Advertisement
E-Paper

বসিরহাট দক্ষিণকে ‘পাখির চোখ’ করে উপ-নির্বাচনে লড়ছে সব দল

বসিরহাট দক্ষিণ কেন্দ্রের উপনির্বাচনকে ‘পাখির চোখ’ করে নেমে পড়েছে প্রধান চার দল। প্রার্থী ঘোষণা হয়েছে সকলেরই। তৃণমূলের প্রার্থী দীপেন্দু বিশ্বাস মনোনয়ন জমা দিয়েছেন। প্রচারও শুরু হয়েছে। বিজেপির শমীক ভট্টাচার্য লোকসভা ভোটে বসিরহাট কেন্দ্র থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় করে প্রায় ৩০ হাজার ভোটে এগিয়ে ছিলেন বসিরহাট দক্ষিণ বিধানসভা কেন্দ্রে। তাঁকেই এ বার উপনির্বাচনে টিকিট দিয়েছে দল।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৬ অগস্ট ২০১৪ ০১:৫৪
বাঁ দিক থেকে, অসিত মজুমদার, শমীক ভট্টাচার্য ও মৃণাল চক্রবর্তী।

বাঁ দিক থেকে, অসিত মজুমদার, শমীক ভট্টাচার্য ও মৃণাল চক্রবর্তী।

বসিরহাট দক্ষিণ কেন্দ্রের উপনির্বাচনকে ‘পাখির চোখ’ করে নেমে পড়েছে প্রধান চার দল। প্রার্থী ঘোষণা হয়েছে সকলেরই। তৃণমূলের প্রার্থী দীপেন্দু বিশ্বাস মনোনয়ন জমা দিয়েছেন। প্রচারও শুরু হয়েছে। বিজেপির শমীক ভট্টাচার্য লোকসভা ভোটে বসিরহাট কেন্দ্র থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় করে প্রায় ৩০ হাজার ভোটে এগিয়ে ছিলেন বসিরহাট দক্ষিণ বিধানসভা কেন্দ্রে। তাঁকেই এ বার উপনির্বাচনে টিকিট দিয়েছে দল। এই আসনে সিপিএম প্রার্থী মৃণাল চক্রবর্তী। কংগ্রেসের বর্ষীয়ান নেতা অসিত মজুমদারের উপরে এই কেন্দ্রে ভরসা রাখছে দল।

১৯৮৩ সালে রাজনীতিতে আসা শমীকবাবু এই নিয়ে তৃতীয় বার ভোট লড়াইয়ে নামছেন। চলতি বছরে বসিরহাট লোকসভা কেন্দ্রে তৃণমূল প্রার্থী ইদ্রিশ আলির কাছে পরাজিত হন তিনি। ২০০৬ সালে বিজেপির হয়ে (তখন বিজেপি-তৃণমূল জোট) কলকাতার শ্যামপুকুরে প্রার্থী হয়ে পরাজিত হন। গত কয়েক বছরে চ্যানেলের বিভিন্ন আলোচনায় পরিচিত মুখ হয়ে ওঠা শমীকবাবুকে সামনে রেখে বসিরহাট কেন্দ্রে মরিয়া লড়াইয়ে নেমেছে বিজেপি। ধারে-ভারে এ বার এই উপনির্বাচন বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ তাদের কাছে। লোকসভা ভোটে রাজ্যে ১৭ শতাংশ ভোট পেয়ে (গত বারের থেকে প্রায় ৬ শতাংশ বেশি) এবং একটি আসন বাড়িয়ে (দার্জিলিং গত লোকসভা ভোটে পেয়েছিল বিজেপি। এ বার অতিরিক্ত আসন পেয়েছে আসানসোল) প্রবল আত্মবিশ্বাসী তারা। উপনির্বাচনে এই আসন ছিনিয়ে নিতে পারলে আগামী বিধানসভা ভোটেও যে তৃণমূল শিবিরকে বড়সড় ধাক্কা দেওয়া যাবে, সে কথা বিলক্ষণ জানেন বিজেপি শীর্ষ নেতৃত্ব। শমীকবাবু সোমবার বলেন, “বসিরহাট দক্ষিণ কেন্দ্রটিকে আমরা পাখির চোখ করে এগোতে চাইছি।”

গত আট বার বিধানসভা ভোটে সিপিএমের নারায়ণ মুখোপাধ্যায় এই কেন্দ্র নিজের দখলে রেখেছিলে। তাঁর মৃত্যুতেই উপনির্বাচন হচ্ছে। রাজ্য জুড়ে পরিবর্তনে হাওয়ায় এই এলাকায় ক্রমে কমজোরি হয় বামেরা। উপনির্বাচনকে সামনে রেখে তারাও ঘুরে দাঁড়াতে চায়। দলের জেলা সম্পাদকমণ্ডলির সদস্য তথা হাসনাবাদের বাসিন্দা মৃণাল চক্রবর্তীকে প্রার্থী করে প্রচার শুরু করেছে তারা। ১৯৮৮ থেকে ১৯৯৩ সাল পর্যন্ত হিঙ্গলগঞ্জ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি ছিলেন মৃণালবাবু। ১৯৯৩-৯৮ সালে জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষের দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি। বিজেপিকেই তাঁরা প্রধান প্রতিপক্ষ মনে করছেন বলে ইতিমধ্যেই জানিয়েছেন জেলা সম্পাদক গৌতম দেব। ক’দিন আগেই রবীন্দ্রভবনে এক সভায় তিনি বলেন, “প্রয়োজনে যুদ্ধ ঘোষণা করতে হবে। কিন্তু বসিরহাট দক্ষিণ কেন্দ্রে কিছুতেই বিজেপিকে জিততে দেওয়া চলবে না।” মৃণালবাবু বলেন, “৩৭ বছরে নারায়ণবাবু এই কেন্দ্রটি ধরে রেখেছিলেন। লোকসভা ভোটের নিরিখে বিজেপিকে প্রধান প্রতিপক্ষ হিসাবে ধরে নারায়ণবাবুর কাজ শেষ করা আমার প্রথম লক্ষ্য।”

একসময়ে বসিরহাটে প্রবল প্রতাপ ছিল কংগ্রেসের। কিন্তু এখন সসে দিন গিয়েছে। গত লোকসভা ভোটে চতুর্থ স্থানে দৌড় শেষ করেছিলেন দলের প্রার্থী। এ বার বর্ষীয়ান নেতা অসিত মজুমদারকে সামনে রেখে কড়া টক্কর দিতে মরিয়া তারাও। ১৯৬২ সালে কমল বসুর হাত ধরে কংগ্রেসে আসা অসিতবাবু জেলার রাজনীতিতে তো বটেই, প্রদেশ কংগ্রেসের সহ সভাপতি হয়েছেন। বর্তমানে এআইসিসি সদস্য জেলা কংগ্রেসের (গ্রামীণ) সভাপতিও বটে। বসিরহাটের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর হন তিনি। নারায়ণবাবুর কাছে বসিরহাট দক্ষিণ কেন্দ্রের ভোটে ১৯৯৬ সালে তিনি পরাজিত হন ১৮১ ভোটে। ২০০৬ সালেও ১১৭৫ ভোটে পিছিয়ে থেকে নারায়ণবাবুর কাছে পরাস্ত হন তিনি। দলের টিকিট না পেয়ে ২০১১ সালে বিধানসভা ভোটে ‘নির্দল’ প্রার্থী হিসাবে ৫২ হাজারেরও বেশি ভোট পেয়েছিলেন তিনি। কিন্তু জয় অধরাই থেকে গিয়েছে। তার কথায়, “বহিরাগত কিংবা খেলাধূলার সঙ্গে যুক্ত মানুষকে বসিরহাটবাসী আর যাই হোক এখানকার উন্নয়নের শরিক করবেন না। কংগ্রেসই যে উন্নয়নের একমাত্র শরিক, তা সকলেরই জানা।” আজ, মঙ্গলবার মনোনয়নপত্র জমা দেবেন তিন জন। সব মিলিয়ে পুজোর আগে জমজমাট বসিরহাট।

southbengal basirhat by election by election samik bhattacharya bjp cpm tmc
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy