ডিজে বাজানো যাবে না, বাজানো যাবে না কর্কশ শব্দযুক্ত কোনও সাউন্ড সিস্টেম। অন্যথায় আইনানুগ ব্যবস্থা নেবে পুলিশ— এই মর্মে মুচলেকা দিতে হচ্ছে উদ্যোক্তাদের। তবেই মিলছে পুজোর অনুমতি। কালীপুজোয় শব্দতাণ্ডব রুখতে এই পথেই এগোচ্ছে জয়নগর থানা।
বারুইপুর পুলিশ জেলার অন্তর্গত থানাগুলিতে ডিজে বাজানোর উপরে নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছে আগেই। এ বার একধাপ এগিয়ে এলাকার পুজো কমিটিগুলির কাছ থেকে মুচলেকা লিখিয়ে নিচ্ছে জয়নগর থানা। থানা সূত্রে খবর, এ বছর দুর্গাপুজোতেও একই ভাবে মুচলেকা লিখিয়ে তবেই পুজোর অনুমতি দেওয়া হয়েছিল। কালীপুজোয় আরও জোরদার হচ্ছে কড়াকড়ি।
দুর্গাপুজোয় মুচলেকা লেখানোয় কাজ হয়েছে বলেই জানাচ্ছেন পুলিশকর্তারা। অন্যান্য বারের থেকে এ বার অনেকটাই কম ছিল শব্দের দাপট। বিসর্জনেও আওয়াজ বেশির ভাগ ক্ষেত্রে নিয়ন্ত্রণে ছিল।
যদিও এর মধ্যেও জোরে সাউন্ডবক্স বাজানোকে কেন্দ্র করে ময়দা এলাকায় গন্ডগোল হয়। পুলিশ আওয়াজ কমানোর নির্দেশ দিলে ঝামেলা বাধে। পুলিশকে মারধরের অভিযোগ ওঠে। পুলিশও লাঠি চালায়।
কালীপুজোয় যাতে এ ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে, তা নিয়ে অতিরিক্ত সতর্ক পুলিশ। পুলিশের পরিসংখ্যান বলছে, দুর্গাপুজোর থেকে এলাকায় কালীপুজোর সংখ্যা বেশি। শব্দের অত্যাচারও বেশি। প্রতি বারই এ নিয়ে একাধিক অভিযোগ জমা পড়ে থানায়। সে কথা মাথায় রেখেই এ বার পুজো উদ্যোক্তাদের দিয়ে আগে ভাগে মুচলেকা লিখিয়ে নেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
সম্প্রতি এলাকার সমস্ত কালীপুজো কমিটি নিয়ে বৈঠক করেন জয়নগর থানার পুলিশ আধিকারিকেরা। সেখানে শব্দ নিয়ন্ত্রণের ব্যাপারে উদ্যোক্তাদের সতর্ক করা হয়েছে। শান্তিশৃঙ্খলা রক্ষার ব্যাপারেও কড়া নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
পুলিশের উদ্যোগকে স্বাগত জানাচ্ছে পুজো কমিটিগুলিও। দক্ষিণ বারাসত এলাকার একটি বড় পুজো কমিটির সম্পাদক বলেন, ‘‘বয়স্ক বা অসুস্থ মানুষদের ক্ষেত্রে জোরে আওয়াজ খুবই ক্ষতিকর। সুস্থ মানুষদের কাছেও অতিরিক্ত শব্দ অস্বস্তিকর হয়ে ওঠে। সে দিক থেকে দেখলে এটা অবশ্যই ভাল উদ্যোগ। আমরা সাউন্ড বক্স ব্যবহারের ক্ষেত্রে সাধারণত মাত্রা ছাড়াই না। তবে এ বার আরও সতর্ক থাকব।’’
তবে এলাকার আর এক পুজো কমিটির সদস্যের কথায়, ‘‘জোরে বক্স বাজালে বা ডিজে ব্যবহার করলে পুলিশ আইনানুগ ব্যবস্থা নেবে বলে লিখিয়ে নিয়েছে। কিন্তু শব্দের মাত্রাটা বেঁধে দেয়নি। এটা নিয়ে একটা ধন্দ থেকেই যাচ্ছে।’’