Advertisement
E-Paper

টিএমসিপি-র দুই গোষ্ঠীর টক্কর বাগদার কলেজে

দুই গোষ্ঠীর বিবাদ মেটাতে ব্যর্থ নেতারা বলেই দিয়েছিলেন, যে জিতবে, তারা আগ মার্কা তৃণমূল ছাত্র পরিষদ। ব্যস, আর যায় কোথায়! বাগদার বিআর অম্বেডকর কলেজের ছাত্র সংসদের ভোটে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের দুই গোষ্ঠী পৃথক দু’টি প্যানেল দিয়ে বসে ২৬টি আসনের সব ক’টির জন্যই।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ৩০ জানুয়ারি ২০১৫ ০১:৫১
হাবরা শ্রীচৈতন্য কলেজে জয়ের পরে উল্লসিত তৃণমূল ছাত্র পরিষদ শিবির। ছবি: শান্তনু হালদার।

হাবরা শ্রীচৈতন্য কলেজে জয়ের পরে উল্লসিত তৃণমূল ছাত্র পরিষদ শিবির। ছবি: শান্তনু হালদার।

দুই গোষ্ঠীর বিবাদ মেটাতে ব্যর্থ নেতারা বলেই দিয়েছিলেন, যে জিতবে, তারা আগ মার্কা তৃণমূল ছাত্র পরিষদ। ব্যস, আর যায় কোথায়! বাগদার বিআর অম্বেডকর কলেজের ছাত্র সংসদের ভোটে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের দুই গোষ্ঠী পৃথক দু’টি প্যানেল দিয়ে বসে ২৬টি আসনের সব ক’টির জন্যই। ২৩টি আসনে লড়ছে এসএফআই। টিএমসিপি-র গোষ্ঠী কোন্দলের সুফল তাদের পকেটে জেতে পারে, এই আশায় ছিল তারা। যদিও ভোটের ফল প্রকাশের পরে দেখা যায়, তৃণমূল ছাত্র পরিষদেরই এক গোষ্ঠী জয়ী হয়েছে।

বাগদায় শাসক দলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব বহু বার প্রকাশ্যে এসেছে। কলেজ ভোটেও যে বাইরের নেতাদের দলাদলি প্রভাব ফেলবে, তা স্পষ্ট হচ্ছিল গত কয়েক দিন ধরেই। বুধবার, ভোটের আগের রাতে পোস্টার-ব্যানার লাগানোর ঘটনাকে কেন্দ্র করে তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর মধ্যে মারপিট বাধে এলাকায়। হেলেঞ্চা বাজারে ওই ঘটনায় পুলিশ লাঠি চালিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেয়। দু’পক্ষেরই অভিযোগ, বহিরাগতরা ঢুকে গোলমাল পাকিয়েছে।

এ দিন সকালে কলেজের সামনে কড়া নিরাপত্তা ছিল। পুলিশ-র্যাফ-কমব্যাট ফোর্স নামানো হয়েছিল। বনগাঁর এসডিপিও বিশ্বজিৎ মাহাতো নিজেও ছিলেন সেখানে। আই-কার্ড ছাড়া কাউকে কলেজের ভিতরে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। টিএমসিপি-র দুই গোষ্ঠীই কলেজের বাইরে আলাদা ক্যাম্প করেছিল। সেখানে তৃণমূলের স্থানীয় নেতা-নেত্রীরাও ভিড় করেছিলেন। ভোটারদের শেষ মুহূর্তে প্রভাবিত করার মরিয়া চেষ্টা দেখা গিয়েছে দু’পক্ষের মধ্যেই। কলেজ সূত্রের খবর, ১২৮৮ জন ভোটারের মধ্যে ভোট দিয়েছেন মাত্র ৭৭৯ জন। অনেকেই গোলমালের ভয়ে ভোট দিতে আসেননি বলে জানিয়েছেন।

ভোটের কয়েক দিন আগেও এই কলেজে গোলমাল ছড়িয়েছিল তৃণমূল ছাত্র পরিষদের দুই গোষ্ঠীর মধ্যে। যাদের পিছনে আবার শাসক দলের স্থানীয় বড় নেতারাই মদত দেন বলে বরাবরের অভিযোগ। ওই ঘটনার পরে টিএমসিপির ব্লক কমিটি ইউনিট ভেঙে দেন সংগঠনের উত্তর ২৪ পরগনা জেলা সভাপতি কালাম মণ্ডল। এ দিন ভোটে দুই গোষ্ঠীর বিরোধ নিয়ে জেলা টিএমসিপি নির্বাচন কমিটির চেয়ারম্যান সঞ্জয় রাহা বলেন, “দু’তরফের সমস্যা মেটাতে কয়েক বার বৈঠক হয়েছিল। কিন্তু ভিপি পদটি নিয়ে জটিলতা না কাটায় দু’পক্ষের কাজিয়া মেটানো যায়নি।” সংগঠনের একটি সূত্র জানাচ্ছে, বিবাদ মেটাতে না পেরে এক রকম হাল ছেড়ে দিয়েছিলেন নেতারা। তাঁরা জানিয়ে দেন, যে প্যানেল জয়ী হবে, তারাই প্রকৃত প্যানেল বলে ধরা হবে।

তৃণমূলের বাগদা ব্লক সভাপতি দিলীপ ঘোষের বক্তব্য, “যে প্যানেল তৈরি হয়েছিল, দেখলাম তার উল্টো আর একটা প্যানেল জমা পড়ে গেল। আমাদের প্যানেল পরাজিত হলেও হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হয়েছে। এটা প্রমাণ হয়ে গিয়েছে, আমাদের ছাড়া বাগদায় দল চালানো যাবে না।” অন্য দিকে, বিরোধী গোষ্ঠীর নেতা অঘোর হালদার বলেন, “আমরাই প্রকৃত প্যানেল দিয়েছিলাম। জয়ীও হয়েছি।”

এ দিন জয়ের পরে পলাশ বল্লভ গোষ্ঠীর ছেলেমেয়েরা এলাকায় বিজয় মিছিল করে। আবির খেলা হয়। সেখানে আবার বিরোধী গোষ্ঠীর তৃণমূল নেতাদের কটূক্তি করা হয়েছে বলেও অভিযোগ।

এ দিন হাবরা শ্রীচৈতন্য কলেজেও ভোট হয়েছে। ১১৫টি আসনের মধ্যে ১৯টি আসনে ভোট হয়। ডিএসও একটি আসনে জয়ী হয়েছে। বাকিগুলি পেয়েছে টিএমসিপি। অন্য আসনগুলিতে আগেই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হয়েছিল তারা। ডিএসও বাদে অন্য কোনও বিরোধী সংগঠন লড়াই করেনি এখানে। ডিএসও-র আবার দাবি, ভোটে সন্ত্রাসের প্রতিবাদে তারা বয়কট করেছিল। যদিও সন্ত্রাসের অভিযোগ উড়িয়ে টিএমসিপি নেতৃত্বের দাবি, বিরোধীদের এখানে কোনও জন সমর্থন না থাকায় মিথ্যা অভিযোগ করছে তারা।

tmcp clash bagda college southbengal
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy