গঙ্গাসাগর মেলায় এ বার হোগলা পাতার বদলে অপেক্ষাকৃত কম দাহ্যবস্তু দিয়ে তীর্থযাত্রীদের ছাউনি হবে— অন্তর্ঘাতের আশঙ্কায় এরকমই নির্দেশ এসেছে সম্প্রতি রাজ্য প্রশাসনের তরফ থেকে। জেলায় এসে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও তা ঘোষণা করে গিয়েছেন।
কিন্তু করোগেটেড টিন বা ওই জাতীয় সামগ্রী দিয়ে পুরো ছাউনি করতে গিয়ে বিপদে পড়েছেন মেলা আয়োজকের সব দফতরের কর্তারাই। সে জন্য রাজ্যের দুই মন্ত্রী, সুব্রত মুখোপাধ্যায় এবং শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় মুখ্যমন্ত্রীর কাছে আবেদন করছেন, এ বছর বাদ দিয়ে পরের বছর থেকে টিন দিয়ে সামগ্রি দিয়ে ছাউনি করা হোক।
জনস্বাস্থ্য কারিগরি মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘হোগলা পাতার উপরে এক ধরনের অগ্নি নিরোধক স্প্রে করার কথা ভাবছি। কারণ এত অল্প সময়ে এতগুলি টিন জোগাড় করা মুশকিল। যদি পূর্ত দফতর জোগাড় করে দেয়, তবে আমরা টিনের শেড বানিয়ে ফেলতে পারব।’’ সুব্রতবাবু জানিয়েছেন, টিনের শেডের ভেতরেও সেই খড় বিছিয়েই থাকতে হয় তীর্থ যাত্রীদের। তাই সেটাও পরের বছর থেকে বাদ দেওয়ার কথা চিন্তা করতে হবে।
শনিবারই গঙ্গাসাগর মেলা ঘুরে গিয়েছেন বিদ্যুৎমন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘‘শেডগুলিতে আলো দেওয়ার জন্য টিনের শেডে তারের জোড়া দিতে হয়। সেখানে যদি শিশির পড়ে, তা হলে তা দ্রুত বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হওয়ার আশঙ্কা থাকে। মুখ্যমন্ত্রীর কাছে আবেদন করা হবে এ বারের মতো হোগলা দিয়েই তৈরি করা হোক ছাউনি।’’ এ বার রান্নাঘরগুলি টিনের তৈরি করার কথা চিন্তাভাবনা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন শোভনদেববাবু।
প্রশাসন সূত্রের খবর, গঙ্গাসাগর মেলায় তীর্থযাত্রীদের ছাউনি সাবেক আমল থেকেই হোগলা পাতা দিয়ে তৈরি হয়ে আসছে। কয়েক’শো টিনের ছাউনি তৈরি করতে গেলে এখন বিভিন্ন মাপের প্রায় ১ লক্ষ টিনের চাদর দরকার। তা এই কম সময়ে টেন্ডার করে জোগাড় করা বেশ কঠিন। তা ছাড়াও টিনের ছাউনি হলে রাতে শীতে কষ্ট পাবেন তীর্থযাত্রীরা। ঠাণ্ডায় মৃতের সংখ্যাও বাড়তে পারে। শুধু তাই নয়, টিনের ঘর তৈরি করতে গেলে এখন দক্ষ শ্রমিক পাওয়াও সমস্যার। সেই সব কারণে বিষয়টি পুনর্বিবেচনার অপেক্ষায় বসে রয়েছে সকলেই। এখনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত উপর মহল থেকে আসেনি। সে জন্য মেলার কাজও এগোচ্ছে না। কারণ সকলেই নতুন নির্দেশের অপেক্ষায় রয়েছেন।
তবে জেলা প্রশাসনের তরফে অবশ্য জানানো হয়েছে, টিন না হলেও যাতে খুব দাহ্য নয়, এরকম কিছু সামগ্রী দিয়ে যদি মেলার বড় অংশে ছাউনি তৈরি করা যায়, বা কম করে রান্নাঘরগুলি তৈরি করা সম্ভব হয়। তবে তা কীসের হবে তা নিয়ে রবিবার পর্যন্ত কোনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি। সব মিলিয়ে পিছিয়ে চলেছে মেলায় তীর্থযাত্রীদের ছাউনি তৈরির কাজ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy