Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
Bayron Biswas

দলবদলের ‘উপহার’? তৃণমূলে যোগ দিয়েই পুলিশি নিরাপত্তা পেয়ে গেলেন বাইরন বিশ্বাস

মঙ্গলবার সকাল থেকেই বাইরনের শমসেরগঞ্জের বাড়িতে পুলিশি নিরাপত্তার বহর চোখে পড়েছে। বিধায়কের বাড়ির নিরাপত্তায় রয়েছেন দু’জন অ্যাসিস্ট্যান্ট সাব ইন‌স্পেক্টর, আট সশস্ত্র কনস্টেবল।

Image of Byron Biswas.

বিধায়কের বাড়ির নিরাপত্তার জন্য বরাদ্দ হয়েছেন ৮ জন সশস্ত্র কনস্টেবল। —ফাইল চিত্র।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ৩০ মে ২০২৩ ১৩:৪৫
Share: Save:

কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে যোগদানের ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই রাজ্য পুলিশের নিরাপত্তা পেলেন বিধায়ক বাইরন বিশ্বাস। সোমবার ঘাটালে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত ধরে দলবদল করেন তিনি। আর শুক্রবার সকালেই তাঁর জন্য পুলিশি নিরাপত্তার বন্দোবস্ত করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন বাইরন নিজেই।

মঙ্গলবার সকাল থেকেই বাইরনের শমসেরগঞ্জের বাড়িতে পুলিশি নিরাপত্তার বহর চোখে পড়েছে। বিধায়কের বাড়ির নিরাপত্তার জন্য বরাদ্দ করা হয়েছে দু’জন অ্যাসিস্ট্যান্ট সাব ইন‌স্পেক্টর, আট জন সশস্ত্র কনস্টেবল। আর বাইরনের দেহরক্ষী হিসেবে দেওয়া হয়েছে এক জন সাব ইন‌স্পেক্টর, এক জন অ্যাসিস্ট্যান্ট সাব ইন‌স্পেক্টর এবং তিন জন কনস্টেবল।

সোমবার ঘাটালে দলবদলের পরেই রাজ্য পুলিশের এক শীর্ষকর্তার সঙ্গে ফোনে নিজের নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিষয়ে কথা বলেন বাইরন। ওই পুলিশ কর্তার কাছে তিনি জানান, মুর্শিবাদাবাদের মাটিতে ফিরলেই তাঁর ওপর হামলা হতে পারে। তাই পুলিশি নিরাপত্তা দেওয়া হোক তাঁকে এবং তাঁর পরিবারকে। আর মঙ্গলবার সকাল থেকেই বাইরনের বাড়িতে এবং ব্যক্তিগত দেহরক্ষী মোতায়েন করা হয়।

২ মার্চ কংগ্রেসের হয়ে জয়ী হওয়ার পর থেকে ধারাবাহিক ভাবে নিজের নিরাপত্তা চেয়ে রাজ্য পুলিশের কাছে দরবার করেছিলেন সাগরদিঘির সদ্য দলত্যাগী বিধায়ক। এক সময় বাধ্য হয়েই নিজের নিরাপত্তার জন্য কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন তিনি। চলতি মাসেই কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা তাঁকে নিরাপত্তা দিতে রাজ্য পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছিলেন। তার পরেও তাঁর নিরাপত্তা নিয়ে রাজ্য পুলিশ গড়িমসি করছে বলেও অভিযোগ করেছিলেন বাইরন। কিন্তু সোমবার দলবদলের পর মঙ্গলবারই তাঁর দাবি মতো বাসভবন এবং নিজস্ব দেহরক্ষীর বন্দোবস্ত করে দিয়েছে রাজ্য পুলিশ।

বাইরনের তৃণমূলে যোগদান নিয়ে মঙ্গলবার টুইট করে এআইসিসি নেতা জয়রাম রমেশ আক্রমণ শানিয়েছেন বাংলার শাসকদলকে। বিজেপির হাত শক্ত করছে তৃণমূল, এমন অভিযোগ এনে জয়রাম বলেছেন, ‘‘ঐতিহাসিক জয়ের ফলে কংগ্রেস বিধায়ক হিসেবে নির্বাচিত হওয়ার তিন মাস পর বাইরন বিশ্বাসকে কাছে টানতে তৃণমূল প্রলুব্ধ করেছে। এটা সাগরদিঘি বিধানসভা এলাকার জনগণের সঙ্গে সম্পূর্ণ বিশ্বাসঘাতকতা করা হয়েছে। গোয়া, মেঘালয়, ত্রিপুরা এবং অন্যান্য রাজ্যে এই ধরনের দলবদল বিরোধী ঐক্যকে শক্তিশালী করার জন্য করা হয়নি এবং শুধু মাত্র বিজেপির উদ্দেশ্যপূরণের জন্য করা হয়েছে।’’

কংগ্রেস মনে করছে, শুধু পুলিশি নিরাপত্তা দেওয়াই নয়, এ বার বাইরনের বিরুদ্ধে পুলিশে দায়ের হওয়া অভিযোগও তুলে নেওয়া হবে। সাগরদিঘি উপনির্বাচনে বাইরনের জয়ের পর শমসেরগঞ্জের তৃণমূল নেতৃত্বের সঙ্গে তাঁর বিবাদ তৈরি হয়েছিল। সেই সময় শমশেরগঞ্জের এক তৃণমূল নেতার সঙ্গে বাইরনের উত্তপ্ত বাক্য বিনিময়ের অডিয়ো ক্লিপ ভাইরাল হয়েছিল। যেখানে বাইরনকে গালিগালাজ ও হুমকি দিতেও শোনা গিয়েছিল। সেই অডিয়োর সত্যতা অবশ্য যাচাই করেনি আনন্দবাজার অনলাইন। কিন্তু সেই অডিয়োর ভিত্তিতেই শমসেরগঞ্জ থানায় স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব একটি অভিযোগ দায়ের করেছিলেন। কিন্তু বাইরনের তৃণমূলে যোগদানের পর সেই অভিযোগ তুলে নেওয়া হবে বলেই মনে করছে মুর্শিদাবাদ জেলা কংগ্রেস নেতৃত্ব।

এ প্রসঙ্গে কংগ্রেস নেতারা মানস ভুঁইয়ার উদাহরণ তুলে আনছেন। প্রদেশ কংগ্রেস মুখপাত্র সৌম্য আইচ রায় বলেন, ‘‘মানসদার ক্ষেত্রে যা হয়েছিল, বাইরনের ক্ষেত্রেও তা-ই হবে নিশ্চয়। বাইরনের বিরুদ্ধেও অভিযোগ তুলে নেওয়া হবে।” ২০১৬ সালে সবংয়ে তৃণমূল ছাত্র পরিষদ নেতা জয়দেব জানার খুনে অভিযুক্ত হন মানস। তখন তিনি কংগ্রেসে। কিন্তু ওই বছর তিনি তৃণমূলে যোগদান করার ফলেই সেই মামলা থেকে তাঁর নাম বাদ দেওয়া হয় বলে অভিযোগ উঠেছিল।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Bayron Biswas Security West Bengal
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE