Advertisement
E-Paper

জমি নিয়ে বিবাদে বন্ধ শিশু শিক্ষাকেন্দ্রের কাজ

শিশুদের স্কুলের জন্য জমি দান করেছিলেন এক ব্যক্তি। মৃত্যুর পরে স্কুলবাড়ি তৈরির কাজও শুরু হয়েছিল। কিন্তু এলাকারই অন্য একটি পরিবারের বাধায় তা শেষ পর্যন্ত বন্ধ হয়ে যায়। সে কারণে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী, জেলা ও মহকুমাশাসক, বিডিও এবং বিভিন্ন দফতরের কাছে লিখিত অভিযোগ জানালেন জমিদাতার পরিবার।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৭ মার্চ ২০১৫ ০২:৪১
শুরু হয়েও থমকে উদ্যোগ। —নিজস্ব চিত্র।

শুরু হয়েও থমকে উদ্যোগ। —নিজস্ব চিত্র।

শিশুদের স্কুলের জন্য জমি দান করেছিলেন এক ব্যক্তি। মৃত্যুর পরে স্কুলবাড়ি তৈরির কাজও শুরু হয়েছিল। কিন্তু এলাকারই অন্য একটি পরিবারের বাধায় তা শেষ পর্যন্ত বন্ধ হয়ে যায়। সে কারণে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী, জেলা ও মহকুমাশাসক, বিডিও এবং বিভিন্ন দফতরের কাছে লিখিত অভিযোগ জানালেন জমিদাতার পরিবার।

অভিযোগ, স্কুলবাড়ির ভিত খোঁড়ার কাজ হয়ে গেলেও কেবলমাত্র রাজনৈতিক কাজিয়ার জেরেই কাজ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। দেগঙ্গার সোহাই শ্বেতপুর পঞ্চায়েতের বড়বিশ্বেশ্বরপুর গ্রামে এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে দু’পক্ষের মধ্যে রীতিমতো উত্তেজনার দানা বেঁধেছে। গ্রামের একাংশের বক্তব্য, শিশুশিক্ষা কেন্দ্রটি তৈরি হলে গ্রামের বহু ছেলেমেয়ে উপকৃত হবে। এ নিয়ে কাজিয়া তাঁরা একেবারেই ভাল চোখে দেখছেন না।

প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, কয়েক বছর আগে দেগঙ্গার বড়বিশ্বেশ্বরপুর গ্রামের বাসিন্দা রবীন্দ্রনাথ রবীন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায় অঙ্গনওয়াড়ি শিশু শিক্ষাকেন্দ্রের জন্য তিন শতক জমি দান করেছিলেন। গত লোকসভা নির্বাচনের আগে রাজ্য সরকারের তরফে সেই জমিতে স্কুল বাড়ি নির্মাণের জন্য ৬ লক্ষ ৮৫ হাজার টাকার অনুমোদন মেলে। কাজের বরাত পান ঠিকাদার সহিদুল ইসলাম। সহিদুল বলেন, “ভিত খোঁড়া ও ইট ফেলার কয়েক দিন পরে গ্রামের কয়েক জন সেখানে স্কুলবাড়ি তৈরির কাজ বন্ধ রাখার জন্য দেগঙ্গার বিডিওর কাছে দাবি জানায়। সেই মতো কাজ বন্ধ হয়ে যায়।”

কেন স্কুলবাড়ি তৈরির কাজ বন্ধ করা হল?

মৃতের ছেলে তাপস মুখোপাধ্যায়, নাতি তন্ময় মুখোপাধ্যায় জানান, ছেলেমেয়েদের স্কুলে আসার একটি মাত্রই পথ। ওই পথটি তাঁদের জমির মধ্যে পড়ছে। তার নথিপত্রও আছে। কিন্তু তা সত্ত্বেও বাসুদেব মুখোপাধ্যায় নামে এলাকার এক বাসিন্দা সেটি নিজের জমি বলে দাবি করেন। ওই পথ দিয়ে স্কুলে আসা সম্ভব নয় বলে তিনি জানান। সে কারণে প্রশাসন থেকে স্কুলের কাজ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে বলে তাপসবাবুর অভিযোগ। তন্ময়বাবু বলেন, “মূল কারণ হল, আমরা বাম সমর্থক। আর ওরা তৃণমূল করেন।” দেগঙ্গার বিডিও মানসকুমার মণ্ডল বলেন, “স্কুলে আসার রাস্তা নেই এমন জায়গায় স্কুল হলে ছাত্রছাত্রীরা আসতে পারবে না। ফলে অন্যত্র স্কুল করার জন্য আবেদন পেয়েছি। সে কারণে কাজ বন্ধ রেখে জমির রাস্তার বিষয়টি খতিয়ে দেখতে তদন্ত শুরু হয়েছে।”

রবীন্দ্রনাথবাবুর স্ত্রী সবিতাদেবী বলেন, “প্রাথমিক স্কুল ছেড়ে শিশুরা যাতে নিজেদের স্কুল বাড়িতে ক্লাস করতে পারে, সে জন্য জমি দিয়েছিলেন আমার স্বামী। প্রশাসনের সব স্তরে এমনকী, মুখ্যমন্ত্রীর কাছেও আমাদের আবেদন, শিশুদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান‌ তৈরি নিয়ে রাজনীতি বন্ধ হোক।”

রাজনীতির কথা উড়িয়ে দিয়ে ওই গ্রামের বাসিন্দা বাসুদেব মুখোপাধ্যায়, কান্তিলাল মুখোপাধ্যায় বলেন, “স্কুলের জন্য যে জমিটি দেওয়া হয়েছে, সেখানে যাওয়ার আদৌ কোনও রাস্তা নেই। বাম জমানায় আমাদের কাছ থেকে জোর করে, অন্যায় ভাবে রাস্তা লিখিয়ে নেওয়া হয়েছিল। স্কুলে যাওয়ার কোনও পথ না থাকায় ওখানে স্কুল হলে কোনও ছাত্রছাত্রী যেতে পারবে না। সে কথা লিখিত ভাবে বিডিওকে বলা হয়েছে। এর সঙ্গে কোনও রকম রাজনীতির যোগ নেই।”

তাপসবাবু, তন্ময়বাবুদের বক্তব্য, গ্রামের উন্নয়নে এবং এক বৃদ্ধের শেষ ইচ্ছা পূরণ করতে জমি নিয়ে জটিলতা বন্ধ রেখে স্কুলবাড়ি নির্মাণ করা হোক।” এ বিষয়ে দেগঙ্গা পঞ্চায়েত সমিতির বাম সদস্য আবদুল ওহিদ বলেন, “কেন ওখানে এমন হচ্ছে তা দেখছি। তবে উন্নয়নের ক্ষেত্রে কোনও রাজনীতির রং দেখা উচিত নয়।” সোহাই শ্বেতপুর পঞ্চায়েতের যুব তৃণমূল সভাপতি রবিউল ইসলাম মুকুল বলেন, “ওখানে জমি জটের বিষয়টি শীঘ্র মিটিয়ে স্কুলবাড়ি নির্মাণের কাজ শুরু করার চেষ্টা চলছে।”

southbengal Mamata bandopadhyay trinamool tmc school money west bengal
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy