স্কুলের উন্নয়নের টাকা বরাদ্দ হয়েছে। কার হাত দিয়ে তা খরচ হবে, তা নিয়ে কাজিয়া বাধে। মিড ডে মিলের রান্নার দায়িত্ব কোন গোষ্ঠীর হাতে থাকবে, তা নিয়ে প্রধান শিক্ষক এবং স্কুল পরিচালন সমিতির সদস্যদের মধ্যে মতানৈক্যে উন্নয়নের কাজ শিকেয় ওঠে। এমনকী, স্কুলের প্রধান শিক্ষকের ব্যবহারে খুশি না হয়ে তাঁর সহকর্মীরাই বিদ্রোহ ঘোষণা করে বসেন কখনও সখনও। যার প্রভাব পড়ে স্কুলের উন্নয়ন থেকে ছাত্রছাত্রীদের পঠনপাঠনের ক্ষেত্রেও।
এ সব সমস্যার সমাধানে এগিয়ে এসেছে রাজ্য সরকার। বাছাই করা প্রধান শিক্ষকদের সঙ্গে এ সব নিয়ে আলোচনার জন্য কর্মশালার আয়োজন হল রাষ্ট্রীয় মাধ্যমিক শিক্ষা অভিযানের উদ্যোগে। রাজ্যের সরকারের শিক্ষা দফতর ও শিক্ষক প্রশিক্ষকদের পরিচালনায় কলকাতা ও দক্ষিণ ২৪ পরগনার বাছাই করা ২৫টি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক-শিক্ষিকাদের নিয়ে জয়নগরের একটি কলেজে চার দিনের কর্মশালা শেষ হয়েছে শুক্রবার। প্রধান শিক্ষকদের প্রশিক্ষক ছিলেন সংসদের মহা নির্দেশক ছন্দা রায়, দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা প্রাথমিক শিক্ষক প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের অধ্যক্ষ মধুসূদন কয়াল এবং উত্তর ২৪ পরগনা জেলা প্রাথমিক শিক্ষক প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ কাজি আইনাল হক।
কর্মশালায় মূলত উঠে আসে কয়েকটি বিষয়। বলা হয়েছে, বিদ্যালয়ের পরিচালন সমিতি, ছাত্রছাত্রী, শিক্ষক-শিক্ষিকা, অভিভাবক এবং জনসংযোগের বিষয়ে নেতৃত্ব দেবেন প্রধান শিক্ষকেরাই। এ ছাড়া নতুন নতুন পদ্ধতি এবং প্রযুক্তির মাধ্যমে ছাত্রছাত্রীদের বিকাশ ঘটানোর দিকেও প্রধান শিক্ষক-শিক্ষিকাদের নজরদারি চালাতে হবে। চিরাচরিত ভাবনার পরিবর্তন করে আধুনিক শিক্ষার প্রসার ঘটাতে হবে। সকলকে নিয়ে নানা স্কুলের কাজে যোগ দিতে হবে।
কর্মশালায় বলা হয়েছে, স্কুলের যাবতীয় তথ্য অনলাইনের মাধ্যমে সকলকে জানানোর পাশাপাশি সরকারি সাহায্যের যে সমস্ত আর্থিক অনুদান অন ইনে জানানো হয়, সে বিষয়ে খেয়াল রাখতে হবে।
শিক্ষা দফতর সূত্রে জানানো হয়েছে, কর্মশালায় কলকাতা জেলার ৪টি ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার ২১ স্কুলের প্রধান শিক্ষক-শিক্ষিকারা এসেছিলেন। প্রশিক্ষিত প্রধান শিক্ষক-শিক্ষিকারা দক্ষিণ ২৪ পরগনার ১২০০, উত্তর ২৪ পরগনার ১১০০ এবং কলকাতার সাড়ে ৩০০ স্কুলের প্রধান শিক্ষক-শিক্ষিকাদের পর্যায়ক্রমে প্রশিক্ষণ দেবেন। প্রশিক্ষকেরা তিন জেলার বাকি সমস্ত স্কুলে পরিদর্শন করবেন। জাতীয় শিক্ষা নিয়ামক কাউন্সিল (এনসিটিই) নির্দেশিকা অনুযায়ী বিদ্যালয়গুলি চলছে কিনা, তা নিয়ে বিস্তারিত রিপোর্ট সংগ্রহ করে পাঠাবেন শিক্ষা দফতরের কাছে।
কর্মশালায় ছিলেন মথুরাপুরের কৃষ্ণচন্দ্রপুর হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক চন্দন মাইতি, কাকদ্বীপ শিক্ষায়তন হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক প্রদীপ প্রামাণিক, দেবনগর হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক উৎপল দাস।
চন্দনবাবু বলেন, ‘‘অনভিপ্রেত অনেক পরিস্থিতি এড়ানোর পদ্ধতি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। এরপর থেকে প্রধান শিক্ষক-শিক্ষিকাদের নিজের নিজের স্কুলে নেতৃত্ব দিতে সুবিধা হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy