Advertisement
E-Paper

অভিজিতের পরেই রাজ্যপালের কাছে পার্থ, তবু জট সমাবর্তনে

আচার্য-রাজ্যপালের কাছে বুধবার দরবার করেছিলেন খোদ উপাচার্য। তার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে, বৃহস্পতিবার শিক্ষামন্ত্রী দেখা করলেন আচার্যের সঙ্গে। তবু যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন অনুষ্ঠানের স্থান নির্বাচন নিয়ে জট কাটল না। অথচ হাতে আর তিন সপ্তাহও সময় নেই। রীতি মেনে আগামী ২৪ ডিসেম্বর সমাবর্তন হওয়ার কথা।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৫ ডিসেম্বর ২০১৪ ০৩:৩৬
রাজভবন থেকে বেরিয়ে আসছেন শিক্ষামন্ত্রী।—নিজস্ব চিত্র।

রাজভবন থেকে বেরিয়ে আসছেন শিক্ষামন্ত্রী।—নিজস্ব চিত্র।

আচার্য-রাজ্যপালের কাছে বুধবার দরবার করেছিলেন খোদ উপাচার্য।

তার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে, বৃহস্পতিবার শিক্ষামন্ত্রী দেখা করলেন আচার্যের সঙ্গে। তবু যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন অনুষ্ঠানের স্থান নির্বাচন নিয়ে জট কাটল না।

অথচ হাতে আর তিন সপ্তাহও সময় নেই। রীতি মেনে আগামী ২৪ ডিসেম্বর সমাবর্তন হওয়ার কথা।

সমাবর্তনের ব্যাপারে উপাচার্যের কাছে বিশ্ববিদ্যালয়ের এগ্জিকিউটিভ কাউন্সিল বা ইসি-র মতামত জানতে চেয়েছিলেন রাজ্যপাল। শিক্ষামন্ত্রীও মনে করেন, এ ব্যাপারে ইসি-র সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত। ইসি-র বেশির ভাগ সদস্যের মত, বরাবরের মতো ওই অনুষ্ঠান হোক বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরেই। কিন্তু নিরাপত্তার অভাব বোধ করায় উপাচার্য নিজে চান, এ বার ক্যাম্পাসের বাইরে সমাবর্তন হোক। শেষ পর্যন্ত তাঁরা কোথায় সমাবর্তনের আয়োজন করতে চান, তা স্থির করে বৃহস্পতিবারেও আচার্য-রাজ্যপালের কাছে রিপোর্ট পাঠাননি উপাচার্য অভিজিৎ চক্রবর্তী। এর জেরে সমাবর্তনের স্থান-জট থেকেই গেল।

বুধবার দুপুরে অভিজিৎবাবু গিয়েছিলেন রাজভবনে, আচার্য-রাজ্যপাল কেশরীনাথ ত্রিপাঠীর সঙ্গে দেখা করতে। সে-দিনই তাঁর কাছে সমাবর্তন নিয়ে ইসি-র মত জানতে চান আচার্য। বৃহস্পতিবার বিকেলে রাজভবনে যান শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। সেখানে রাজ্যপালের সঙ্গে ঘণ্টাখানেকের বৈঠক শেষে বেরোনোর সময় শিক্ষামন্ত্রী বলেন, “এটা রুটিন-সাক্ষাৎ ছিল। বলার মতো কিছু নয়।” যাদবপুরের সমাবর্তন নিয়ে রাজ্যপালের সঙ্গে তাঁর কোনও আলোচনা হয়েছে কি না, সেই প্রশ্নের সরাসরি উত্তর দিতে চাননি শিক্ষামন্ত্রী। তিনি শুধু জানান, সমাবর্তন কোথায় হবে, তা বিশ্ববিদ্যালয়ই ঠিক করুক।

তবে উচ্চশিক্ষা দফতর সূত্রের খবর, সমাবর্তন নিয়ে এ দিন রাজ্যপালের সঙ্গে শিক্ষামন্ত্রীর কথা হয়েছে। ত্রিপাঠী শিক্ষামন্ত্রীকে জানান, সমাবর্তনের ব্যাপারে তিনি উপাচার্যের কাছে বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসি-র মতামত জানতে চেয়েছেন। এই বিষয়ে রিপোর্ট পেলে প্রয়োজনে শিক্ষামন্ত্রীকে ডেকে ফের কথা বলবেন রাজ্যপাল।

বুধবার রাজভবন থেকে বেরিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিরেই ইসি-র বৈঠকে যোগ দেন উপাচার্য। রাজ্যপালের সঙ্গে তাঁর আলোচনার কথা সেখানে জানান। সমাবর্তন কোথায় হবে, তা নিয়ে ইসি-র সদস্যদের কাছে মতামত চাওয়া হয়। অধিকাংশ সদস্যই ক্যাম্পাসের ভিতরে ওই অনুষ্ঠান করার পক্ষে মত দেন। এর সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের ঐতিহ্য, ভাবাবেগ জড়িত এই যুক্তিতে সমাবর্তনের মতো অনুষ্ঠানকে ক্যাম্পাসের বাইরে নিয়ে যাওয়ার পক্ষপাতী নন অনেকেই। যদিও ইসি-র সেই বৈঠকে কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি। সমাবর্তন কোথায় করা হবে, উপাচার্যই সেই ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়ে আচার্যকে জানাবেন বলে স্থির হয়।

কিন্তু প্রশ্ন উঠছে, ইসি-র মতো বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ সিদ্ধান্ত গ্রহণকারী সংস্থায় আলোচনার পরেও ফের উপাচার্য নিজে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন কেন? শিক্ষামন্ত্রীও এ দিন আচার্য-রাজ্যপালের সঙ্গে বৈঠকের পরে টেলিফোনে বলেন, “সমাবর্তন কোথায় হবে, সেই সিদ্ধান্ত নেবে বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসি। এখানে সরকারের কোনও ভূমিকাই নেই।”

যদিও সমাবর্তনের স্থান বাছাই নিয়ে বক্তব্য জানতে চেয়ে উচ্চশিক্ষা দফতরেও চিঠি পাঠিয়েছিলেন অভিজিৎবাবু। সরকার যে এই বিষয়ে কোনও মতামত দেবে না, তা স্পষ্ট করে দিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী। তবে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি সূত্রের দাবি, শিক্ষামন্ত্রী ও আচার্যের সঙ্গে কথা বলেই সমাবর্তনের স্থান চূড়ান্ত করবেন উপাচার্য। কিন্তু এই দাবির কোনও ভিত্তি নেই বলে জানাচ্ছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার প্রদীপ ঘোষ। এ দিন তিনি বলেন, “উপাচার্য নিজেই সিদ্ধান্ত নিয়ে রাজ্যপালকে জানাবেন। তবে উনি কবে সেটা করবেন, আমি জানি না।” টেলিফোনে বারবার চেষ্টা করেও অভিজিৎবাবুর সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি। এসএমএস করেও জবাব মেলেনি।

কলকাতা, রবীন্দ্রভারতীর মতো যে-সব বিশ্ববিদ্যালয়ের বড় ক্যাম্পাস আছে, তারা বরাবর বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিতরেই সমাবর্তনের অনুষ্ঠান করে। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসেও ক্যাম্পাসের বাইরে সমাবর্তন করার নজির নেই। এবং বিধিবদ্ধ ভাবে ২৪ ডিসেম্বর, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠা দিবসেই ওই অনুষ্ঠান হয় বলে জানান প্রাক্তন এক কর্তা। কিন্তু ১৬ সেপ্টেম্বর ক্যাম্পাসে পুলিশি তাণ্ডবের থেকে অভিজিৎবাবুর প্রতি পড়ুয়াদের ক্ষোভ এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, ক্যাম্পাসে সমাবর্তন আয়োজনে নিরাপত্তার অভাব বোধ করছেন খোদ উপাচার্যই!

abhijit chakraborty partha chattopadhyay governor jadavpur university JU issue Abhijit talk to governor student college state news online news
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy