কোজাগরী পুজোর জন্য কেনাকাটা। নৈহাটিতে। ছবি: সজল চট্টোপাধ্যায়
রাস্তার দু’ধারে উপচে পড়া ভিড়। তক্তপোষের উপরে সার দিয়ে রাখা মাটির লক্ষ্মী প্রতিমা। রাস্তার ধারে মাটিতে ঢালাও বাজার। পুজোর উপকরণ, ফল, ফুল, শুকনো মিষ্টি। এক নজরে ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চলের রাস্তাঘাটে এই ছবিটা ছিল লক্ষ্মীপুজোর আগের সন্ধ্যায়।
এ বারও এই চিত্রটা আছে। কিন্তু বদলেছে দামের গ্রাফ। আকাশছোঁয়া দাম। তবু মা লক্ষ্মীর ভক্তেরা পুজোর আয়োজন করছেন। কিন্তু হিমশিম খেতে খেতে। নৈহাটির বাসিন্দা সম্পূর্ণা মুখোপাধ্যায় বাড়িতে বরাবরই লক্ষ্মীপুজো করছেন। বুধবার সন্ধ্যায় নৈহাটিতে বাজার করতে গিয়ে এত দাম দেখে বললেন, ‘‘লক্ষ্মীপুজোর বাজারেও যেন জিএসটি চেপেছে।’’
এমনিতে সরস্বতী, লক্ষ্মীপুজোয় পুরোহিতের চাহিদা আকাশ ছোঁওয়া। আগেকার দিনের মতো ধরে বেঁধে পুরোহিতকে এনে পুজো করিয়ে নেওয়ার দিন শেষ। এখানেও এখন কর্পোরেট কালচার। পুজোর জন্য আগে থেকে পুরোহিত বুকিং। অগ্রিম দেওয়ার পরেই পুরোহিত নিশ্চিত করেন পুজো করতে যাবেন বলে। ব্যারাকপুরে দীর্ঘ দিন ধরে পুজো করেন অরিন্দম মজুমদার। পুরোহিতদের প্রশিক্ষণও দেন। অরিন্দমবাবু বলেন, ‘‘দুর্গাপুজোর মতো লক্ষ্মীপুজোতেও পুরোহিতদের আগে থেকেই পুজোর জায়গা নির্দিষ্ট হয়ে থাকে এখন। পুজো অনেক বেড়ে গিয়েছে। আগাম সমস্ত জায়গা নিশ্চিত না থাকলে এখন আর পুজো করা যায় না।’’
পুরোহিতের চাহিদা আর লক্ষ্মী প্রতিমার দাম— দুই’ই বেড়েছে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে। বছর কয়েক আগেও ছোট লক্ষ্মী প্রতিমা পঞ্চাশ টাকায় মিলতো। এখন বাজার অনুযায়ী দামের সামান্য তারতম্য থাকলেও একশো টাকার নীচে লক্ষ্মী প্রতিমা মেলার কোনও উপায় নেই গোটা শিল্পাঞ্চলে। হাতখানেক বড় প্রতিমা আড়াইশো টাকার উপরে দাম। যদি বা প্রতিমা চড়া দামে কেনাও যায়, ফল আর ফুলের বাজার তো আগুন। অধিকাংশ ফলই এ দিন দ্বিগুণ দাম। এক ডজন কলা এ দিন বিক্রি হয়েছে প্রায় ৩০ টাকায়। শশার দাম ৪০ টাকা কিলোর আশেপাশে। আপেল একটু ভাল মানের হলে ১৮০-২০০ টাকা কেজি।
ভাটপাড়ায় ঘোষপাড়া রোডের ধারে লক্ষ্মী প্রতিমার পাশেই ডালা সাজিয়ে বিক্রি হচ্ছে শুকনো মিষ্টি। কদমা ও মঠের মতো মিষ্টি এক ঠোঙা (১১টা থাকে) দশ টাকায় মিলত এত দিন। লক্ষ্মী পুজোর আগে এর দাম ঠোঙা পিছু ২০ টাকা হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy