Advertisement
E-Paper

বিরহিণী যাচ্ছে প্রিয়তমের কাছে

বিরহিণীর এই অবস্থা দেখে জো়ড় মেলাতে এগিয়ে আসেন এলাকার বাসিন্দারাই। স্থানীয় বাসিন্দা নুর ইসলাম মণ্ডলের মুরগি খামারে পেতে রাখা খাঁচায় পুরুষ বনবিড়ালটি ধরা পড়েছিল। গ্রামবাসীরা সিদ্ধান্ত নেন, স্ত্রী বনবিড়ালটিকেও ওখানেই ফাঁদ পেতে ধরা হবে। পৌঁছে দেওয়া হবে তার সঙ্গীর কাছে। 

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৪ ডিসেম্বর ২০১৮ ০১:২৪
আটক: ধরা পড়া স্ত্রী বনবিড়াল। ছবি: সজলকুমার চট্টোপাধ্যায়

আটক: ধরা পড়া স্ত্রী বনবিড়াল। ছবি: সজলকুমার চট্টোপাধ্যায়

প্রিয়তমকে পাওয়া যাচ্ছে না। বিপদ তুচ্ছ করে আকুল প্রিয়া তিন দিন ধরে হন্যে হয়ে খুঁজে চলেছে তাকে।

প্রিয়ার এই আকুতি অবশ্য কানে যায়নি তার মরদের। খাবার সংগ্রহে গিয়ে আপাতত তার কপালে জুটেছে হাজতবাস।

বিরহের এই কাহিনির নায়ক-নায়িকাকে অবশ্য রবিবার মিলিয়ে দিয়েছেন দেগঙ্গার পশ্চিম চ্যাংদানা মাঝেরপাড়ার বাসিন্দারা। তাঁদের চেষ্টায় ফের এক হচ্ছে এই বনবিড়াল দম্পতি। গত বৃহস্পতিবার এই এলাকার একটি খামারে মুরগি ধরতে এসে ফাঁদে আটকা পড়েছিল হুলো বনবিড়ালটি। তাকে তুলে দেওয়া হয়েছিল বনদফতরের হাতে। তার পর থেকে এলাকায় ঘোরাঘুরি করছিল মেনিটি। মুরগি খাওয়ায় রুচি নেই তার। তার আচরণ দেখে বাসিন্দাদের মনে হয়েছিল, সে যেন মুরগির খোঁজ করছে না, খুঁজে বেড়াচ্ছে হারিয়ে যাওয়া সঙ্গীকে। তাঁদের কথায়, পুরুষ বনবিড়ালটি ধরা পড়ার পর থেকেই স্ত্রী বনবিড়ালটিকে ওই এলাকায় রোজ আসতে দেখা যাচ্ছিল। স্থানীয় যুবক মেহেরাব ইসলামের কথায়, ‘‘বনবিড়াল সাধারণত রাতে মুরগি চুরি করতে আসে। কিন্তু স্ত্রী বনবিড়ালটিকে এ ক’দিনের মধ্যে দিনের বেলাতেও এলাকায় ঘুরতে দেখা যাচ্ছিল।’’ গ্রামবাসীদের বক্তব্য, বনবিড়াল সব সময় জোড়ায় জোড়ায় থাকে। বিপদ তুচ্ছ করে মরদকে তাই খুঁজছে স্ত্রী বনবিড়ালটি।

বিরহিণীর এই অবস্থা দেখে জো়ড় মেলাতে এগিয়ে আসেন এলাকার বাসিন্দারাই। স্থানীয় বাসিন্দা নুর ইসলাম মণ্ডলের মুরগি খামারে পেতে রাখা খাঁচায় পুরুষ বনবিড়ালটি ধরা পড়েছিল। গ্রামবাসীরা সিদ্ধান্ত নেন, স্ত্রী বনবিড়ালটিকেও ওখানেই ফাঁদ পেতে ধরা হবে। পৌঁছে দেওয়া হবে তার সঙ্গীর কাছে।

সেই খামারেই শনিবার রাতে ফাঁদ পেতে ধরা হয়েছে স্ত্রী বনবিড়ালটিকে। রবিবার সেটিকে বন দফতরের কর্মীদের হাতে তুলে দিয়ে গ্রামবাসীরা তাঁদের অনুরোধ করেছেন, পুরুষ বনবিড়ালটিকে যেখানে ছাড়া হয়েছে, স্ত্রীটিকেও যেন সেখানেই ছাড়া হয়। বন দফতরের কর্মীরা জানিয়েছেন, হুলোটিকে আপাতত সল্টলেকে রাখা হয়েছে। মেনিটিকেও সেখানে রাখা হবে। পরে তাদের নিরাপদ জায়গায় ছেড়ে দেওয়া হবে। শুনে আশ্বস্ত হয়েছেন গ্রামবাসীরা।

এলাকার মানুষ জানিয়েছেন, বনবিড়াল এখন গ্রামে-গঞ্জে বিশেষ দেখা যায় না। জীববৈচিত্র নিয়ে কাজ করা বিভিন্ন সংস্থার এই নিয়ে

এলাকায় প্রচারও করা হয়েছে। সেই কারণে গ্রামবাসীরা বনবিড়ালটি না মেরে বন দফতরের হাতে তুলে দিয়েছিলেন। এ বার স্ত্রীটিকে তুলে দিলেন তার সঙ্গীর কাছে।

Wild Cat Deganga
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy