দ্বিতীয় বার ক্ষমতায় আসার পর থেকেই সিন্ডিকেট চক্র, তোলাবাজি বন্ধ করতে দলীয় নেতা-কর্মীদের পই পই করে সতর্ক করছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বোঝানোর চেষ্টা করছেন, রাজনীতি যেন তেন অর্থ উপার্জনের মাধ্যম নয়। তাঁর সে কথার অনুরণন এ বার শোনা গেল ভাইপো অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্যেও। তৃণমূলের মুখপত্র ‘জাগো বাংলা’-র শারদ সংখ্যায় একটি প্রবন্ধ লিখেছেন অভিষেক। যে লেখায় স্বামী বিবেকাননন্দ ও রামকৃষ্ণ পরমহংসের সমাজ সেবার দৃষ্টান্ত তুলে ধরে যুব সভাপতির স্পষ্ট বার্তা, পেশাদারি মোহ থাকলে রাজনীতি করা চলবে না। কারণ রাজনীতি কোনও পেশা নয়!
নজরুল মঞ্চে এ দিন আনুষ্ঠানিক ভাবে ‘জাগো বাংলার’ শারদ সংখ্যা প্রকাশ করেন তৃণমূল নেত্রী। ওই সংখ্যায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের লেখা একটি প্রবন্ধও রয়েছে। তবে রাজনৈতিক ভাবে নজর কেড়েছে অভিষেকের লেখা ‘সংগ্রামই জীবন’ প্রবন্ধটি। যেখানে অভিষেক লিখেছেন, ‘‘স্বামী বিবেকানন্দর মতে, ত্যাগ ও বৈরাগ্যই ভারতের সনাতন আদর্শ।’’ আবার এও লিখেছেন, ‘‘মহাত্মা গাঁধী যেমন রাজনীতিকে বলেছেন ‘ধর্ম’, নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুও তেমনই রাজনীতির সংজ্ঞা দিয়েছেন,- ‘সন্মিলিত সাধনা’।’’ এর পরই রাজনীতি সম্পর্কে তাঁর ব্যক্তিগত ভাবনার কথা বলতে গিয়ে তৃণমূলের যুব সভাপতি লিখেছেন, ‘‘রাজনীতিকদের মন যখন আদর্শানুরাগের অনুভূতিতে পূর্ণ হয়ে ওঠে তখন মান যশ প্রতিষ্ঠার কোনও আকাঙ্খা তাকে প্রলুব্ধ করতে পারে না।’’
স্বাভাবিক ভাবেই তৃণমূল নেতারা অভিষেকের প্রবন্ধের প্রশংসায় পঞ্চমুখ। কিন্তু খোঁচা দিতে ছাড়ছেন না বিরোধীরা। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীর কথায়, ‘‘লুঠ ও লেকচার একই সঙ্গে চলছে! তৃণমূল তো এখন তোলাবাজ, লুটেরাদেরই দল, রাজনৈতিক দল নাকি!’’ আবার বাম পরিষদীয় দলনেতা সুজন চক্রবর্তী বলেন, ‘‘রামকৃষ্ণ বলেছিলেন, টাকা মাটি মাটি টাকা। তৃণমূল সেটাই আক্ষরিক ভাবে নিয়েছে। বাকি সব কথার কথা।’’ তবে অভিষেকের ঢাল হয়ে উঠতে চেয়েছেন সদ্য তৃণমূলে যোগ দেওয়া বর্ষীয়ান নেতা মানস
ভুঁইয়া। তাঁর মতে, ‘‘বিরাট দলে ফাঁকফোঁকর কিছু তো থাকবেই। তৃণমূল নেতৃত্ব সেই সব ফাঁকফোঁকর পূরণের চেষ্টা করছেন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy