পিনাকীবাবুর বাড়িতে লুঠপাটের পরে। নিজস্ব চিত্র।
প্রায় প্রতিদিনই চুরি-ছিনতাইয়ের মতো ঘটনা ঘটছে বসিরহাটে। অথচ দুষ্কৃতীরা ধরা পড়ছে না কেউ। তার জেরে নিরাপত্তা ও পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বাসিন্দারা।
রবিবার সকালে বসিরহাটের সাঁইপালার বাসিন্দা পিনাকী বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়িতে লুঠ চালিয়ে পালায় দুষ্কৃতীরা। তবে বাসিন্দারা দেখে ফেলায় বিশেষ জিনিসপত্র নিয়ে যেতে পারেনি তারা। তবে তছনছ করেছে ঘর। গত রবিবারও পিনাকীবাবুর প্রতিবেশী, চিকিৎসক সমীর বন্দ্যোপাধ্যয়ের বাড়িতে একই ভাবে চুরির ঘটনা ঘটে। সমীরবাবু বলেন, “দুষ্কৃতীরা নগদ বেশ কয়েক হাজার টাকা এবং পিতলের-বাসন সহ বেশ কিছু জিনিস নিয়ে পালিয়েছে। পুলিশে অভিযোগ করলেও কোনও সুরাহা হয়নি।” শুক্রবার রাতেও বসিরহাটের দন্ডিরহাট বাজারে নিখিল নন্দীর দোকানের শাটার ভেঙে নগদ প্রায় ৫০ হাজার টাকা ও ৩০ হাজার টাকা মূল্যের অন্যান্য জিনিসপত্র লুঠ হয়েছে।
গত দেড় সপ্তাহে প্রায়ই এমন ঘটনায় রাস্তায় বেরোনো কার্যত অসম্ভব হয়ে পড়েছে বাসিন্দাদের পক্ষে। বাড়িতে চুরি ছাড়াও রাস্তায় রয়েছে বাইক-বাহিনীর উপদ্রব। রাস্তা ঘাটে মোটরবাইক আরোহী দুই দুষ্কৃতী ঘটনাগুলি ঘটাচ্ছে বলে অভিযোগ।
গত বুধবার রাত ১১টা নাগাদ চৌমাথা থেকে ভ্যাবলা স্টেশনের দিকে হেঁটে বাড়ি ফিরছিলেন ব্যবসায়ী দিলীপ বিশ্বাস। মাঝরাস্তায় মোটরবাইক আরোহী দুই দুষ্কৃতী তার গলা থেকে হার ছিনতাই করে পালায়। গত শুক্রবারও ওই সময়ে মনোহারি দোকান বন্ধ করে, টাকার ব্যাগ নিয়ে আরএন মুখার্জী রোড দিয়ে বাড়ি ফিরছিলেন ব্যবসায়ী ফজলুল বারী। সারা দিনের বিক্রির প্রায় সাতচল্লিশ হাজার টাকা ছিল তাতে। দুই মোটরবাইক আরোহী সেই ব্যাগ ছিনিয়ে নিয়ে পালায়। সম্প্রতি চৌমাথার এক ওষুধ-ব্যবসায়ীর কাছ থেকে বেশ কয়েক হাজার টাকা ছিনতাই করা হয়েছে।
গত মঙ্গলবার রাত ৮টা নাগাদ রাতের ট্রেনে বসিরহাট স্টেশনে স্ত্রী সুতপাদেবীকে নিয়ে ভ্যান রিকসায় বাড়ি ফিরছিলেন বসিরহাটের নৈহাটির বাসিন্দা শিক্ষক তপন ঘোষ। ভ্যানরিকসাটি এসএন মজুমদার রোড দিয়ে গিয়ে মুনসীবাগান ছাড়াতেই মোটরবাইক আরোহী দুই দুষ্কৃতীর পাল্লায় পড়েন তাঁরাও। রিক্সা এগোতেই সুতপাদেবীর ব্যাগ ধরে টান মারে এক জন। রাস্তায় পড়ে যান তিনি। তাঁর হাত থেকে ব্যাগটি ছিনিয়ে নিয়ে পালায় তারা। স্ত্রীকে বাঁচাতে গিয়ে পড়ে যান তপনবাবুও। ব্যাগে বেশ কয়েক হাজার টাকা, সোনার গয়না, ভোটার কার্ড, প্যান কার্ড ছিল। রাতেই থানায় অভিযোগ জানান তাঁরা। একই ভাবে বসিরহাট ইছামতী সেতু, তিন নম্বর কলোনি, মাটিনবান এবং বড় জিরাফপুর রোডে প্রায়ই ছিনতাই হচ্ছে। খবর পাওয়ার পরে থানা থেকে এলাকাতে দু’এক দিনের জন্য পুলিশি টহল চলছে। কিন্তু দুষ্কৃতীদের কেউ ধরা পড়ছে না।
দিনের পর দিন এমন ঘটনায় আতঙ্কিত ব্যবসায়ী থেকে শহরবাসী। চৌমাথা এলাকার ব্যবসায়ী শেখ রফিকুল্লা, শেখ রাসিদুল্লা, সরফরাজ আলি রাজ বলেন, “শহরবাসী তো আতঙ্কিতই। ব্যবসায়ীরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। অনেক ব্যবসায়ী রাতে বেরোতে চাইছেন না। অবিলম্বে ওই দুষ্কৃতীদের গ্রেফতার করা জরুরি।” পুলিশ জানায়, সব ক’টি ঘটনারই তদন্ত চলছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy