Advertisement
২৩ মে ২০২৪

হকার ফেরালেন টাকা-গয়না

এক জন প্ল্যাটফর্মে লেবু-জল বিক্রি করেন। অন্য জন ট্রেনে ফিরি করেন আয়ুর্বেদিক তেল। এই দুই হকারের সততায় বৃহস্পতিবার লক্ষাধিক টাকার গয়না ফেরত পেলেন এক বৃদ্ধ। সকাল সাড়ে ছ’টার ক্যানিং লোকাল সোনারপুর স্টেশন ছেড়ে বেরিয়ে যাওয়ার পরে প্ল্যাটফর্মের বেঞ্চে একটি ছোট থলিব্যাগ পড়ে থাকতে দেখেন হকার চাঁদ সর্দার।

চাঁদ সর্দার এবং টুলু ভট্টাচার্য।  —নিজস্ব চিত্র।

চাঁদ সর্দার এবং টুলু ভট্টাচার্য। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১১ জুলাই ২০১৪ ০০:৫৪
Share: Save:

এক জন প্ল্যাটফর্মে লেবু-জল বিক্রি করেন। অন্য জন ট্রেনে ফিরি করেন আয়ুর্বেদিক তেল। এই দুই হকারের সততায় বৃহস্পতিবার লক্ষাধিক টাকার গয়না ফেরত পেলেন এক বৃদ্ধ।

সকাল সাড়ে ছ’টার ক্যানিং লোকাল সোনারপুর স্টেশন ছেড়ে বেরিয়ে যাওয়ার পরে প্ল্যাটফর্মের বেঞ্চে একটি ছোট থলিব্যাগ পড়ে থাকতে দেখেন হকার চাঁদ সর্দার। ব্যাগ খুলে দেখেন তাতে রয়েছে সোনা-রুপোর গয়না ও টাকা। অন্য এক হকার টুলু ভট্টাচার্যের কাছে গিয়ে বিষয়টি জানান চাঁদ। এর পরেই স্টেশনের জিআরপি অফিসারের হাতে ব্যাগটি তুলে দেন তাঁরা।

ঘণ্টা তিনেক পরে ডাকা হয় ওই দু’জনকে। ততক্ষণে সেখানে উপস্থিত হয়েছেন ওই ব্যাগের মালিক গোসাবার আমতলির বাসিন্দা ত্রৈলোক্যনাথ দাস। ত্রৈলোক্যবাবু পুলিশকে জানান, তিনি আমতলির এক মন্দিরের ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য। তাই মন্দিরের বিগ্রহের গয়না ও প্রণামীর টাকা তাঁর কাছেই থাকে। সোনারপুরে ছেলের বাড়ি আসার সময়ে চুরির ভয়ে টাকা-গয়না তিনি সঙ্গেই এনেছিলেন। এ দিন ছেলে ও পুত্রবধূকে নিয়ে গোসাবায় ফেরার সময়ে স্টেশনের বেঞ্চে বসেছিলেন তাঁরা। সঙ্গে অনেক ব্যাগ ছিল। ত্রৈলোক্যবাবু পুলিশকে জানান, ট্রেন আসার পরে তাড়াহুড়োতে ওই ব্যাগটি ফেলেই ট্রেনে উঠে যান তাঁরা। ত্রৈলোক্যবাবু বলেন, “ক্যানিংয়ে নেমে বুঝতে পারি, ব্যাগ ফেলে এসেছি। এর কিছু পরেই মোবাইলে জিআরপির তরফ থেকে ফোন আসে। বলা হয় ব্যাগটি দু’জন থানায় জমা দিয়েছেন।”

পুলিশ জানায়, ব্যাগে একটি নোটবুকে ত্রৈলোক্যবাবুর নাম, প্যানকার্ড ও ফোন নম্বর মেলে। পুলিশ জানায়, বছর চল্লিশের টুলুবাবু স্টেশনে লেবু-জল বিক্রি করেন। চার সন্তান, মা ও ভাইকে নিয়ে তাঁর পরিবার। বছর ছাব্বিশের চাঁদ ট্রেনে আয়ুর্বেদিক তেল ফেরি করেন। মা ও দুই দিদিকে নিয়ে ভাড়া বাড়ির একটি ঘরেই তাঁর বসবাস।

টাকা-গয়না ফেরত দিতে পেরে খুশি তাঁরা দু’জনেই। টুলুবাবু বলেন, “ভেবেছিলাম কারও মেয়ের বিয়ের গয়না। ব্যাগ হারালে মেয়েটির বিয়েই হবে না। আমাদের বিশ্বাস ছিল, ব্যাগের মালিক ঠিক আসবেন।” চাঁদও বললেন, “শুনছি, দুর্গামন্দিরের গয়না-টাকা। ফেরত দিতে পেরে খুব আনন্দ হচ্ছে।” রেল পুলিশ সূত্রের খবর, টুলুবাবু ও চাঁদকে পুরস্কার দেওয়ার জন্য উপরমহলে সুপারিশ করা হচ্ছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

moneyreturned hawker southbengal
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE