বেপরোয়া বাইক। নিজস্ব চিত্র।
প্লাস্টিকের বোতল, জ্যারিকেন এনে শ’য়ে শ’য়ে লিটার তেল রোজ কেনাবেচা চলছে রায়দিঘির পেট্রোল পাম্পগুলিতে। যা বিক্রি হচ্ছে হাট-বাজার থেকে। ফলে হেলমেট ছাড়া তেল মিলবে না পাম্পে— এমন যুক্তি অবান্তর অনেকের কাছেই।
এক পাম্পের ম্যানেজার সাফ বললেন, ‘‘কাগজে তো কত কিছুই বেরোয়। সকলে কি সব মানে? আমাদের এখানে এখনও হেলমেট ছাড়া তেল দেওয়া যাবে না, এমন কোনও নির্দেশিকা পৌঁছয়নি।’’ এই পরিস্থিতিতে বাইক আরোহী ক্রেতার মাথায় হেলমেট আছে কী নেই, তা নিয়ে কোনও মাথাব্যথা নেই পাম্প কর্তৃপক্ষের।
পুলিশেরও তেমন নজরদারি নেই পথেঘাটে। ফলে হেলমেট ব্যবহারে মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশিকায় থোড়াই কেয়ার রায়দিঘির মোটর বাইক আরোহীদের! কিন্তু হেলমেট না পরায় বাহাদুরি কীসের? এক বাইক আরোহীর যুক্তি, ‘‘গরম কালে ও সব পরতে পারব না। আগে ধরপাকড় শুরু হোক, তারপরে ভাবব।’’
প্রশাসনের নির্দেশ বাস্তবায়িত করার মতো পরিস্থিতিই নেই সুন্দরবনের এই এলাকায়। সচেতনতার অভাব বড়ই প্রবল। যে কারণে, শহর কলকাতা থেকে প্রায় ৯০ কিলোমিটার দূরে মুখ্যমন্ত্রীর বার্তা এখনও সে ভাবে পৌঁছচ্ছে না।
এলাকায় রয়েছে ছোট-বড় মিলিয়ে ৭টি পেট্রোল পাম্প। তার মধ্যে কয়েকটিতে সিসি ক্যামেরাও লাগানো আছে। কিন্তু থাকলেই বা কি! গ্রামীণ এলাকায় পিচ রাস্তা বাড়ার সুবাদে মোটরবাইক কেনার হিড়িকও বেড়েছে। কিন্তু রায়দিঘি থেকে দমকল প্রায় ৩০ কিলোমিটার রাস্তার মধ্যে কোনও পেট্রোল পাম্প নেই। বোলের বাজার পর্যন্ত প্রায় ২৫ কিলোমিটার রাস্তার মধ্যেও তেল নেওয়ার মতো ব্যবস্থা নেই। ফলে ওই এলাকার মানুষ মুদির দোকান, তেলে ভাজার দোকান বা সব্জির দোকানে মজুত রাখা তেলই কিনে ফেলেন। তাই ওই সব এলাকার বাসিন্দাদের হেলমেট কথাটাই যেন কানে ঢোকেনি।
পেট্রোল পাম্পের ব্যবসায়ীগের অন্য জ্বালাও আছে। পাম্প কর্মী প্রলয়কান্তি মণ্ডল বলেন, ‘‘হেলমেট ছাড়া তেল না দিলে উল্টে ক্রেতাই আমাদের ধরে পেটাবে। পুলিশ নিরাপত্তার ব্যবস্থা করুক, আমরাও নিয়ম মেনে চলব।’’
জেলার এক পুলিশ আধিকারিক বলেন, ‘‘সমস্ত পেট্রোল পাম্পে সরকারি নির্দেশিকা পাঠানো হয়েছে। কোথাও কোনও সমস্যা হলে অভিযোগ জানালে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে এখনও পর্যন্ত কোনও অভিযোগ আসেনি বলেও জানিয়েছেন তিনি।
অভিযোগ আসবেই বা কী করে। ক্রেতা-বিক্রেতা দু’য়েরই তো সচেতনতা বাড়েনি!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy