Advertisement
E-Paper

তড়িঘড়ি গ্যাসের সংযোগ নিতে নির্দেশ স্কুলকে

ব্লক প্রশাসন সূত্রের খবর, কোনও দিনই এই ব্লকের কোনও হাইস্কুলে মিড ডে মিলের জন্য গ্যাসের সংযোগ ছিল না। কাঠের উনুনে রান্না চলছে এ যাবৎ।

নবেন্দু ঘোষ 

শেষ আপডেট: ৩১ জানুয়ারি ২০২৩ ০৭:৫৩
Something is being cooked

কাঠের আগুনে রান্না চলছে একটি স্কুলে। —নিজস্ব চিত্র

স্কুলে মিড ডে মিল রান্নার হাল হকিকত খতিয়ে দেখতে রাজ্যে এসেছে কেন্দ্রীয় দল। কোনও খামতি যাতে কোথাও ধরা না পড়ে, সে জন্য রাজ্যের তরফে একপ্রস্থ নির্দেশিকা গিয়েছে স্কুলে স্কুলে।

মিড ডে মিলের নিয়ম অনুযায়ী, গ্যাসে রান্না করার কথা। কিন্তু সন্দেশখালি ২ ব্লক জুড়ে কোনও হাইস্কুলে গ্যাসের সংযোগ নেই। সোমবার বেলা ৩টে নাগাদ তড়িঘড়ি এই ব্লকের হাইস্কুলের হোয়াটস্যাপ গ্রুপে ব্লকের মিড ডে মিল বিভাগ থেকে মোবাইল বার্তায় জানানো হয়, জেলা মিড ডে মিল সেলের নির্দেশ মতো সোম বা মঙ্গলবারের মধ্যে সব হাইস্কুলে গ্যাস সংযোগ নিতে হবে। তার জন্য মঠবাড়ি এলাকার এক গ্যাস ডিলারের সঙ্গে দ্রুত যোগাযোগ করতেও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। স্কুলকে নিজেদের কোনও ফান্ড থেকে এই খরচ করতে বলা হয়েছে। দ্রুত সেই টাকা স্কুলকে দিয়ে দেওয়া হবে বলেও জানানো হয়েছে।

ব্লক প্রশাসন সূত্রের খবর, কোনও দিনই এই ব্লকের কোনও হাইস্কুলে মিড ডে মিলের জন্য গ্যাসের সংযোগ ছিল না। কাঠের উনুনে রান্না চলছে এ যাবৎ। আতাপুর কেনারাম হাইস্কুলে পঞ্চম থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত ৫৬৫ জন পড়ুয়া মিড ডে মিল খায়। রান্না হয় উনুনে। রান্নাঘর ধোঁয়ায় ঢেকে যায়। রান্নার জায়গাটিও বেশ নোংরা হয়ে যায়, তা মানছেন স্কুল কর্তৃপক্ষ।

স্কুল সূত্রের খবর, সরকারি নির্দেশ মতো আজ, মঙ্গলবার ব্যাঙ্ক থেকে টাকা তুলে সংযোগ নেওয়ার চেষ্টা করা হবে। কিন্তু তারপরেও মঙ্গলবার মিড ডে মিল রান্না গ্যাসে সম্ভব হবে না। অন্তত বুধবার লেগে যাবে গ্যাসে রান্না করতে। একই বক্তব্য বিভিন্ন স্কুলের।

এই ব্লকের হাটগাছা কেসিএ হাইস্কুলে আবার পড়ুয়াদের মিড ডে মিল খাওয়ার জন্য নির্দিষ্ট ঘর নেই। রান্নাও হয় উনুনে। স্কুলের প্রধান শিক্ষক অমিয় মণ্ডল বলেন, “গ্যাস থাকলে খুব ভাল হত। প্রায় ৪৯৭ জনের রান্না হয় মিড ডে মিলে। এত রান্না কাঠ জ্বালিয়ে করায় রান্নাঘর খুব নোংরা হয়, ঝুল-কালি পড়ে। জ্বালানির জন্য কাঠ পেতেও সমস্যা হয়। আমাদের গ্যাসের সংযোগ দেওয়াই হয়নি কোনও দিন। সোমবার গ্যাস সংযোগ নিতে বার্তা এসেছে। তবে এ দিন তা সম্ভব হয়নি। একটু সময় লাগবে।”

দ্বারিরজাঙ্গাল বনমালী বিদ্যাভবন সূত্রের খবর, এই স্কুলে মাত্র দু’জন শিক্ষক। করণিক অসুস্থ। সোমবার গ্যাস সংযোগ নিতে বলা হলেও তা সম্ভব হয়নি। মঙ্গলবারও গ্যাস আনা সম্ভব হবে না। কারণ, মাত্র দু’জন শিক্ষককে সব ক্লাস চালাতে হয়। এক জন গ্যাস আনতে গেলে একার পক্ষে স্কুলে সামলানো মুশকিল। কয়েক দিন সময় লাগবে গ্যাস আনতে। দাউদপুর এইসএল শিক্ষানিকেতনে মিড ডে মিল খায় প্রায় ৫৩০ জন পড়ুয়া। সেখানেও রান্না হয় উনুনে। খাওয়ার ঘর থাকলেও ছাউনি বার বার প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে নড়বড়ে হয়ে গিয়েছে। সেখানেই চলে খাওয়া-দাওয়া। ব্লক অফিসের পাশে সন্দেশখালি রাধারানি হাইস্কুলেরও একই অবস্থা। ডিটিডি শহিদ স্মৃতি হাইস্কুলে মিড ডে মিল খায় প্রায় ৪৭৭ জন। এই স্কুলে গ্যাসের সংযোগ, খাওয়ার ঘর, কোনওটিই নেই। পাশের প্রাথমিক স্কুলের মিড ডে মিলের খাওয়ার ঘরে বসে পড়ুয়ারা খাওয়াদাওয়া করে।

গ্যাস না থাকায় উনুনেই রান্না হয় বলে জানালেন আমতলি জয়গোপালপুর হাইস্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক রাজীব দাস। মণিপুর এমবিসি হাইস্কুল জানায়, গ্যাস নেই। খাওয়ার ঘর তৈরির কাজ কিছুটা হয়েছিল প্রায় ন’মাস আগে। কিন্তু এখনও তা অসমাপ্ত হয়েই পড়ে আছে।

ব্লক প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ২৬টি হাইস্কুল আছে এখানে। ৮টি স্কুলে কারও রান্নাঘর, কারও খাওয়ার ঘর বেহাল। হাইস্কুলগুলিতে গ্যাসের সংযোগ নেই। উনুনে রান্না হয়। অথচ, এই ব্লকে ৯০টি প্রাথমিক স্কুলের ৮৯টিতেই গ্যাস সংযোগ আছে। এই ব্লকের বিভিন্ন হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষকেরা বুঝতে পারছেন না, কী ভাবে মঙ্গলবারের মধ্যে গ্যাস সংযোগ নেওয়া সম্ভব হবে। সন্দেশখালি ২ বিডিও অর্ণব মুখোপাধ্যায় বলেন, “সব স্কুলের জন্য গ্যাস সংযোগের অনুমোদন হয়ে আছে। টাকা আসছিল না, তাই সংযোগ দেওয়া যায়নি হাইস্কুলগুলিতে।”

কেন এত দিনেও টাকা এল না?

উত্তর ২৪ পরগনার মিড ডে মিলের আধিকারিক বলেন, “আমাদের কাছে ব্লক থেকে টাকার জন্য আবেদন করা হয়নি। ব্লককে বলা হয়েছে, দ্রুত প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করতে। টাকার সমস্যা নেই।”

Mid Day Meal sandeshkhali
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy