কিছুক্ষণের মধ্যেই এদের ঠাঁই হবে খাবার থালায়। নিজস্ব চিত্র।
বন দফতরের তরফে কচ্ছপ ধরা এবং কচ্ছপের মাংস বিক্রিতে নিষেধাজ্ঞা জারি থাকলেও কচ্ছপের মাংস দেদার বিক্রি হচ্ছে কাকদ্বীপের নানা বাজারে। দাম, ৩৫০ টাকা কেজি। চাহিদাও বেশ চড়া, জানাচ্ছেন বিক্রেতারা।
দরদাম নিয়ে প্রশ্ন করতে প্রশ্নকর্তাকে অবশ্য প্রথমে ভাল করে মেপে নিলেন কচ্ছপ বিক্রেতা। খদ্দের আবার পুলিশ, বন দফতর বা পরিবেশপ্রেমী সংগঠনের সদস্য নন তো, নিশ্চিত হয়েই তবেই মুখ খুললেন ব্যবসা নিয়ে।
রাজ্য সরকারের বন্যপ্রাণ সংরক্ষণ আইনে কচ্ছপ ধরলে কিংবা বিক্রি করলে জরিমানা-সহ কঠোর আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার উপায় রয়েছে। কিন্তু সেই আইনকে বুড়ো আঙুল দেখিয়েই চলছে বেআইনি বিক্রিবাট্টা।
দিন কয়েক আগে কাকদ্বীপের পাল বাজারে গিয়ে দেখা গেল, দু’জন মৎস্যজীবী মাছের সঙ্গেই বিক্রি করছেন ৮০০-৯০০ গ্রামের কচ্ছপ। ‘‘কচ্ছপ বিক্রি নিষিদ্ধ সেটা জানেন?’’ এই প্রশ্নের পরে আমতা আমতা করে বিক্রেতা দাবি করলেন, ‘‘আমরা খুব একটা বিক্রি করি না। কিন্তু কচ্ছপের জন্য অনেকেই বলে রাখেন। কয়েকটি পেয়েছিলাম। তাই এনেছি।’’ শুধু পাল বাজার নয়, বামুনের মোড়, বাসন্তী ময়দানের কাছেও দেদার বিক্রি হচ্ছে কচ্ছপ। মৎস্যজীবীরা জানালেন, ছোট আকারের ধূসর রঙের ওই কচ্ছপগুলি সাধারণত মিষ্টি জলের পুকুর এবং দিঘিতে জন্মায়। বর্ষায় পুকুর ভরে গেলে সেগুলি উপরে উঠে আসে। তখনই সেগুলি ধরা হয়।
বন দফতরের কর্তারা জানান, ছোট কচ্ছপগুলি পুকুর, দিঘির কাদা, পাঁক খেয়ে জল পরিষ্কার রাখে। জীব বৈচিত্র্যে এদের গুরুত্ব অনেক। কাকদ্বীপ মহকুমার অনেকেই পেট খারাপ হলে কচ্ছপের মাংস খান। কিন্তু সেটির কোনও বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই বলে জানাচ্ছেন বন্যপ্রাণ সংরক্ষণ পর্ষদের কর্তারা।
রাজ্যের বন্যপ্রাণ সংরক্ষণ উপদেষ্টা পর্ষদের সদস্য বিশ্বজিৎ রায়চৌধুরী বলেন, ‘‘কলকাতা-লাগোয়া জেলাগুলিতে বিশেষ করে মেদিনীপুর, হুগলি, উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা থেকে ছোট কচ্ছপ বিক্রির অভিযোগ আমাদের কাছে এসেছে। কচ্ছপের বিক্রি বন্ধে বন দফতরের নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। তবে রেঞ্জ অফিসগুলিকে আরও কড়া হতে হবে। না হলে কয়েক বছর পরে কচ্ছপ বিলুপ্ত হয়ে যেতে পারে।’’
বন দফতরের নামখানার রেঞ্জার আবুল কালাম বলেন, ‘‘আমরা নিয়মিত ভাবে বাজারগুলিতে নজরদারি করছি। ছোট কচ্ছপ বিক্রি হচ্ছে বলে আমাদের কাছে খবর নেই। তা-ও বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy