Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪

সুভাষ দত্তের পদত্যাগ গৃহীত

এর আগে উপ পুরপ্রধান চিত্রলেখা দত্তকে প্রশাসনের তরফে কাউন্সিলরদের নিয়ে বৈঠক ডাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, চিত্রলেখাদেবীই আপাতত পুরপ্রধানের দায়িত্ব সামলাবেন। আগামী পনেরো ১৫ দিনের মধ্যে নতুন পুরপ্রধান নির্বাচিত হবেন।

নিজস্ব সংবাদদাতা
গোবরডাঙা  শেষ আপডেট: ২৪ জুন ২০১৭ ০১:৪৭
Share: Save:

পুরপ্রধানের পদত্যাগপত্র গৃহীত হল কাউন্সিলরদের বোর্ড মিটিঙে। কিন্তু গোবরডাঙার পুরপ্রধান পদে সুভাষ দত্তকেই ফিরিয়ে আনতে হবে বলে দাবি জানালেন তৃণমূলের ১৫ জন কাউন্সিলরের মধ্যে তেরো জনই!

গোবরডাঙায় হাসপাতাল নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর বার্তার প্রতিবাদে আন্দোলন দানা বাঁধে এলাকায়। বন্‌ধও ডাকে অরাজনৈতিক নাগরিক মঞ্চ। ব্যারাকপুরের প্রশাসনিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্যের রেশ সামলাতে পুরপ্রধান হিসাবে সুভাষবাবুর অস্বস্তির কথা গোপন থাকেনি। তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্ব সে সব ভাল চোখে দেখেননি। বন্‌ধ সর্বাত্মক করার পিছনেও সুভাষবাবুর অদৃশ্য প্রভাব দেখতে পান তাঁরা। এ সবের পরেই তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্ব সুভাষবাবুকে সরে যেতে নির্দেশ দেন। সেই মতোই কিছু দিন আগে পদত্যাগপত্র পেশ করেন পুরপ্রধান।

সেই পদত্যাগই শুক্রবার কাউন্সিলরদের নিয়ে এক সভায় আনুষ্ঠানিক ভাবে গৃহীত হয়েছে। এর আগে উপ পুরপ্রধান চিত্রলেখা দত্তকে প্রশাসনের তরফে কাউন্সিলরদের নিয়ে বৈঠক ডাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, চিত্রলেখাদেবীই আপাতত পুরপ্রধানের দায়িত্ব সামলাবেন। আগামী পনেরো ১৫ দিনের মধ্যে নতুন পুরপ্রধান নির্বাচিত হবেন।

এ দিন ১৭ জন কাউন্সিলরদের মধ্যে ১৬ জন উপস্থিত ছিলেন। তৃণমূলের এক কাউন্সিলর শারীরিক অসুস্থার কারণে হাজির হতে পারেননি। ১৭ জনের মধ্যে তৃণমূলের ১৫ জন। দু ’জন বাম কাউন্সিলর।

বেলা ১১টায় সভা শুরু হয়। সুভাষবাবু উপ পুরপ্রধানের কাছে নিজের ইস্তফাপত্র জমা দেন। সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে তিনি ইস্তফার কারণ হিসাবে শারীরিক অসুস্থতার কথা জানান। গত সাত বছর ধরে পুরপ্রধান হিসাবে তাঁকে সাহায্য করার জন্য সকলের কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। পাশাপাশি যিনি নতুন পুরপ্রধান হবেন, তাঁর প্রতি শুভেচ্ছা ও সমস্ত রকম সহযোগিতার আগাম আশ্বাসও দেন। মিনিট দশেক বৈঠকে থেকে বেরিয়ে যান সুভাষবাবু।

এরপরেই তৈরি হয় আবেগঘন মুহূর্ত। কাউন্সিলরেরা প্রাথমিক ভাবে সুভাষবাবুর ইস্তফাপত্র গ্রহণ করতে অস্বীকার করেন। যদিও পরে তৃণূলের এক কাউন্সিলর দলের বাকিদের বুঝিয়ে নিরস্ত করেন। তাঁদের জানানো হয়, পরবর্তী সময়ে সুভাষবাবুকে ফিরিয়ে আনার পথ খোলা থাকছেই পাশাপাশি দলীয় নির্দেশের কথা সকলকে মনে করিয়ে দেওয়া হয়। এরপরেই ইস্তাফাপত্র গৃহীত হয়।

তৃণমূলের উত্তর ২৪ পরগনা জেলা নেতৃত্বের পক্ষ থেকে এ দিন সভায় হাজির ছিলেন দলের দুই জেলা সাধারণ সম্পাদক অজিত সাহা ও গোবিন্দ দাস। বৈঠক শেষে দলের ১৩ জন কাউন্সিলর তাঁদের কাছে পুরপ্রধান হিসাবে সুভাষবাবুকেই ফিরিয়ে আনার আর্জি জানানো হয়। সে কথা দলের জেলা সভাপতি জ্যোতিপ্রিয় মল্লিককে জানিয়ে দেওয়া হবে বলে মন্তব্য করেন অজিতবাবু। দলই এ ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে বলে জানান জ্যোতিপ্রিয়বাবু।

তবে প্রশাসনের একটি সূত্রে জানাচ্ছে, পুরপ্রধান পদ থেকে সরে গেলে ছ’মাসের মধ্যে তাঁকে ফের ওই পদে নির্বাচিত করার সুযোগ নেই পুর আইনে।

কিন্তু তাঁকে দল ফিরিয়ে আনতে চাইলে তিনি কি আদৌ রাজি?

সুভাষবাবু বলেন, ‘‘এ বিষয়ে এখনও কিছু ভাবনা-চিন্তা করিনি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE