Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
Ya ba

বেড়েছে পাচার, ইয়াবার নেশায় বুঁদ বহু তরুণ

সীমান্ত এলাকার বাসিন্দারা জানালেন, যে পরিমাণ ইয়াবা ঢুকছে সেই তুলনায় উদ্ধার হচ্ছে খুবই কম।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা 
বনগাঁ শেষ আপডেট: ১৮ ডিসেম্বর ২০২০ ০২:৫৭
Share: Save:

করোনা পরিস্থিতি ও লকডাউনে সীমান্তে বেড়েছে বিএসএফ ও পুলিশের নজরদারি। এর ফলে গরু পাচার, বাইক পাচার, বেআইনি মানুষ পারাপার কমেছে। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে বনগাঁ ও বসিরহাট মহকুমার সীমান্ত এলাকা দিয়ে বেড়ে গিয়েছে রুপোর গয়না ও ইয়াবা ট্যাবলেট পাচার। রূপোর গয়না এদেশ থেকে বাংলাদেশে পাচার হচ্ছে। ইয়াবা ট্যাবলেট ওদেশ থেকে পাচার হচ্ছে এদেশে।

কয়েক মাস আগে বিএসএফ গাইঘাটার ডোবরাপাড়া এলাকা থেকে ইয়াবা ট্যাবলেট-সহ পাচারকারীকে আটক করেছিল। তার কাছ থেকে ৬ হাজার ৫০০টি ট্যাবলেট উদ্ধার হয়েছে। যার আন্তর্জাতিক মূল্য প্রায় ১৯ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা। ফেনসিডিল-এর মতো মাদকের পর এবার ইয়াবার নেশায় আসক্ত হতে শুরু করেছে সীমান্ত এলাকায় বসবাসকারী যুবসমাজের একাংশ। বিএসএফ ও পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, বাংলাদেশ থেকে চোরাপথে এদেশে ঢুকেছে ইয়াবা। তারপর তা ছড়িয়ে পড়ছে বিভিন্ন এলাকায়। নেশার উপকরণ হিসেবে জনপ্রিয় হচ্ছে ওই ট্যাবলেট। কারবারিরা কলেজ পড়ুয়াদেরও টার্গেট করেছে। স্থানীয় সূত্রে জানা গেল, বাগদা, গাইঘাটা, বনগাঁ এলাকায় ইয়াবার নেশা করতে শুরু করেছে কিছু যুবক। কারবারিরা গোপনে ট্যাবলেট পৌঁছে দিচ্ছে নেশায় আসক্ত যুবকদের কাছে।

কী এই ইয়াবা? স্থানীয় সূত্রের খবর, মায়ানমারে এটি তৈরি হয়। মায়ানমার থেকে বাংলাদেশ হয়ে তা এদেশে ঢুকেছে। মূলত মেথাঅ্যাম্ফিটামিন ও ক্যাফেইন মিশ্রিত। ইয়াবা সাময়িক ভাবে যৌন উত্তেজনা বাড়ায়। শরীর মন তরতাজা হয়। কিন্তু ইয়াবা নিয়মিত খেলে যৌন উত্তেজনা হ্রাস পায়। এই নেশা করে টানা ৭-১০ দিন রাত জেগে থাকা যায়। সূত্রের খবর, মায়ানমারে শান্ত ঘোড়াগুলোকে ক্ষিপ্ত করে তুলতে ইয়াবা খাওয়ানো হয়। কথিত আছে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় সৈন্যরা ওই নেশা করত। নিয়মিত ইয়াবার নেশা করলে শারীরিক কী ধরনের সমস্যা হতে পারে? চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ, ঘুম কমে যাওয়া, ফুসফুস ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। ওই নেশার ফলে হতাশা গ্রাস করে ও আত্মহত্যার প্রবণতা বেড়ে যায়। বাংলাদেশ থেকে আসা ইয়াবা সাইজ অনুযায়ী বিভিন্ন দামে বিক্রি হচ্ছে এদেশে। খুব ছোট সাইজের ইয়াবা বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকায়। একটু বড় সাইজের ইয়াবার দাম ৩০০ টাকা।

সীমান্ত এলাকার বাসিন্দারা জানালেন, যে পরিমাণ ইয়াবা ঢুকছে সেই তুলনায় উদ্ধার হচ্ছে খুবই কম। হাতেনাতে কেন সে ভাবে ধরা যাচ্ছে না? পুলিশ ও বিএসএফ এর বক্তব্য, নির্দিষ্ট তথ্য ছাড়া ইয়াবা ধরা কঠিন। কারণ প্যান্টের পকেট, ছোট ব্যাগে করে বা অন্য নানা উপায়ে সহজেই ইয়াবা নিয়ে আসা সম্ভব। বাংলাদেশ থেকে চোরাপথে নিয়ে আসা খুব সহজ ও লাভজনক এবং ধরা পড়ার সম্ভবনা কম বলে পাচারকারীরাও ইয়াবার কারবারে আগ্রহী হচ্ছে। গরু, মোষ, বাইক পাচারকারীরা এখন বিকল্প হিসেবে বেছে নিয়েছে ইয়াবা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Ya ba consumption smuggling
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE