Advertisement
E-Paper

বন্ধুদের সঙ্গে আনন্দ ভাগ পড়ুয়াদের

সোমবার বিপ্লব ও তার মতো আরও অনেকের জন্য পুজোর জামা কিনে দিল স্কুলের বাকি ছেলেমেয়েরা। নিজেরাই চাঁদা তুলে, টিফিনের খরচ বাঁচিয়ে টাকা তুলেছে তারা। কেউ আবার পরিবারের পুজোর বাজারের টাকা থেকে কিছুটা বাঁচাতে বলেছিল বাবা-মাকে। সেই টাকাও তুলে দিয়েছে সতীর্থদের পুজোর জামা কিনতে।

সীমান্ত মৈত্র

শেষ আপডেট: ২৬ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০২:২২
পাশে-আছি: জামা তুলে দেওয়া হচ্ছে। ছবি: নির্মাল্য প্রামাণিক

পাশে-আছি: জামা তুলে দেওয়া হচ্ছে। ছবি: নির্মাল্য প্রামাণিক

নবম শ্রেণির ছাত্র বিপ্লব বিশ্বাসের বাবা ভ্যান চালান। টানাটানির সংসারে পুজোতে ছেলেকে নতুন জামা কিনে দিতে পারেননি।

কথা়টা কানে ওঠে গাইঘাটার চাঁদপাড়া বাণী বিদ্যাবীথি স্কুলের বিপ্লবের সহপাঠীদের। উঁচু ক্লাসের দাদা-দিদিদেরও সে কথা জানায় তারা।

সোমবার বিপ্লব ও তার মতো আরও অনেকের জন্য পুজোর জামা কিনে দিল স্কুলের বাকি ছেলেমেয়েরা। নিজেরাই চাঁদা তুলে, টিফিনের খরচ বাঁচিয়ে টাকা তুলেছে তারা। কেউ আবার পরিবারের পুজোর বাজারের টাকা থেকে কিছুটা বাঁচাতে বলেছিল বাবা-মাকে। সেই টাকাও তুলে দিয়েছে সতীর্থদের পুজোর জামা কিনতে।

স্কুলের প্রধান শিক্ষক রবিউল ইসলাম বলেন, ‘‘গত পাঁচ বছর ধরে এ ভাবেই স্কুলের গরিব পরিবারের ছেলেমেয়েদের নতুন পোশাক দেয় বাকিরা।’’ ছাত্রছাত্রীদের পাশাপাশি শিক্ষক-শিক্ষিকারাও চাঁদা দেন।

কিন্তু কী ভাবে শুরু হল এমন উদ্যোগ?

বছর পাঁচেক আগে অষ্টম শ্রেণিতে ক্লাস নিচ্ছিলেন শিক্ষক তমাল সরকার। তিনি সকলের কাছে জানতে চান, পুজোতে কার কী জামা হয়েছে। দুই পড়ুয়া চুপচাপ ছিল। তমালবাবু খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন, তাদের পুজোয় নতুন জামা-প্যান্ট হয়নি। সে বছর থেকেই পড়ুয়া ও শিক্ষক-শিক্ষিকারা চাঁদা তুলে জামা-কাপড় কেনার পরিকল্পনা করেন।

তরুরিমা অধিকারী, রুদ্র সরকার, পূজা লস্কর, মৌলি সরকারের মতো পড়ুয়ারা অন্যদের থেকে টাকা জোগাড় করেছে। এ বার ৪০ জন পড়ুয়াকে নতুন জামা দেওয়া হয়েছে। ছেলেমেয়েদের সঙ্গে করে দোকানে নিয়ে যাওয়া হয়। তারাই নিজেদের জন্য জামা-কাপড়, চুড়িদার পছন্দদ করে।

দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রী তরুরিমা বলে, ‘‘পুজোয় এ বার আমার পাঁচটা নতুন জামা হয়েছে। কিন্তু আমাদের স্কুলে এমন অনেকে পড়ে, যাদের একটাও নতুন জামা হয়নি। তারাও যাতে পুজোয় নতুন পোশাকে সেজে আনন্দ করতে পারে, সে জন্যই আমরা এই কাজ করি।’’

এ দিন নতুন পোশাক পেয়ে বিপ্লব বলে, ‘‘বাবার ভ্যান টানার টাকায় কোনও মতে সংসার চলে। সব সময়েই অভাবের কথা শুনি। নতুন জামা চাইতেও পারি না। দাদা-দিদিরা জামা কিনে না দিলে পুজোর আনন্দটাই মাটি হয়ে যেত।’’

Education Social Work গাইঘাটা চাঁদপাড়া বাণী বিদ্যাবীথি
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy