Advertisement
১৭ জুন ২০২৪

কলেজে ফের টিএমসিপি-র গোষ্ঠীকোন্দল

জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তিন বহিরাগত-সহ চারজনকে আটক করা হয়েছে। কলেজের সামনে পুলিশ পিকেট বসানো হয়েছে। একটি গেট বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।

গণ্ডগোল: অশোকনগরে।— ছবি: শান্তনু হালদার

গণ্ডগোল: অশোকনগরে।— ছবি: শান্তনু হালদার

নিজস্ব সংবাদদাতা
অশোকনগর শেষ আপডেট: ১৫ নভেম্বর ২০১৭ ০১:২২
Share: Save:

ফের প্রকাশ্যে এল তৃণমূল ছাত্র পরিষদের দুই গোষ্ঠীর গণ্ডগোল। মঙ্গলবার সকালে অশোকনগরের নেতাজি শতবার্ষিকী কলেজে বহিরাগত ঢোকা নিয়ে দু’পক্ষের মধ্যে ঝামেলা বাধে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশকে লাঠি চালাতে হয়।

পুলিশ জানিয়েছে, জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তিন বহিরাগত-সহ চারজনকে আটক করা হয়েছে। কলেজের সামনে পুলিশ পিকেট বসানো হয়েছে। একটি গেট বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।

পড়ুয়াদের অভিযোগ, মাঝে মধ্যেই কলেজে এমন ঝামেলা হচ্ছে। এতে পড়াশোনার ক্ষতি। অনেক পড়ুয়ার অনেকের কথায়, ‘‘রোজই ভয়ে ভয়ে থাকি। এই বুঝি মারপিট বাধল। এই বুঝি ক্লাস বন্ধ হয়ে গেল।’’

বস্তুত, কখনও কলেজ চত্বরে সাইকেল রাখাকে কেন্দ্র করে, কখনও ছাত্র সংসদের দখল নিয়ে বা নানা ছোটখাট বিষয়কে ঘিরে দু’দল ছাত্রের ঝামেলা, মারপিট বাধছে। এই সুযোগে বহিরাগতদেরও অবাধ গতিবিধি। বাইরে থেকে ছেলে ঢুকিয়ে যে যার ক্ষমতা দেখানো চলে।

মঙ্গলবার কী থেকে গোলমালের সূত্রপাত?

পুলিশ জানতে পেরেছে, এক গোষ্ঠীর পক্ষ থেকে কলেজ চত্বরে বহিরাগতদের ঢোকানো হয়েছিল। তাদের বের করে দেওয়ার দাবিতে কিছু ছাত্র মিছিল করে কলেজে ঢোকার চেষ্টা করে। ওই মিছিলেও বহিরাগত মুখ দেখা গিয়েছে বলে অভিযোগ তোলে বিরোধী পক্ষ। পুলিশ মিছিল ঢুকতে বাধা দেয়। রাস্তায় বসে স্লোগান দিতে শুরু করে তারা। পুলিশের সঙ্গে বচসায় জড়িয়ে পড়ে। শেষে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশকে লাঠি চালাতে হয়। উত্তেজনা ছড়ায় আশেপাশের এলাকাতেও।

কলেজের বহিরাগত ঢোকা বন্ধ করতে ইতিমধ্যেই পদক্ষেপ করা হয়েছে বলে দাবি অধ্যক্ষ সুধানাথ চট্টোপাধ্যায়ের। তাঁর কথায়, ‘‘কলেজ গেটে নিরাপত্তা কর্মী বসানো হয়েছে। আই-কার্ড দেখে কলেজে ঢোকানো হয়। কিন্তু নিরাপত্তা কর্মীদের উপেক্ষা করেও কেউ কেউ ঢুকে পড়ে।’’

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, ওই কলেজে ছাত্র সংগঠনের বিবাদ নতুন ঘটনা নয়। অতীতে সিপিএমের আমলেও ছাত্র সংগঠনের মধ্যে বিবাদ লেগে থাকত। রাজ্যে পালা বদলের পরেও পরিস্থিতি বদলায়নি। ছাত্র সংগঠনের সদস্যেরা নিজেদের মধ্যে মারামারি করলেও দলের পক্ষ থেকে বা ছাত্র সংগঠনের পক্ষ থেকে তা কড়া ভাবে বন্ধ করা হয় না বলে অভিযোগ। এমনকী, স্থানীয় রাজনৈতিক নেতা ও একাংশের জনপ্রতিনিধিরা দু’টি গোষ্ঠীকে পিছন থেকে মদত দিয়ে আসছেন বলেও দাবি পড়ুয়াদের একাংশের।

তৃণমূল ছাত্র পরিষদের রাজ্য সভানেত্রী জয়া দত্ত ওই কলেজের ছাত্রী ছিলেন। তিনি জানান, বহিরাগতদের বিষয়টি দলকে জানানো হবে। বিধায়ক ধীমান রায়ের কথায়, ‘‘এখন থেকে কলেজে বহিরাগত ঢোকা আর বরদাস্ত করা হবে না।’’ অশোকনগর-কল্যাণগড়ের পুরপ্রধান প্রবোধ সরকার বলেন, ‘‘কলেজ গোলমালের জায়গা নয়। যারা অশান্তি পাকাচ্ছে, তাদের বিরুদ্ধে পুলিশকে ব্যবস্থা নিতে বলেছি।’’ এ দিনের ঘটনায় কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন, তৃণমূলের জেলা সভাপতি জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। তিনি বলেন, ‘‘কেউ গোলমাল বাধালে ছাড় পাবে না। পুলিশকে বলেছি, রঙ না দেখে কড়া পদক্ষেপ করতে। দলীয় ভাবেও ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।’’

তবে সাধারণ পড়ুয়ারা জানিয়েছেন, এমন প্রতিশ্রুতি আগেও মিলেছে। কিছু দিন চুপ থাকার পরে ফের কলেজ অশান্ত হয়ে ওঠে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Ashoknagar college TMCP group clash
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE