Advertisement
E-Paper

ট্রলার দুর্ঘটনায় উদ্ধার ৪ জনের দেহ

পাথরপ্রতিমায় ট্রলার দুর্ঘটনায় নিখোঁজ সাত মৎস্যজীবীর মধ্যে ৪ জনের দেহ উদ্ধার হল। সোমবার বিকেলে পাথরপ্রতিমার কেঁদোদ্বীপের কাছে সমুদ্র থেকে শান্তনু প্রধান ওরফে বাপ্পাই (২৩), রবিন দাস (৩৩), কালীপদ দাস (২৭) ও বিভাস পড়য়্যার (২৬) দেহ মেলে। সকলেরই বাড়ি পাথরপ্রতিমা দক্ষিণ সীতারামপুর গ্রামে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৭ ডিসেম্বর ২০১৪ ০১:১৪

পাথরপ্রতিমায় ট্রলার দুর্ঘটনায় নিখোঁজ সাত মৎস্যজীবীর মধ্যে ৪ জনের দেহ উদ্ধার হল। সোমবার বিকেলে পাথরপ্রতিমার কেঁদোদ্বীপের কাছে সমুদ্র থেকে শান্তনু প্রধান ওরফে বাপ্পাই (২৩), রবিন দাস (৩৩), কালীপদ দাস (২৭) ও বিভাস পড়য়্যার (২৬) দেহ মেলে। সকলেরই বাড়ি পাথরপ্রতিমা দক্ষিণ সীতারামপুর গ্রামে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ১১ ডিসেম্বর সকালে পাথরপ্রতিমার জি-প্লটের সীতারামপুর ঘাট থেকে ‘এফবি বাপ্পাই’ নামে ট্রলারটি মাঝি-সহ ১০ জন মৎস্যজীবী মাছ ধরতে গিয়েছিলেন। কেঁদোদ্বীপের কাছে সমুদ্রে রাতে জাল পেতে তাঁরা ঘুমাচ্ছিলেন। ১২ তারিখ ভোর সাড়ে ৫টা নাগাদ কালীপদ দাস ঘুম ভেঙে দেখেন, কোনও ভাবে ট্রলারের ভিতরে জল জমেছে। ট্রলার মালিক শান্তনুকে ডাকেন তিনি। হঠাৎই উত্তুরে ঝোড়ো হাওয়ায় ট্রলারটি উল্টে যায়। জলমগ্ন হন ১০ জনই। দীর্ঘ ক্ষণ কোনও মতে ভেসে থাকার পরে তিন জনকে দেখতে পেয়ে উদ্ধার করে অন্য একটি মাছধরা ট্রলার। সেই থেকেই বাকি সাত জন নিখোঁজ ছিলেন।

পুলিশ-প্রশাসনের তরকফে শুরুর দিকে খোঁজ চালানো হলেও তা যথেষ্ট ছিল না বলে অভিযোগ। পরে বিভিন্ন মৎস্যজীবী সংগঠনের পক্ষ থেকেই ট্রলার নিয়ে খোঁজ চলছিল সমুদ্রে। কাকদ্বীপ, পাথরপ্রতিমা, রায়দিঘি থেকে এফবি শক্তিময়ী, এফবি বনশ্রী, এফবি বিজয়লক্ষ্মী, এফবি সুধাময়ী, এফবি সাবিত্রী ও এফবি মা দুর্গা নামে ছ’টি ট্রলার পাঠানো হয়েছিল। দুর্ঘটনার পর দিনেই ডুবে যাওয়া ট্রলারটি উদ্ধার করে অন্য ট্রলার দিয়ে টেনে আনার ব্যবস্থা করেন মৎস্যজীবীরাই। পাথরপ্রতিমায় ইন্দ্রপুর ঘাটের কাছে ওই ছ’টি ট্রলার প্রায় তিন দিন তল্লাশি চালানোর পরে সোমবার বেলা ৩টে নাগাদ দুর্ঘটনার জায়গা থেকে প্রায় ১৩ কিলোমিটার দূরে চারটি দেহ ভাসতে দেখা যায়। তবে এখনও খোঁজ নেই ভগীরথ পাত্র, লালমোহন দাস ও দেবকুমার দাসের। সোমবারই দেহগুলি উদ্ধারের পরে ছোট নৌকায় তুলে ওই নৌকা ট্রলার দিয়ে টেনে আনা হয় পাথরপ্রতিমা ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে। সেখানেই মৃতের পরিবারের লোকজন দেহ শনাক্ত করেন। পরে দেহগুলি ময়না-তদন্তের জন্য পাঠানো হয় ডায়মন্ড হারবার জেলা হাসপাতাল মর্গে।

ওয়েস্ট বেঙ্গল ফিসারম্যান অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক জয়কৃষ্ণ হালদারের অভিযোগ, ট্রলার দুর্ঘটনার পরে তল্লাশির কাজে পুলিশ সে ভাবে উদ্যোগী হয়নি। মৎস্যজীবীদের বিভিন্ন সংগঠনের উদ্যোগেই দেহ উদ্ধার করা গিয়েছে। জেলা পুলিশের এক কর্তা অবশ্য বলেন, “অভিযোগ ঠিক নয়। পুলিশ যতটা পেরেছে সাহায্য করেছে।”

নিখোঁজ মৎস্যজীবীদের দেহ উদ্ধারের ক্ষেত্রে পুলিশ-প্রশাসনের গাফিলতির অভিযোগ করেছেন প্রাক্তন সুন্দরবন উন্নয়ন মন্ত্রী কান্তি গঙ্গোপাধ্যায়ও। তিনি বলেন, “২০১০ সালে পূর্ব মেদিনীপুর থেকে কাকদ্বীপের লট-৮ ঘাটে যাত্রিবাহী ট্রলার আসার সময়ে দুর্ঘটনায় অনেকেরই প্রাণ যায়। সে সময়ে আমরা সরকারে ছিলাম। মৃতদের পরিবারকে ১ লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দিয়েছিলাম। ওরা (বর্তমানে শাসক দল) তখন জেলা পরিষদে ক্ষমতায় ছিল। মৃত পরিবারের হাতে তারা ২ লক্ষ টাকা করে দেয়। এই ঘটনাতেও নিখোঁজ মৎস্যজীবীদের ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করুক সরকার।” সুন্দরবন উন্নয়ন প্রতিমন্ত্রী মন্টুরাম পাখিরা বলেন, “ঘটনাটি সম্পর্কে আমাদের সরকার সংবেদনশীল। নিয়ম মেনেই ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে। বিষয়টি মৎস্য দফতরকে বলা হয়েছে।” ডায়মন্ড হারবার বিভাগের সহ মৎস্য আধিকারিক (সামুদ্রিক) সুরজিৎ বাগ বলেন, “মৃত মৎস্যজীবী পরিবারের হাতে যত দ্রুত সম্ভব ক্ষতিপূরণের টাকা তুলে দেওয়া যায়, সে ব্যবস্থা করা হচ্ছে।”

trawler missing patharpratima
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy