সুন্দরবনের নদী, খাঁড়িতে মাছ ধরতে গিয়ে বা জঙ্গলে মধু সংগ্রহ করতে গিয়ে বাঘ, কুমিরের আক্রমণে মৃত্যু হয় বহু মানুষের। বৈধ কাগজপত্র থাকলে তাঁদের পরিবারের সরকারি ক্ষতিপূরণ পাওয়ার কথা। কিন্তু কাগজপত্র না থাকলে টাকা মেলে না। কিন্তু এখন সরকারের বিধবাভাতা, গীতাঞ্জলি প্রকল্পের ঘর-সহ নানা সাহায্য আছে। সেই সমস্ত সাহায্যও নিহত ওই পরিবারের সদস্যেরা পান না বলে অভিযোগ। তারই প্রতিবাদে শুক্রবার দুপুরে গোসাবা বাজার থেকে শ’পাঁচেক মানুষের মিছিল বেরোয়। পরিবারগুলির সদস্যেরা তাতে পা মেলান। মিছিলটি ব্লক অফিসের সামনে পৌঁছয়।
বাঘ, কুমিরের আক্রমণে নিহত পরিবারের বিধবাদের কমিটির সভাপতি চন্দন মাইতির নেতৃত্বে ওই কর্মসূচি পালন করা হয়। বিক্ষোভকারীরা পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙে ভিতরে ঢোকার চেষ্টা করলে পুলিশ চন্দন মাইতি-সহ ২৫ জনকে গ্রেফতার করে। পরে অবশ্য তাঁদের ব্যক্তিগত বন্ডে সই করিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়। কিন্তু অভিযোগ উঠেছে, অনেকেই আছেন, যাঁরা বৈধ কাগজপত্র থাকা সত্ত্বেও এখনও সরকারি ক্ষতিপূরণ পাননি।
গোসাবার বিডিও সুমন চক্রবর্তী বলেন, ‘‘ওই সমস্ত পরিবারের কাছে প্রমাণপত্র চাওয়া হয়েছিল, যা থেকে প্রমাণ করা যায় বাঘ বা কুমিরের আক্রমণে তাঁদের পরিবারের সদস্যেরা মারা গিয়েছেন। কিন্তু তা তাঁরা দিতে পারেনি। তবে কী ভাবে ওঁদের সরকারি সাহায্য দেওয়া যায়, তা দেখা হচ্ছে।’’
কিন্তু ক্ষতিগ্রস্ত সেই সব পরিবারের সদস্যেরা নানা দফতরে আবেদন করার পরও সেই টাকা পায়নি বলে অভিযোগ। অথচ ২০১১ সালে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সুন্দরবনে এসে ওই সমস্ত মহিলাদের দুঃখ-দুর্দশার কথা শুনেছিলেন। তখনই তিনি ঘোষণা করেছিলেন সরকারের তরফে ওই সমস্ত পরিবারকে সাহায্য করা হবে। পাখিরালার বাসিন্দা কমলা মণ্ডল বলেন, ‘‘১৮ বছর আগে আমার স্বামী রসিক মণ্ডলকে বাঘে নিয়ে যায় অনেক ঘোরাঘুরি করেও কিছু পাইনি। এখনও ঠিক মতো খাওয়ার জোটে না।’’ চন্দনবাবু বলেন, ‘‘বিধবা মহিলাদের দুর্দশার কথা ভেবেই এই আন্দোলনে নামতে বাধ্য হয়েছি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy