জনকে আটক করেছে।
শুভজিৎ ওই এলাকারই বাসিন্দা ছিলেন। বাবা বিশ্বনাথ দাস ভ্যানচালক। মা মালতী দাস পরিচারিকার কাজ করেন। শুভজিৎ নানা ধরনেরনেশা করতেন বলে পরিবারের দাবি। মালতী বলেন, ‘‘শুভজিৎ আমার ছোট ছেলে। নেশা করত সব রকমের। সেই কারণে এক বার বিরক্ত হয়েআমিই ওকে পুলিশে দিয়েছিলাম। কিন্তু চুরি ও করেনি। ছেলে কাজ করত। সেই টাকাতেই নেশাকরত। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়েছিলাম। সেখানে শুনলাম, ছেলে হাসপাতালে। গিয়ে দেখি, হাত দুটো দড়ি দিয়ে বাঁধা, স্ট্রেচারে প্রাণহীন দেহটা পড়ে আছে।’’
পুলিশও জানায়, নেশা করে অশান্তি করার অভিযোগে কয়েক বার হাজতবাস হয়েছিল ওই যুবকের। মনোবিদ কৌস্তভ চক্রবর্তীর মতে, ‘‘এই ঘটনা সামাজিক ব্যাধির যে ছবিটা দেখাল, তা থেকে সকলেরই শিক্ষা নেওয়া উচিত। যাঁরা নিজেদের নীতি-পুলিশ বলে মনে করেন, তাঁদের জন্য একটি প্রাণ চলে গেল। মাত্রাতিরিক্ত নেশার কারণে শেষ হয়ে যাচ্ছে বহু পরিবার। সুস্থ জীবনের পথ দেখানোর দরকার তাদেরও।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy