Advertisement
E-Paper

বর্ষায় ব্যাগে গামছা নিয়ে স্কুলে যায় খুদেরা

বৃষ্টি শুরু হলে ভাঙা ঘরে বেঞ্চের উপরে পা তুলে বসে পড়াশোনা করে ছাত্রছাত্রীরা। জোরে বৃষ্টি হলেই স্কুল ছুটি দিয়ে দিতে হয়। এ বিষয়ে জেলা স্কুল পরিদর্শক (প্রাথমিক) উত্তমকুমার চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘ওই স্কুলের সমস্যার কথা আমার জানা নেই। খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’

দিলীপ নস্কর

শেষ আপডেট: ১৭ জুলাই ২০১৭ ০৪:০৬
জলে-পড়াশোনা: সংস্কার না হওয়ায় ছাদ চুঁইয়ে স্কুল ঘরের মধ্যেই পড়ছে বৃষ্টির জল। নিজস্ব চিত্র

জলে-পড়াশোনা: সংস্কার না হওয়ায় ছাদ চুঁইয়ে স্কুল ঘরের মধ্যেই পড়ছে বৃষ্টির জল। নিজস্ব চিত্র

বৃষ্টির ছাঁটে মিড-ডে মিল রান্নার উনুন নিভে যায়। জোরে বৃষ্টি নামলে ছুটির ঘণ্টা পড়ে। আর বর্ষাকালে ব্যাগে গামছা নিয়ে ছেলেমেয়েকে স্কুলে পাঠান বাবা-মায়েরা।

মগরাহাট ১ ব্লকের লক্ষ্মীকান্তপুর পঞ্চায়েতের হরিপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সাকুল্যে চারটি ঘর। তার একটি পরিত্যক্ত। দীর্ঘ দিন সংস্কারের অভাবে বাকি ঘরগুলির কোনওটিতে চাঙড় খসে পড়ছে। কোনও ঘরের ছাদ, দেওয়াল ফেটে গিয়েছে। সামান্য বৃষ্টি হলেই চুঁইয়ে জল পড়ে। জল জমে যায় মেঝেতে।

বৃষ্টি শুরু হলে ভাঙা ঘরে বেঞ্চের উপরে পা তুলে বসে পড়াশোনা করে ছাত্রছাত্রীরা। জোরে বৃষ্টি হলেই স্কুল ছুটি দিয়ে দিতে হয়। এ বিষয়ে জেলা স্কুল পরিদর্শক (প্রাথমিক) উত্তমকুমার চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘ওই স্কুলের সমস্যার কথা আমার জানা নেই। খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’

প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ১৯৭২ সালে ওই স্কুলটি সরকারি অনুমোদন পাওয়ার পরে স্থানীয় বাসিন্দারা মাটির দেওয়াল ও টালির চালের ঘর করে দেন। তাতেই চতুর্থ শ্রেণি পর্যন্ত পঠনপাঠন শুরু হয়। সে সময় স্কুলের উন্নতির জন্য স্কুল কর্তৃপক্ষ প্রশাসন থেকে শুরু করে নানা স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ করেন। তারপরেই একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা স্কুল কর্তৃপক্ষের আবেদনের সাড়া দিয়ে কয়েক লক্ষ টাকা খরচ করে এক তলার ভবন নির্মাণ করে দেয়। ওই স্কুলে এখন ছাত্রছাত্রী সংখ্যা ৫০ জন, স্থায়ী শিক্ষক দু’জন ও পার্শ্ব শিক্ষক-শিক্ষিকা দু’জন।

কয়েক বছর আগে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের বসার ঘরের ছাদের একটি অংশ খসে পড়ে। তারপরে সেটি পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে। বাকি তিনটি ঘরের অবস্থাও খারাপ। বৃষ্টি হলেই ছাদ দিয়ে অঝোরে জল পড়ে। বাধ্য হয়ে এক একটি ঘরে দু’টি করে শ্রেণির ক্লাস করাতে হয়। কখনও বারান্দায় বসিয়ে ক্লাস নিতে হচ্ছে। আর জোরে বৃষ্টি হলেই স্কুল ছুটি দিয়ে দেওয়া ছাড়া উপায় থাকে না।

স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, কাছাকাছি কোনও প্রাথমিক স্কুল না থাকায় বাধ্য হয়ে ওই স্কুলেই ছেলেমেয়েদের পাঠাতে হচ্ছে। জোরে ঝড়-বৃষ্টি হলেই চিন্তার শেষ থাকে না। এই বুঝি ছাদ ভেঙে কোনও দুর্ঘটনা ঘটে গেল!

গ্রামের বাসিন্দা তথা লক্ষ্মীকান্তপুর পঞ্চায়েতের সদস্য তৃণমূলের জলধর সর্দারের দাবি, ‘‘স্কুল ভবনের বেহাল অবস্থার কথা বহুবার পঞ্চায়েত থেকে ব্লক প্রশাসনকে জানিয়েছি। কিন্তু আজও কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।’’ ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক বিভাস গায়েন বলেন, ‘‘সর্বশিক্ষা মিশন থেকে স্কুল ভবন নির্মাণের জন্য টাকা পেলেও ওই টাকায় ভবনের কাজ শেষ করা যায়নি। ফলে পুরনো ভবনেই ক্লাস নিতে হচ্ছে। স্কুল ভবন তো বেহাল। মিড-ডে মিল রান্না করার ঘরটিও নিচু জায়গায় হওয়ায় বৃষ্টি হলেই মেঝেয় জল জমে যায়। উনুনে জল ঢুকে যায়। সমস্ত বিষয় প্রশাসনকে জানানো হয়েছে।’’

স্থানীয় বিডিও অলোক মৌলিক বলেন, ‘‘স্কুলের পরিকাঠামোর বিষয়ে স্কুল পরিদর্শক আমাকে কিছু জানাননি। খোঁজ নিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেব।’’

Rainy Season School Towel Students বর্ষা
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy