Advertisement
০৬ মে ২০২৪

সঙ্কট কাটাতে কর্মসূচিতে জোর অধীরের

ভাঙনে বিপর্যস্ত দল। ঘুরে দাঁড়াতে রাজনৈতিক কর্মসূচির মাধ্যমে কর্মীদের মনোবল চাঙ্গা করার পথেই হাঁটছেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী। সঙ্গে বার্তা— কিছু নেতার দলবদলে কংগ্রেসের বড় কোনও ক্ষতি হয়নি।

কংগ্রেসের কর্মিসভায় অধীর চৌধুরী। মেদিনীপুরে। — নিজস্ব চিত্র

কংগ্রেসের কর্মিসভায় অধীর চৌধুরী। মেদিনীপুরে। — নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০৩:১৮
Share: Save:

ভাঙনে বিপর্যস্ত দল। ঘুরে দাঁড়াতে রাজনৈতিক কর্মসূচির মাধ্যমে কর্মীদের মনোবল চাঙ্গা করার পথেই হাঁটছেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী। সঙ্গে বার্তা— কিছু নেতার দলবদলে কংগ্রেসের বড় কোনও ক্ষতি হয়নি।

শনিবার মেদিনীপুরে দলের কর্মিসভায় প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি বলেন, ‘‘মানস ভুঁইয়ার দল ছেড়ে যাওয়ার অর্থ একজন কংগ্রেস কর্মীর চলে যাওয়া। তার বেশি কিছু নয়। এ ভাবে ভাবলেই আর কোনও সমস্যা নেই।’’ মানসবাবুর পাল্টা দাবি, ‘‘এ রাজ্যে অধীর চৌধুরীই কংগ্রেস দলটাকে তুলে দিচ্ছেন।’’

সবংয়ের বিধায়ক মানস ভুঁইয়া, পশ্চিম মেদিনীপুরের প্রাক্তন জেলা কংগ্রেস সভাপতি বিকাশ ভুঁইয়া-সহ এক ঝাঁক নেতা তৃণমূলে যাওয়ার পরে এ দিনই প্রথম জেলায় এলেন অধীরবাবু। শুধু সবং নয়, এই জেলায় বরাবর কংগ্রেসের আর এক গড় খড়্গপুরেও ক্ষয়-রোগে আক্রান্ত দল। প্রাক্তন পুরপ্রধান রবিশঙ্কর পাণ্ডে-সহ বেশ কিছু কংগ্রেস কাউন্সিলর তৃণমূলে ভিড়েছেন। এই অবস্থায় জেলার কর্মীদের হতাশা বুঝেই অধীরবাবু বলেন, ‘‘অনেক হতাশা, অনেক ভাবনা। কী হবে কী হবে, নানা আলোচনা। মনে রাখবেন, কংগ্রেসের জন্ম হয়েছিল সঙ্কটের সময়ে, সোনার চামচ মুখে নয়।’’

সঙ্কট থেকে বেরিয়ে আসতে তাই রাজনৈতিক কর্মসূচিতেই জোর দিয়েছেন প্রদেশ সভাপতি। কর্মীদের প্রতি তাঁর বার্তা, “একটি রাজনৈতিক দল শক্তিশালী হয় রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড দিয়ে। হঠাৎ কিছু নির্বাচিত প্রতিনিধিকে দলে ভরে নিলাম, আর শক্তিশালী হয়ে গেলাম, ব্যাপারটা এতটাও সহজ-সরল নয়।” কংগ্রেস যে আদৌ গুরুত্ব হারায়নি, তা বোঝাতে দীর্ঘ ৪৫ মিনিটের বক্তব্যে অধীরবাবুর ব্যাখ্যা, এ রাজ্যে কংগ্রেস দুর্বল নয় বলেই তৃণমূলের দিক থেকে এত আক্রমণ ধেয়ে আসছে।

এ দিন কথা প্রসঙ্গে দলে ভাঙন আটকাতে না পারার ব্যাখ্যাও দিয়েছেন প্রদেশ সভাপতি। তাঁর অভিযোগ, জনপ্রতিনিধিদের লক্ষ-লক্ষ টাকা দিয়ে কার্যত কিনে নিচ্ছে তৃণমূল। পাশাপাশি অধীরবাবু এও বলেন যে, অনেক ক্ষেত্রেই দল পাশে থাকার আশ্বাস দেওয়া সত্ত্বেও জপ্রতিনিধিরা স্নায়ুর চাপ সইতে পারছেন না। হুমকি, হেনস্থার মুখে দলবদলে বাধ্য হচ্ছেন। অধীরবাবুর কথায়, ‘‘মুর্শিদাবাদে তো আমি এমনও বলেছিলাম যে, প্রতিটি বাড়িতে গিয়ে পাহারা দেব। কিন্তু লাভ হয়নি।’’ দলত্যাগীদের ফের ভোটে জিতে আসার চ্যালেঞ্জও ছোড়েন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি।

যাঁর সৌজন্যে মুর্শিদাবাদ এখন কংগ্রেসের হাতছাড়া, সেই শুভেন্দু অধিকারীকেও বিঁধেছেন অধীরবাবু। তাঁর কটাক্ষ, “আপনাদের এখানকার (মেদিনীপুরের) যুবরাজ ভেবেছিলেন নন্দীগ্রামে লড়াই করেছি, হয়তো আমাকে দিদি চান্স দেবে। কিন্তু দিদি বলছেন, পিসির দায়িত্ব ভাইপোকে বড় করার। তাই এখানকার যুবরাজ খাবি খাচ্ছেন।” কংগ্রেস সূত্রের খবর, আগামী সপ্তাহে শুভেন্দুর খাসতালুক পূর্ব মেদিনীপুরে যাবেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি। শুভেন্দু অবশ্য এ সব কটাক্ষ উড়িয়ে বলেন, ‘‘অধীরবাবু হতাশা থেকে প্রলাপ বকছেন।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Adhir Chowdhury Political campaigns
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE