ঝুঁকি: নামখানার ঘাট। —নিজস্ব চিত্র।
কোথাও রাতের অন্ধকারে চলছে ফেরি পরিষেবা, কোথাও বেশি সংখ্যায় যাত্রী উঠছে কিনা, তা যাচাই হচ্ছে স্রেফ চোখের আন্দাজে। জেলা পরিষদ থেকে ফেরি পরিষেবার ‘ডাক’ (নিলাম) হলেও নৌকোর লাইসেন্স এবং তাতে লোক কত চাপানো হবে তার কোন সুনির্দিষ্ট নজরদারি নেই। হুগলির তেলেনিপাড়ায় জেটি ভেঙে দুর্ঘটনার পরে দক্ষিণ ২৪ পরগনায় ফেরি পরিষেবার নিরাপত্তার দিক খতিয়ে দেখতে প্রশাসনের বৈঠকে উঠে এল এমনই সব চিত্র।
বুধবার কাকদ্বীপ কলেজে আলিপুর, ডায়মন্ড হারবার এবং কাকদ্বীপের ফেরি পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত সমস্ত সংস্থা, পঞ্চায়েত সমিতি, ঘাটের ইজারাদার, পুলিশ, পঞ্চায়েত প্রধানদের নিয়ে একটি বৈঠক করেছে প্রশাসন। সেখানে ১৩ দফা নতুন নিয়ম মানার কথা বলা হয়েছে। কিন্তু পুরো বিষয়টিতে গোড়ায় গলদ থেকে গিয়েছে বলে মনে করছেন প্রশাসনেরই একটি অংশ।
জানা গিয়েছে, জেলা পরিষদের নিলাম করা ২৪০টি ঘাট রয়েছে। এই ঘাটগুলিতে বিভিন্ন দরে সারা বছরের জন্য নিলাম হয়। কিন্তু নৌকোর লাইসেন্স জেলা পরিষদ দেয় না। তাতে কতজন লোক চলবে, তার কোনও বিজ্ঞানসম্মত নজরদারিও নেই। মাঝিমাল্লা এবং ইজারাদাররাই অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে ঠিক করেন, একটি নৌকোয় কত লোক চাপানো হবে। জেলা প্রশাসনের এক অফিসারের কথায়, ‘‘বেশিরভাগ জায়গায় দুর্ঘটনা ঘটার মূল কারণ নৌকোয় যাত্রী ওভারলোডিং। কিন্তু একটি নৌকো ওভারলোড হচ্ছে কিনা, তা ঠিক করার জন্য কারিগরি লোক নেই। ফলে এখনও সেই মাঝি বা ইজারাদারদের আন্দাজের উপরেই নির্ভর করে চলতে হচ্ছে।’’
বৈঠকে ঠিক হয়েছে, আপাতত সেই ইজারাদার, মাঝিদের অভিজ্ঞতার ভিত্তিতেই নৌকোয় যাত্রী চাপানোর উর্ধ্বসীমা ঠিক করে একটি লাল সীমারেখা এঁকে দিতে হবে নৌকোর গায়ে। জেলাশাসক ওয়াই রত্নাকর রাও বলেন, ‘‘এত দিন ন্যূনতম নিয়ম ছিল। এ বার আমরা সব নিয়মই কড়া ভাবে লাগু করতে মডেল বিধি চালু করছি। কারণ, পরিষেবার পুরো বিষয়টিকেই একটি নিরাপদ ব্যবস্থাপনার মধ্যে আনতে চাই।’’
বলা হয়েছে, দুযোর্গের সময় পরিষেবা বন্ধ রাখতে। জেটিতে ঢোকার আগে সব জায়গায় ড্রপগেট লাগাতে বলা হয়েছে, যা কাকদ্বীপ-কচুবেড়িয়া ছাড়া কোথাও নেই। প্রতিটি ঘাটে, ফেরির সময়ে এবং ভাড়ার তালিকা থাকতে হবে। ফেরি পরিষেবা বন্ধ থাকলে জেটি বা গ্যাংওয়েতে লোক থাকবে না। একটি নৌকোয় লোক বেশি হয়ে যাচ্ছে মনে করলে বহনক্ষমতার উপরে নির্ভর করে টিকিট দিতে হবে। নামখানা পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি শ্রীমন্ত মালি বলেন, ‘‘ব্লকের বেশিরভাগ জায়গায় এ সব ব্যবস্থা রয়েছে। তবে যেখানে যেখানে নেই, সেখানে চালু করছি। তার সঙ্গেই নতুন নির্দেশ মেনেই পরিষেবা যাতে চলে, তা-ও দেখছি।’’ নথিভুক্ত ঘাটের বাইরেও অসংখ্য ছোটবড় ঘাট রয়েছে। পঞ্চায়েত প্রধানদের সেগুলি সম্পর্কে তথ্য জোগাড় করে পাঠাতে বলে হয়েছে জেলা পরিষদে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy